|
|
|
|
|
|
স্বপ্নময় চক্রবর্তী |
তাঁর নাম দশানন পণ্ডা। কিন্তু ছোটখাটো নিরীহ চেহারার মানুষ। বাড়িতে ক্যালেন্ডারে পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সৌরছটা। গ্যালিলিয়োর ছবি। বাড়িতে উনি আর ওঁর মা। বাড়ির শালগ্রাম শিলাটিকে খাটা পায়খানায় ফেলে দিয়ে ত্যাজ্যপুত্র হয়েছিলেন। পৈতৃক সম্পত্তি ওঁর ভাইরা ভোগ করেন। উনিই ওঁর মাকে রেখেছেন। একটি স্কুলে মাস্টারি করেন। মেদিনীপুর জেলার সবং থেকে বেশ কিছুটা ভিতরে ওঁর বাড়ি। গ্রামে জন-বিজ্ঞান আন্দোলন করেন। সূর্যগ্রহণের ছবিটা নিজের টাকায় ছাপিয়ে ক্যালেন্ডার বানিয়ে গ্রামের ঘরে ঘরে বিলি করেছেন। গত সূর্যগ্রহণের সময় গ্রহণ চলাকালীন খিচুড়ি খাওয়ার উৎসব করেছিলেন নিজের টাকায়। শুনলাম, আসবে বলেও অনেকেই খিচুড়ি খেতে আসেনি, গ্রহণ ছেড়ে যাওয়ার পর এসেছিল অনেকেই, উনি দেননি, কুকুরদের খাইয়েছিলেন। ত্যাজ্যপুত্র হবার পর বিতাড়িত হয়ে যে টিনের ঘরটা করেছেন, সেটায় গৃহপ্রবেশ করেছিলেন পঞ্জিকা দেখে। যে দিনে ত্রিদোষ, যাত্রা নাস্তি, বিষযোগ দোষ। বারবেলায়। এক বার গ্রামের মুচিপাড়া থেকে কয়েক জনকে ধরে এনে বাড়ির উঠানে জলচৌকিতে বসিয়ে ‘কে বলে তোমারে বন্ধু অস্পৃশ্য অশুচি’ মন্ত্র পড়িয়ে কয়েক জন ছাত্রকে দিয়ে ফুল ছুড়িয়েছিলেন। এলাকায় বিজ্ঞান মঞ্চ বানিয়ে কলকাতা থেকে প্রবীর
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
ঘোষকে ধরে নিয়ে গিয়ে কুসংস্কার-বিরোধী বক্তৃতা দেওয়াতেন। ‘উৎস মানুষ’-এর সম্পাদক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাক্তার গুণব্রত শীল, অমিয় হাটি, বিষ্ণু মুখোপাধ্যায়দের নিয়ে গিয়েছেন গ্রামে, বক্তৃতা করিয়েছেন, রাতের আকাশ দেখিয়েছেন অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্যোতিষ কেন বিজ্ঞান নয়, তা নিয়ে বলতে হয়েছে এই জ্যোতির্বিদকে। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় গেছেন সাপ নিয়ে বলতে। মাঝে মাঝে কলকাতায় আসতেন দশাননবাবু এই সব মানুষদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে, আর এঁদের ধরে নিয়ে যেতে। কলকাতায় এলে আমার সঙ্গেও মাঝেমধ্যে দেখা হত, ওঁকে খাওয়াতে চাইতাম। অতি সস্তার হোটেলে নিরামিষ খেতেন।
