সুনীল ছেত্রীদের জয়ের দৌড় থামাতে আর্মান্দো কোলাসোর স্ট্র্যাটেজি আক্রমণ, আক্রমণ আর আক্রমণ!
ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে বেঙ্গালুরুর হোটেলে যখন আর্মান্দোকে ফোনে ধরা হল, তখন কাগজ-কলম নিয়ে রণকৌশল ছকতে ব্যস্ত লাল-হলুদ কোচ। তবে ফুটবলারদের বাড়তি চাপ নিতে বারণ করেছেন। দল তাই বেশ ফুরফুরে। শনিবার বিকেলে ফোন করে জানা গেল হোটেলের কাছে শপিং মলে গিয়েছেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা।
ম্যাচের আগে ফুটবলারদের এ ভাবে চনমনে রাখাটাও নাকি আর্মান্দোর রণকৌশলেরই অঙ্গ। তবে পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী কোচ নিজে যে বেশ চাপে আছেন সেটা তাঁর কথাবার্তাতেই বেরিয়ে পড়ছে। বলছিলেন, “চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে থাকতে হলে বেঙ্গালুরুকে হারাতেই হবে। ওদের ফরোয়ার্ড লাইন খুব শক্তিশালী। সুনীল, শন রুনি নিয়মিত গোল করছে। আক্রমণই ওদের প্রধান হাতিয়ার। আমাদেরও তাই আক্রমণের পথেই পাল্টা দিতে হবে।” আসলে, বেঙ্গালুরুর অস্ত্রেই তাদের বধ করতে চাইছেন চিডিদের কোচ। |
আর্মান্দো কোলাসো। আজ আবার কঠিন পরীক্ষা। |
বেঙ্গালুরু এফসি ১৩ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে আই লিগের বাকি দলগুলোকে অনেকটাই পেছনে ফেলে দিয়েছে। ইস্টবেঙ্গল সেখানে ১০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট। এবং লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে সুনীলদের বিরুদ্ধে তাদের জেতাটা জরুরি। আজ, রবিবার বেঙ্গালুরুতে ইস্টবেঙ্গল যদি হেরে যায়, তবে এ মরসুমেও আই লিগ সম্ভবত অধরাই থেকে যাবে তাদের। উল্টো দিকে বেঙ্গালুরুও চাইছে, লাল-হলুদ বাহিনীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে। সঙ্গে কল্যাণীর মাঠে চিডিদের কাছে ০-২ হারের বদলা নেওয়ার জেদটাও আছে। অ্যাশলে ওয়েস্টউড বললেন, “আই লিগের প্রথম পর্বে ইস্টবেঙ্গলের কাছে হারতে হয়েছিল। সেটা থেকে আমার ছেলেরা শিক্ষাও নিয়েছে। তবে ম্যাচটা এখন অতীত। রবিবার তিন পয়েন্টের জন্যই ঝাঁপাব।”
দু’দলের শেষ পাঁচ ম্যাচের পরিসংখ্যান বলছে, আর্মান্দোর দল ডার্বি-সহ মাত্র দু’টি ম্যাচ জিতেছে। দু’টি ড্র হয়েছে। হার একটি। ওয়েস্টউডের দল আবার শেষ চার ম্যাচে টানা জিতেছে। ড্র করেছে একটি। সব থেকে গুরুত্বর্পূণ তথ্য, ঘরের মাঠে এখনও পর্যন্ত কোনও ম্যাচ হারেনি ফেডারেশনের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল। বেঙ্গালুরুতে খেলা সাত ম্যাচের মধ্যে মোহনবাগান আর স্পোর্টিং ম্যাচ ড্র করেছিলেন ওয়েস্টউডের ছেলেরা। বাকি পাঁচ ম্যাচই জিতেছেন। এই সব পরিসংখ্যানকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল। উল্টে চিডি বললেন, “আই লিগে বেঙ্গালুরু তো আমাদের কাছেই প্রথম হেরেছিল। রবিবারও জেতার জন্য আমরা তৈরি।” কিন্তু চিডি-মোগার যুগলবন্দি তো সে ভাবে সাফল্য পাচ্ছে না? লাল-হলুদের এক নম্বর স্ট্রাইকারের দাবি, “আমরা তো একসঙ্গে সে ভাবে পুরো ম্যাচ খেলিনি। একটু সময় দিতে হবে।”
রবিবার আর্মান্দোকে চিন্তায় রাখছে চোটের জন্য উগা ওপার আর মেহতাব হোসেনের না থাকা। পাশাপাশি, চিডি-মোগা ফর্মে না থাকাটাও এই মুহূর্তে লাল-হলুদ শিবিরের বড় সমস্যা। বেঙ্গালুরু আবার কার্ড সমস্যায় জন জনসনকে পাচ্ছে না। চোটের জন্য নেই কিগান পেরেরাও। তবু খাতায়-কলমে এগিয়ে অ্যাশলে ওয়েস্টউডের দলই।
রবিবার জিতলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে বেঙ্গালুরু। এই অবস্থায় কোলাসোর স্ট্র্যাটেজি আর চিডিদের আত্মবিশ্বাস তাদের রুখে দিতে পারে কি না, সেটাই দেখার!
এ দিকে শনিবার স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া ৫-১ হারাল লাজং এফসি-কে। ক্লুবের ওগবা কালু হ্যাটট্রিক করলেন। |
রবিবারের আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : বেঙ্গালুরু এফসি (বেঙ্গালুরু, ৩-০০)
ইউনাইটেড স্পোর্টস : পুণে এফসি (কল্যাণী, ২-০০)
মহমেডান : চার্চিল (দুলের, ৩-৩০)
রাঙদাজিদ : মুম্বই এফসি (শিলং, ৩-৩০) |