লঞ্চ থেকে নামতে গিয়ে গঙ্গায় তলিয়ে গেলেন এক যুবক। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বাগবাজার ঘাটে। পুলিশ জানায়, নিখোঁজ ওই যুবকের নাম শুভজিৎ রায়চৌধুরী। পাটুলির বাসিন্দা শুভজিৎ যোগেশচন্দ্র ল’কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। এ দিন জলে ডুবুরি নামানো হলেও রাত পর্যন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি তাঁর।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন এক বন্ধুর সঙ্গে বিবাদী বাগ এলাকায় একটি মোবাইলের দোকানে এসেছিলেন শুভজিৎ। কিন্তু দোকানটি বন্ধ থাকায় তাঁরা বাগবাজার এলাকায় আর এক বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো লঞ্চে হাওড়া যান তাঁরা। সেখান থেকে আবার ওঠেন বাগবাজার যাওয়ার লঞ্চে। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, সন্ধ্যা পৌনে ছ’টা নাগাদ লঞ্চটি বাগবাজার ঘাটে পৌঁছয়। সে সময়ে লঞ্চের ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন শুভজিৎ। সেটি জেটিতে আসা মাত্রই লাফ দেন তিনি। ঠিক সেই সময়ে জেটিতে ধাক্কা খেয়ে লঞ্চটি কিছুটা পিছিয়ে গেলে ওই ফাঁক গলেই জলে পড়ে যান শুভজিৎ। |
গঙ্গার ঘাটে শুভজিতের বাবা। |
পুলিশ সূত্রের খবর, শুভজিৎকে পড়ে যেতে দেখেই হইচই জুড়ে দেন লঞ্চের যাত্রীরা। শুভজিতের সঙ্গে থাকা বন্ধুটি বাগবাজারে অন্য বন্ধুর বাড়িতে খবর দেন। সেই বন্ধু পরিজনদের নিয়ে চলে আসেন। খবর যায় পুলিশেও। স্থানীয় লোকজন খোঁজাখুঁজি করলেও শুভজিতের সন্ধান মেলেনি। এর পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশের ডুবুরি ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ শুরু হয়। পাটুলির বাড়ি থেকে শুভজিতের বাবা বাসুদেব রায়চৌধুরী এবং অন্য আত্মীয়েরা চলে আসেন।
খোঁজ চলাকালীন বাগবাজারের জেটিতেই মাথায় হাত দিয়ে বসেছিলেন বাসুদেববাবু। কখনও জেটির রেলিঙে মাথা ঠেকিয়ে কাঁদছিলেন। বারবার আত্মীয়দের ফোনে বলছিলেন, “রানার খোঁজ (শুভজিতের ডাকনাম) মিলছে না।” শুভজিতের পরিজনেরা জানান, শুক্রবারই পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে তাঁর। খুব ভাল নম্বর পেয়েছেন তিনি। ভেঙে পড়েছেন শুভজিতের বন্ধুরাও। তাঁরা জানান, প্রায়ই বাগবাজারে ওই বন্ধুর বাড়িতে আসতেন তাঁরা। হাওড়া থেকে লঞ্চে চেপেও এসেছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, লঞ্চ থেকে শুভজিৎকে সোজা জলের তলায় তলিয়ে যেতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেই মতো জেটির তলায় খোঁজ করেছেন ডুবুরিরা। কিন্তু সেখানে নরম মাটি মেলেনি। ফলে সেখানে তাঁর আটকে থাকার সম্ভাবনা নেই। আশপাশে খুঁজেও শুভজিতের সন্ধান পাননি তাঁরা। পুলিশ জানায়, ডুবুরি তুলে নেওয়া হলেও সংলগ্ন থানাগুলিকে সতর্ক করা হয়। রিভার ট্র্যাফিক পুলিশও খোঁজ চালাচ্ছে। |