কয়েক বছর আগে আমার সঙ্গে দেখা। বিভ্রান্ত মুখ, নোংরা পাঞ্জাবি, মাথায় চিরুনি পড়েনি। বললেন, মাকে নিয়ে বিপদে পড়েছি। বিপদটা হল, ওঁর মা মরছেন না কিছুতেই। তাঁকে মরণাপন্ন ভেবে একটা গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন। যাতে মৃত্যুটা হলেই মায়ের দেহটা দান করে দেওয়া যায়। মাকে দিয়ে অঙ্গীকারপত্রে আগেই সই করে রেখেছিলেন। হাসপাতালে সিট না পেয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়েই দেহদান আন্দোলনের হোতা ব্রজ রায়ের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। যদি সবং-এ মৃত্যু হত, দেহ নিয়ে আসতে অনেকটা সময় চলে যেত, চোখ, কিডনি, কিছুই কাজে লাগত না, তাই কলকাতায় নিয়ে আসা। আই সি ইউ-তে দশ দিন হয়ে গেল। অনেক টাকার বিল...। কী যে করি...।
মা সে বার ভাল হয়ে গেলেন। বাড়ি ফিরতে হল তাঁকে নিয়ে। কিছু দিন পর ওঁর মা দেহরক্ষা করলেন, কিন্তু দেহ দান করা হল না। চিতায় পোড়াতে হল। শ্রাদ্ধ-শান্তির প্রশ্নই ওঠে না, কিন্তু হতাশায় ভুগতে থাকলেন। আমাকে চিঠি লিখেছিলেন ‘আমিও আমার দেহ দান করিব বলিয়া অঙ্গীকার করিয়াছি। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে মরিলে আমার দেহ দান করা হইয়া উঠিবে না। আপনি কি আমাকে কলিকাতায় মরিবার ব্যাপারে সাহায্য করিতে পারেন...’।
কিছু দিন আগে ফোন করেছিলেন। শেয়ালদার একটা সস্তা হোটেলে উঠেছেন। চিকিৎসা করাতে এসেছেন। দেখা করতে গেলাম। ওঁর মাথায় ব্যান্ডেজ। বললেন, নাস্তিকতা করে অনেক সময় গেল, লাভ হল না কিছু। গ্রামে দুর্গা-কালী এ সব পুজো তো আছেই, জগদ্ধাত্রীও যোগ হয়েছে, শেতলাপুজোরও খুব রমরমা। শিবরাত্রিতে ধুমধাম বেড়েছে। সারা রাত গান বাজে মাইকে। নেতারা আসেন। জিজ্ঞাসা করি, মাথায় ব্যান্ডেজ কেন? বললেন, ওটাই তো আপশোস। চারটে সেলাইয়ের মধ্যেই মিটে গেল। শব্দ-শহিদ হওয়া হল না। আজ অবধি আট জন শব্দ-শহিদ হয়েছেন। নামগুলো পর পর বলে গেলেন দশাননবাবু। বললেন, আমি নবম শহিদ হতে চেয়েছিলাম। হল না। বিজ্ঞান-শহিদ কি সহজে হওয়া যায়? ব্রুনো হয়েছিলেন। গ্যালিলিয়ো হতে হতেও পারলেন না। আমিও না।
যা জানলাম উনি এ বার পরিবেশ আন্দোলনে মন দিয়েছিলেন। প্লাস্টিক-বিরোধী ছড়া লিখে বক্তৃতা করেছেন। পোস্টার ছেপেছেন। কিছু দিন আগে এক জাঁদরেল নেতা বক্তৃতা করতে গিয়েছিলেন সবং-এ। মঞ্চ থেকে দু’কিলোমিটার দূর পর্যন্ত অজস্র মাইকে কয়েকশো ডেসিবেলে বক্তৃতা উদ্গিরণ হচ্ছিল। তখন স্কুলে অ্যানুয়াল পরীক্ষা। থানায় গিয়েছিলেন, থানা থেকে ফুটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ বলেছিল, নেতাদের বক্তৃতা ডেসিবেল দিয়ে মাপা যায় না। পটকা-টট্কা ফাটলে তবু অ্যাকশন নেওয়া যায়, বক্তৃতায় এ সব প্রশ্ন ওঠে না। উনি তখন মঞ্চের কাছে গিয়ে সাধ্যমত চিৎকারে বলেছিলেন ‘আওয়াজ কমাও’। তার পরই একটু মারধর, লাথি, লাঠির বাড়ি। এখানে স্ক্যান করাতে এসেছেন। বললেন, কলকাতাতেও তো দেখছি, তুমুল চিৎকারে বক্তৃতা হয়। মাইকে মাইকে ছয়লাপ। মাথা ঝাঁ ঝাঁ করে। খুচ করে মেন তারটা গেরিলা কায়দায় কেটে দিতে পারলে কি শহিদ হওয়া যাবে? নবম শহিদ? কলকাতায় মরলে দেহদানটাও হয়ে যায়। অঙ্গীকারপত্রটা সঙ্গেই আছে। রাখবেন? |
|
শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় |
|
• নতুন গিজার বসিয়েছেন। দুটো কল খুলে ঠান্ডা-গরম জল মিশিয়ে বালতি ভরতি করছেন।
এমন সময় কী একটা ভুল নব ঘুরিয়ে ফেললেন। সঙ্গে সঙ্গে শাওয়ার থেকে ঠান্ডা জলের ফোয়ারা। |
|
|
• পিকনিকে গিয়ে একটা মেয়ের সঙ্গে আলাপ হল। তাকে নিয়ে গভীর জঙ্গলে গিয়ে বসলেন। খানিক পরেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কটাস কটাস কামড়ে জ্বলে যেতে লাগল। দেখলেন, লাল পিঁপড়ের ঢিবির ওপর বসেছেন। |
• অফিসে হনুমান টুপি পরে গেলেন। ভাবলেন, কেউ কিছু বললে বলবেন, প্রসেনজিৎ হয়েছি। কিন্তু কলিগরা মিলে আপনাকে হনুমান ডট কম বলে খ্যাপালো ও ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে দিল। |
|
|
|
|
• দিল্লিতে ২৮টি আসন হইহই জিতে আম আদমি পার্টি জানালেন, তাঁদের জয়ের অন্যতম হাতিয়ার: সোশাল নেটওয়ার্কিং। আনকোরা দলের ডেবিউ টেস্ট-এই দুরন্ত ব্যাটিং ও রেকর্ড-সাফল্যের অংশী ফেসবুক, টুইটার, গুগ্ল প্লাস ও ইউটিউব। নেতারা ভোট-স্ট্র্যাটেজি ঠিক করছেন, কর্মীদের স্মার্টফোন ও মোবাইল ইন্টারনেট বেয়ে তা পৌঁছচ্ছে কোটি নেটিজেন-এর প্রোফাইলে। ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়েছে ১৬ লাখ কল, সঙ্গে এসএমএস-ভয়েস মেসেজ’এ ‘ম্যায় অরবিন্দ কেজরিওয়াল...’। অনলাইন ডোনেট করলেন? নিমেষে হাজির ই-রসিদ। সুন্দর ভবিষ্যতের প্রমিসবহ ফেসবুক স্টেটাস ও কমিউনিটি পেজগুলো অগণ্য লাইক পেয়েছে, ভিডিয়ো শেয়ার হয়েছে ভাইরাসগতিতে। মোদী-ভক্তরাও নামিয়েছিলেন ‘সাইবার সেনা’ ও ‘নমো স্মার্টফোন’, ‘আপ’-এর থান্ডারক্ল্যাপ অ্যাপ আর ভোটরাইট ডট কম-এ প্রচারের পাশে সব মুখচুন ফেলটুস। অ্যাদ্দিন ভোট-ক্যাম্পেনে গলাবাজিই সার ছিল, এখন হিরো সোশাল মিডিয়া। ফেসবুক শুধু দেখনদারির মাটি নয়, জনমতকে কষে গড়েপিটে ভোটে বাজিমাত করারও সৃষ্টিশীল ঘাঁটি, প্রমাণ হল। সব পার্টিই পেল মোক্ষম মেসেজ, বস্তাপচা ট্র্যাডিশন ধুয়ে খাওয়ার দিন গেছে, ই-যুগে টেক-স্যাভি ইন, টেক-শ্যাবি আউট। আর জনতার লাভ: রাস্তা আটকে কানের মাথা খেয়ে জনসভা বন্ধ। সব নেতাই তো অনলাইন!
