নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা |
শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে কোনও শিল্প নেই। ২০০৬ সালে প্রায় দেড় কোটি টাকায় কুমারগ্রামের বারবিশায় শিল্প বিকাশ কেন্দ্র তৈরি হয়। ছোট এবং মাঝারি মাপের ৫০টি শিল্প তৈরির সংস্থান রয়েছে ওই কেন্দ্রে। ১৮ বিঘা জমিতে তৈরি হয়েছে ৬টি শেড। নিকাশি, জল এবং যোগাযোগ পরিকাঠামোও তৈরি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাতটা বছর পার হয়ে গেলেও এ পর্যন্ত ছোট-বড় কোনও শিল্পই সেখানে গড়ে ওঠেনি।
শিক্ষিত বেকারদের স্বনির্ভর করার উদ্দেশ্যেই রাষ্ট্রীয় সমবিকাশ যোজনার বরাদ্দ অর্থে বারবিশায় শিল্প বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। অটোমোবাইল শিল্প, ধূপের কাঠি, মোমবাতি, মুদ্রণ, আসবাব তৈরির মতো শিল্পের সংস্থান রাখা হয়। কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরে তা কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির হাতে দেওয়া হয়। তার পরের পরিকল্পনা রূপায়িত হয়নি। সম্প্রতি জেলার ব্যবসায়ী সংগঠন শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে শিল্প স্থাপনের দাবি তুলেছে।
কিন্তু কেন এই রকম অবস্থা?
কেন্দ্র চালুর পর নানা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহীদের আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে। তার পরেও কোনও সংস্থা এগিয়ে না আসায় অন্য এক সংস্থাকে লিজ দেওয়া হয়েছিল। সেই সংস্থাকেই শিল্পোদ্যোগীদের ডেকে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাও পরিস্থিতি বদলায়নি। বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন, “বারবিশায় শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে শিল্প এলে অর্থনৈতিক চেহারাটা বদলে যেত। কেন্দ্রটি নিয়ে ৭ বছর ধরে গড়িমসি চালানো হচ্ছে। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা।” কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তমায়া নার্জিনারী বলেন, “লিজপ্রাপ্ত সংস্থাকে ডেকে বৈঠক করা হবে। একই সঙ্গে প্রশাসনকে ফের উদ্যোগী হতে আর্জি জানানো হবে।” লিজপ্রাপ্ত ওই সংস্থার এমডি শৈবাল হাজরা বলেন, “শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে সৌর বিদ্যুৎ শিল্পের যন্ত্রাংশ তৈরির কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এপ্রিল মাস থেকে ওই কেন্দ্রগুলি শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করছি।”
শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের এই হালে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ তুলে কাজিয়াও শুরু হয়েছে। স্থানীয় তৃণমুল নেতা হিল্লোল সরকার বলেন, “বামফ্রন্ট পরিচালিত পঞ্চয়েত সমিতি শিল্প বিকাশ কেন্দ্র নিয়ে রাজনীতি করেছে। শিল্প গড়ে না তোলা হলে বৃহত্তর আন্দোনে হবে।” সিপিএমের জেলা কমিটি সদস্য চানু সরকার বলেন, “আমরা চাই ওখানে শিল্প গড়ে উঠুক।” তার অভিযোগ, “রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই নিয়ে কোনও উদ্যোগ দেখছি না।” জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার ওই প্রসঙ্গে বলেছেন, “শিল্প বিকাশ কেন্দ্রের ব্যাপারে বিশদ খোঁজ নিয়ে দরকারে পদক্ষেপ করা হবে।” |