জেলা পরিষদ
সারা দিনে দরজাই
খুলল না অনেক কর্তার
চাবি খোলা হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই সকাল ৮টা ৪০শে। কিন্তু শুক্রবার হুগলি জেলা পরিষদের হর্তাকর্তারা যখন একে-একে উদয় হতে শুরু করলেন, বেলা গড়িয়ে তখন দুপুর।
সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রায় কোনও কর্মীর দেখা মেলেনি। জেলা বাস্তুকার ছাড়া অন্য কোনও অফিসারেরও নয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুমন ঘোষ অফিসে পা দিলেন, ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে ১১টা ছুঁইছুঁই। জেলা পরিষদের সভাধিপতি শেখ মেহেবুব রহমানের পা পড়ল দুপুর ১২টা ২০তে। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী এলেন, বেলা সাড়ে ৩টেয় শীতের রোদ হেলে পড়েছে।
এত দেরিতে এলেন?
সভাধিপতি: সকালে এত লোক বাড়িতে দেখা করতে আসে, বেরোতে দেরি হয়ে যায়।
পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ: সিঙ্গুরে একটা রাস্তা দেখতে গিয়েছিলাম।
আর যাঁরা তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন?
হুগলির মহানাদ এলাকা থেকে এসেছিলেন দুই ভাই মেঘনাথ ও রাজু কোটাল। ওঁরা বেশ কয়েক বিঘে জমিতে আলু চাষ করেছেন। হঠাৎই মিনি ডিপ টিউবওয়েল বাবদ বিদ্যুতের বিল এসেছে ৪২ হাজার টাকা। তা মেটাতে না পারায় কেটে দেওয়া হয়েছে লাইন। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছিল। সকাল ১১টা থেকে অপেক্ষা করে-করে মনোজবাবুর দেখা মিলল বিকেলে।
সকাল সাড়ে ১০টা

দফতরে কর্মীদের দেখা নেই।
সকাল ১০টা ৩৭

অফিসারদের ঘরও ফাঁকা।
বলাগড়ের বিধায়ক অসীম মাঝি বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার টাকার জন্য প্রকল্প জমা দিতে সকালেই চা-জলখাবার খেয়ে ৩০ কিলোমিটার উজিয়ে জেলা পরিষদে এসেছিলেন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি, অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ। বিধায়ক নিজে সভাধিপতিকে আগাম বলে রেখেছিলেন। তবু ৩টে ২০তেও তিনি কর্তার দর্শন পাননি।
সুগন্ধায় দিল্লি রোড লাগোয়া জেলা পরিষদের নার্সারির দেখভালের দায়িত্বে আছেন জীর্ণ-শীর্ণ বৃদ্ধ মণিমোহন ঘোষ। গত ছ’মাস তিনি বেতন পাচ্ছেন না। তাঁর আক্ষেপ, “এ দোর-ও দোর ঘুরছি। আর বেতনের মায়া নেই। নার্সারির সরকারি চাবি ফিরিয়ে দিয়ে বর্ধমানের কেতুগ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরতে চাই। কিন্তু ওঁরা চাবি ওরা ফেরত নিচ্ছেন না। খালি ঘোরাচ্ছেন আর বলছেন, বেতন পেয়ে যাবেন। কাগজপত্র সব তৈরি।” বিকেল ৪টেতেও তিনি ঠায় প্রতীক্ষায়। সভাধিপতি তত ক্ষণে অফিস ছাড়ার তোড়জোড় করছেন।
বেলা ১২টা ২০

এলেন সভাধিপতি মেহবুব রহমান।
বিকেল ৪টে

তখনও অপেক্ষায় মণিমোহন ঘোষ।
তাঁরা যা-ও খানিক উদয় হয়েছেন, অনেকে দেবদেবীর মন্দিরে দোরই খোলেনি। তার মধ্যে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি চামেলি মুর্মু যেমন আছেন, রয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ কর্মাধ্যক্ষ শেখ আফসার হোসেন, খাদ্য ও সরবরাহ কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় দাস, কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ মানস মজুমদারেরাও। তাঁরা সকলেই অবশ্য কোথাও না কোথাও ‘কাজে’ আটকে গিয়েছিলেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.