‘সুন্দর হৃদিনন্দন তুমি নন্দন ফুলহার’ মধুর এই দ্বৈত রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে প্রবীণ-নবীন দুই শিল্পী যে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন, তার ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’ ঘটে নবীনের কণ্ঠে পালুস্করের গাওয়া বিখ্যাত ‘পায়ো জী ম্যায়নে’ ভজনের ভাবময় নিবেদনে। গাইলেন বিমল বসু আর তাঁর পুত্র ঋদ্ধিমান বসু। সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে উত্তর কলকাতার ‘কথা ও সুর’ আয়োজিত ‘সঙ্গীত পরম্পরা’য় প্রথম পর্বে ‘তুমি কিছু দিয়ে যাও’ শিরোনামে একটি দ্বৈত সহ মোট ১৭টি রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনান বিমল ও ঋদ্ধিমান। মূল প্রতিপাদ্য রবীন্দ্রনাথের প্রেমভাবনা। |
রবীন্দ্রনাথের গানে প্রেম যে নারী-পুরুষের তথাকথিত সম্পর্কমাত্র নয়, ঈশ্বর-বিশ্বপ্রকৃতি-মানবী মিলিয়ে এক আশ্চর্য রসায়ন তার ব্যাখ্যা পাওয়া গেল। প্রথম পর্বে শৈলজারঞ্জন মজুমদারের শিষ্য বিমল বসু। তাঁর গাওয়া বিশেষ উল্লেখযোগ্য ‘আমার সকল রসের ধারা’, ‘পুরানো জানিয়া চেয়ো না’। ‘বিদায় করেছ যারে’ গানটি অনবদ্য।
প্রথম পর্বে ন’টি রবীন্দ্রগান এবং দ্বিতীয় পর্বে লোকশাস্ত্রীয়সঙ্গীতে শিল্পীসত্তার পরিচয় দিলেন ঋদ্ধিমান বসু। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের হাতেখড়ি দীননাথ মিশ্রের কাছে। আর রবীন্দ্রগানে আশীষ ভট্টাচার্য। তাঁর নিবেদনে ছিল কীর্তনাঙ্গ ‘দু’জনে দেখা হল’, ‘বরষন মন্দ্রিত অন্ধকারে’। দু’টি ঢালা গান টপ্পাঙ্গ ‘আহা তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা’ ও ‘তুমি কিছু দিয়ে যাও’ মর্মস্পর্শী। দ্বিতীয় পর্বে ভূমালী বন্দিশ দিয়ে শুরু করে ঋদ্ধিমান শোনালেন ঠুংরি, দাদরা, গজল ও ভজন। দাদরা ‘মহারাজা নজরিয়া’ চমৎকার। গোড়ায় ঋদ্ধিমানের পরিবেশন ভঙ্গিতে কিছুটা আড়ষ্টতা ছিল, সম্ভবত আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান বলেই। অনুষ্ঠানের আয়োজক ‘কথা ও সুর’-এর সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়। |
মৃত্যুর আগে শেষ প্রতিবেদন |