|
|
|
|
বিএসএনএল নিয়ে দিনভর দুর্ভোগ |
পাইপ বসাতে গিয়ে কোপ, বিপর্যস্ত পরিষেবা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মধ্যরাত থেকে শুভময় পাত্রকে ফোনে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছেন স্ত্রী অর্পিতা শী (পাত্র)। শুক্রবার সকাল গড়িয়ে দুপুর হল। কিছুতেই ফোনে পাচ্ছেন না তিনি। বারবার লাইন কেটে যাচ্ছে। বিকেলের দিকে কয়েক সেকেন্ডের জন্য যোগাযোগ হল দু’জনের। ‘শুভ বিবাহ’ বলতেই লাইন কেটে গেল।
শুক্রবার ওই দম্পতির ছিল প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। কিন্তু বিএসএনএলের বিপর্যস্ত হওয়ায় ভাল করে শুভেচ্ছা বিনিময় হল না।
আসলে জলের পাইপ বসাতে গিয়ে বিএসএনএলের কেবল লাইনে কোপ পড়ায় শুক্রবার দিনভর টেলি-পরিষেবা বিঘ্নিত হল মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ার পাশাপাশি সারা দিন থমকে গেল ব্যাঙ্ক-সহ অন্যান্য লিঙ্ক পরিষেবাও। বহরমপুর, কান্দি-সহ মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে নাজেহাল হল বীরভূমের মানুষও।
অন্য দিকে, দক্ষিণবঙ্গের হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু এলাকাতেও এ দিন বিএসএনএলের টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সকাল থেকেই। তবে রাত পর্যন্ত তার সঠিক কারণ জানাতে পারেননি বিএসএনএল কর্তারা।
বিএসএনএলের বহরমপুর ডিভিশনের টেলিকম কর্তা চিত্তরঞ্জন মহাপাত্র বলেন, “স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষ জলের লাইন বসাতে গিয়ে মাটির তলায় বেশ কয়েকটি কেবল লাইন কেটে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে। সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই।” তাঁর অভিযোগ, এ ব্যাপারে স্থানীয় পুরসভাকে বহু বার সতর্ক করা হলেও তারা বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে আগাম কিছুই জানান না। তিনি বলেন, “আমাদের আগাম জানালে কোথায় কী ভাবে কেবল লাইন গিয়েছে তা জানিয়ে দেওয়া যেত।” বীরভূমের টেলিকম বিভাগের এজিএম (প্রশাসন) অরুণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “বহরমপুরে ই.টি.আর (ইস্টার্ন টেলিকম রিজিওন)-এর তিনটি লাইনের অপটিক্যাল ফাইবার কেটে যাওয়ায় এই বিপত্তি।”
বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য অবশ্য পাল্টা তোপ দেগেছেন, “কাজ শুরুর আগে বিএসএনএল কর্তাদের জানানো হয়েছিল। তাঁদের কাছে বহরমপুর শহরে বিএসএনএলের কেবল লাইনের নকশা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি।”
এ দিন বোলপুরের রেশমি দালাল (নস্কর) গাড়ির চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। অগত্যা অন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে কোনও ক্রমে পৌঁছন পরীক্ষাকেন্দ্রে। স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় ফোনে অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেন না বোলপুরেরই লায়েকবাজারের বাসিন্দা সাধু খান। হাসপাতালে পৌঁছতে না বাড়িতেই প্রসব হয়। তিনি বললেন, “প্রসবে কোনও সমস্যা হয়নি ঠিকই, তবে অঘটন হলে কী হত!”
অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়েও একই কারনে এ দিন দিনভর প্রায় থমকে ছিল টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা। ওই জেলার বিএসএনএলের এক কর্তারও সন্দেহ, রাস্তার কাজ করতে গিয়ে মাটির তলায় অপটিকাল ফাইবার কেব্ল কেটে যাওয়ার ফলেই ওই বিপত্তি। কিন্তু ঠিক কোথায় এই বিপত্তি ঘটেছে তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি তাঁরা। |
|
|
|
|
|