• বিশ্বের ৫০০ জন লেখক রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে প্রতিবাদ জানালেন, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার ডিজিটাল নজরদারি বা স্নুপিং-এর বিরুদ্ধে। গুন্টার গ্রাস, ওরহান পামুক, মার্টিন অ্যামিস, টম স্টপার্ড, হানিফ কুরেশি, অরুন্ধতী রায়, ইয়ান ম্যাকইউয়ান, মার্গারেট অ্যাটউড-এর মতো লেখক-চিন্তকদের দাবি, যে কোনও মানুষের ডিজিটাল তথ্যের ওপর স্পাইগিরি আসলে স্রেফ চুরি। নিজের বাড়ি-জমি-গয়না-ব্যাংক ব্যালেন্স’এর ওপর আমার যে অধিকার, একই অধিকার আমার ফোনের কল-লিস্ট, ই-মেল বা চ্যাট-হিস্ট্রির ওপর, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কি অন্য কোনও অছিলায় কোনও সরকার তাতে সিঁধ কাটতে পারে না। মানুষ মাত্রেরই আছে ব্যক্তিগত যোগাযোগের বৃত্তটির মধ্যে অগোচর ও অনাক্রান্ত থাকার অধিকার, আমি কাকে ফোন করছি, আন্তর্জালে কী দেখছি, এ সবে আড়ি পেতে আমার জীবন বা আচরণকে প্রেডিক্ট করা মানে আমার ‘ফ্রি উইল’-এর টুঁটি টিপে ধরা, আমার মৌলিক অধিকারে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ। নজরবন্দি মানুষ খাঁচার পশুর মতো পরাধীন, নজরবন্দি সমাজ অগণতান্ত্রিক সমাজ। যে সমাজে মানবাধিকার রিয়েল আর ভার্চুয়াল দুই স্পেসেই মুক্ত উচ্ছল, সেই সমাজই সুস্থ, স্বস্থ। |
|
|
১২.২
ব্র্যাড পিট-এর ৫০তম জন্মদিনে
যত মিলিয়ন পাউন্ড দামের
একটা
গোটা দ্বীপ কিনে উপহার
দিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। |
১৪.১৬৫
নিলামে যত মিলিয়ন মার্কিন
ডলারে
বিক্রি হল আমেরিকার
মাটিতে
প্রথম মুদ্রিত
বই ‘দ্য বে সাম বুক’। |
৫৮৮৬০৯
রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনে
যত জন ভোটার ইভিএম
মেশিনে ভোট দিলেন ‘নান
অব দি অ্যাবাভ’ পছন্দে। |
৪১
ভারতে মোট
জনসংখ্যার
যত
শতাংশ
ব্যাংক-পরিষেবার বাইরে।
|
১০৩.৫
যত গ্রাম ওজনের গোল্ড মেডেল পেলেন দাবার
নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেন। |
১৩৫৪৪৫
২০১২ সালে মোট যত
জন
ভারতীয় আত্মহত্যা
করেছেন।
এঁদের ৬৩৩৪৩
জন
বিবাহিত
পুরুষ,
৩১৩৩৫
বিবাহিত মহিলা।
|
৩৪০০০০০০
কর্মীদের ভিসা সংক্রান্ত
জটিলতার জেরে মার্কিন
প্রশাসনকে
যত মার্কিন ডলার
জরিমানা দিল
তথ্য-প্রযুক্তি
সংস্থা ইনফোসিস। |
২০৮০০
দিল্লির ‘আপ’ প্রার্থী
ধর্মেন্দ্র
সিংহের মাত্র যত টাকার সম্পত্তি আছে বলে জানা গেল মনোনয়নপত্র থেকে। এ বছর নির্বাচনের সমস্ত প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম।
|
২৭
মার্সেই দলের বিরুদ্ধে খেলা
শুরুর
যত সেকেন্ডে গোল
করলেন
আর্সেনাল-এর ফুটবলার
জ্যাক উইলশেয়ার। এ বছর
চ্যাম্পিয়ন্স
লিগে এটাই এখনও
পর্যন্ত দ্রুততম গোল। |
|
|
|
|
অ
সী
ম
রা
য় |
|
|
ইভিএম-এ আছে হরেক বোতাম, বুঝেশুনে পুশ কর!
সেইটি না করে হায় কী করলি, বুঝে ওঠা দুষ্কর।
প্রতিষ্ঠিতরা কেউ কুপোকাত, বাকি কেউ ভয়ে কাঁটা।
ভোটের আকাশ ঝাঁট দিতে এল সদ্য-বানানো ঝাঁটা। |
কে কার সঙ্গে কী ভাবে মিশবে, কতটুকু প্রাকৃতিক...
রাষ্ট্রই সেটা এই বার থেকে বলে দেবে জেনো ঠিক
অ্যাডাল্ট, তবুও... পুরুষ বা নারী
সমকামী হলে, তা অ্যাডাল্টারি
উপনিবেশের আইন এখনও দারুণ প্রাসঙ্গিক! |
|
|
|
লেটারিং বেটারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|