বোন-সহ দ্বাদশ শ্রেণির তিন ছাত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদ করায় প্রহৃত হলেন এক যুবক। শনিবার দুপুরে উলুবেড়িয়ার কালীনগরের ঘটনা। ওই যুবককে গুরুতর জখম অবস্থায় উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই ছাত্রীরা এক কিশোর-সহ চার জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কটূক্তির অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ওই কিশোরকে আটক করেছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন ছাত্রীর মধ্যে দু’জনের বাড়ি আমসায়, এক জনের বহিরা গ্রামে। দু’টি গ্রামই কালীনগর সংলগ্ন। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কালীনগরের একটি হাইস্কুলের সামনে। অভিযোগ, তিন ছাত্রী যখন হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন ওই কিশোর-সহ চার জন তাঁদের পিছু নেয়। কটূক্তি করতে থাকে। ছাত্রীরা প্রতিবাদ করলে কটূক্তির মাত্রা বাড়ে। এক ছাত্রী তাঁর দাদাকে মোবাইলে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। তাঁর দাদা, পেশায় জরির কারিগর বছর বাইশের ওই যুবক তখন উলুবেড়িয়া শহরে গিয়েছিলেন ব্যবসায়িক কাজে। বোনের ফোন পেয়ে বন্ধুকে নিয়ে সাইকেলে চড়ে তিনি দ্রুত চলে আসেন কালীনগরে। ঘটনার প্রতিবাদ জানালে রাস্তার ধার থেকে বাঁশ জোগাড় করে ওই চার জন তাঁকে বেড়ধক পেটাতে থাকে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি কাতরাতে থাকেন। এক এক করে স্থানীয় বাসিন্দারা হাজির হয়ে যান। তাঁদের কয়েক জন এক অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন। বাকি তিন জন চম্পট দেয়। কিছু বাসিন্দা আহত যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনাস্থলে এসে পড়েন তিন ছাত্রীর বাড়ির লোকজন। সকলে মিলে উলুবেড়িয়া থানায় যান। তত ক্ষণে অবশ্য গ্রামবাসীদের হাতে আটক অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান তার গ্রামের লোকজন।
যাঁর দাদা প্রতিবাদ করেছিলেন, সেই ছাত্রী বলেন, “আমরা কটূক্তির প্রতিবাদ করলেও কাজ হয়নি। রাস্তা নির্জন ছিল। ওরা এতটাই বাড়াবাড়িকরছিল যে বাধ্য হয়ে দাদাকে ডাকি। শেষ পর্যন্ত দাদাকেও ওরা ছাড়ল না।” হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক বলেন, “আমি ওই যুবকদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কেন তারা এটা করছে। কিছু বোঝার আগেই ওরা আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।”
কালীনগরে যে স্কুলটির সামনে এ দিন ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানেই তিন ছাত্রীর দু’জন পড়েন বলে জানান। তাঁদের বক্তব্য, “কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফর্ম জমা দিতে এসেছিলেন তাঁরা। ফেরার পথে ঘটনাটি ঘটে।” ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অবশ্য দাবি করেন, “আমাদের স্কুলে ওই ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এ দিন কোনও ছাত্রীই স্কুলে আসেনি।” |