|
|
|
|
দুষ্কৃতী হানা মন্দিরে, সোনাদানা লুঠ
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
ফের মন্দিরের তালা ভেঙে বিগ্রহের গয়নাগাটি চুরির ঘটনা ঘটল শ্রীরামপুরে। বৃহস্পতিবার রাতে শতাধিক বছরের পুরনো চাতরা হরিসভা মন্দিরে ঢুকে ৬-৭ ভরি সোনা এবং বেশ কিছু রূপোর অলঙ্কার হাতিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ মেলে সিংহাসন থেকে নামানো অবস্থায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দুষ্কৃতীরা অবশ্য শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ধরা পড়েনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ শ্রীরামপুর স্টেশনের অদূরে ওই মন্দিরে হানা দেয় ৪-৫ জন দুষ্কৃতী। লোহার গেটের তালা ভেঙে ফেলে তারা। তারপরে দরজার তালা ভেঙে মন্দিরে ঢোকে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রাধাকৃষ্ণ ছাড়াও সেখানে গৌরনিতাই, গোপাল-সহ অন্য কয়েকটি বিগ্রহ আছে। মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ পঙ্কজ ঘোষ বলেন, “ওই সমস্ত বিগ্রহের বেশ কিছু সোনার গয়না হাতিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। কিছু রূপোর গয়নাও ঝুলিতে ভরে। রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ সিংহাসন থেকে নামিয়ে নিয়েছিল। আওয়াজে এক পড়শি ঘুম ভেঙে উঠে পড়েন। সম্ভবত তখনই দুষ্কৃতীরা সোনাদানা নিয়ে গা-ঢাকা দেয়।” খবর পেয়ে রাতেই তদন্তে আসে পুলিশ। শুক্রবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে।
কয়েক দিন আগে শহরের সাড়ে ৩শো বছরের পুরনো মদনমোহন মন্দিরেও হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। একই কায়দায় সেখান থেকেও বিগ্রহের অলঙ্কার হাতিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তারা। ওই ঘটনায় জড়িতদের এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সে ক্ষেত্রেও মদনমোহনের বিগ্রহ সিংহাসন থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়েছিল। স্বভাবতই দু’টি ঘটনাই একটিই দলের কাণ্ড বলে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা মনে করছেন। যদিও সোনাদানার পাশাপাশি মূল্যবান বিগ্রহ হাতানোও দুষ্কৃতীদের লক্ষ ছিল কিনা, পুলিশকে তা ভাবাচ্ছে।
জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, “শীতকালে রাত হলেই অধিকাংশ মন্দির চত্বর সুনসান হয়ে যায়। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগ নেয়। পুলিশ টহল দিলেও বিশাল এলাকায় সব সময় নজর দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে শ্রীরামপুরে দু’টি ঘটনারই কিনারা করতে জোরদার তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” মদনমোহন মন্দিরে অবশ্য রাতে নয়, দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই দুষ্কৃতীরা হানা দিয়েছিল।
শ্রীরামপুরে বহু পুরনো মন্দির রয়েছে। সেই সব মন্দিরে কোথাও রয়েছে কষ্টিপাথর, আবার কোথাও অষ্টধাতুর দেবদেবীর মূর্তি। বিগ্রহের অলঙ্কার তো বটেই, অনেক মন্দিরেই বহু টাকা মূল্যের বাসনকোসন পর্যন্ত থাকে। কিন্তু প্রায় সব ক্ষেত্রেই মন্দিরগুলো একেবারে অরক্ষিত থাকে। এরই সুযোগ নেয় দুষ্কৃতীরা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মূল্যবান দেবতার মূর্তি হাতানোর চক্র যে সক্রিয়, ইদানীং নানা ঘটনায় তার প্রমাণ মিলেছে। বিভিন্ন মন্দির যে ভাবে দুষ্কৃতীদের নিশানায় এসেছে তাতে সাধারণ মানুষ চিন্তিত। |
|
|
|
|
|