আধার নিয়ে গড়িমসি গ্রাহকেরই, বলছে কেন্দ্র

১৩ ডিসেম্বর
রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি পেতে আধার নম্বর জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও পিছিয়ে দেওয়ার যে দাবি পশ্চিমবঙ্গ তুলেছে, তা খতিয়ে দেখবে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। তবে মন্ত্রকের বক্তব্য, আধার নম্বর হাতে পেয়েও অধিকাংশ গ্রাহক তা গ্যাসের দোকানে ও ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করাচ্ছেন না। আসল সমস্যাটা সেখানেই।
কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের চারটি জেলায় ইতিমধ্যেই আধার নম্বরের ভিত্তিতে রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির টাকা গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি দেওয়া হচ্ছে। ১ জানুয়ারি থেকে আরও ৩ জেলায় এই ব্যবস্থা চালু হবে। এখনও যাঁদের আধার নম্বর তৈরি হয়নি, তাঁরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় পরিষেবা শুরুর দিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত আধার নম্বর তৈরি করিয়ে ব্যাঙ্ক ও গ্যাস সংস্থায় তা নথিভুক্ত করানোর সময় পাবেন। কিন্তু এই সময়সীমা অনির্দিষ্ট কালের জন্য পেছানোর দাবি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আজ পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি বলেন, “সময়সীমা বাড়ানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।” তবে এ-ও বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছে, নগদ ভর্তুকি ব্যবস্থা চালুর তিন মাস পরে ভর্তুকি পেতে হলে আধার বাধ্যতামূলক। মামলা চলছে। আমরা চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি।”
তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে সার্বিক ভাবেই আধার প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তা মানতে নারাজ মইলি। তাঁর বক্তব্য, “বাস্তব পরিস্থিতি কিন্তু এ কথা বলছে না। যে ভাবে কাজ হচ্ছে, তাতে মানুষের সুবিধেই হচ্ছে।” পশ্চিমবঙ্গের যুক্তি ছিল, কত মানুষের এখনও আধার নেই, তা স্পষ্ট নয়। কত দিনে মিলবে, সেটাও অনিশ্চিত। এ দিকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আধার নম্বর পেয়ে, গ্যাসের দোকানে ও ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত না করালে ভর্তুকি মিলবে না। এ কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সমস্ত রাজ্যবাসীর আধার নম্বর তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আধার-ভর্তুকি চালু করাই উচিত নয়।
তেল মন্ত্রকের পাল্টা যুক্তি, আধার নম্বরের ভিত্তিতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি চালুর মূল উদ্দেশ্য ছিল, ভুয়ো গ্রাহকদের চিহ্নিত করা। নতুন ব্যবস্থায় গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লক্ষ ২৫ হাজার গ্রাহককে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁরা একাধিক গ্যাসের সংযোগ নিয়েছিলেন। যার ফলে প্রায় ৮১ কোটি টাকা ভর্তুকি সাশ্রয় হয়েছে। মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, বহু জায়গাতেই আধার কার্ড পাওয়া সত্ত্বেও সিংহভাগ গ্রাহক তা ব্যাঙ্ক ও গ্যাসের দোকানে নথিভুক্ত করাচ্ছেন না। যেমন, ১ নভেম্বর থেকে কলকাতা, হাওড়া ও কোচবিহার-সহ দেশের ৩৮টি জেলায় চালু হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত, জেলাগুলির মোট গ্রাহকের মধ্যে ৬৭% আধার নম্বর পেয়েছেন। অথচ তাঁদের মাত্র ২৬.৫% গ্রাহক গ্যাসের দোকানে গিয়ে তা নথিভুক্ত করেছেন। ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করেছেন মাত্র ১৩.৬%।
কাজেই তেল মন্ত্রকের বক্তব্য, সময়সীমা বাড়বে কি না, সেটা পরের কথা। কিন্তু আধার কার্ড তৈরি করাতেই হবে। ভর্তুকি হস্তান্তর প্রকল্পের মিশন ডিরেক্টর এস সুন্দরেশন তাই অনুরোধ জানিয়েছেন, “অফিস থেকে আধ বেলা ছুটি নিন। গ্যাসের দোকান ও ব্যাঙ্কে গিয়ে কাজটা সেরে ফেলুন।”

আধারের তথ্য সংগ্রহ শুরু হল কোচবিহারে
আজ, শনিবার থেকে কোচবিহারে রান্নার গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরদের দোকানে গ্রাহকদের জন্য আধার কার্ডের ‘বায়োমেট্রিক’ (ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ নেওয়া এবং চোখের মণির স্ক্যান করা) তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হচ্ছে। শুক্রবার জেলাশাসক, জনগণনা দফতরের কর্তা, তেল সংস্থার প্রতিনিধি-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বৈঠকে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রক্রিয়া। আগামী রবিবার এক দিনের জন্য তা বন্ধ থাকবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.