শিক্ষিকাদের উদ্যোগেই কর্মশালা
রোজই স্কুল থেকে বাড়ি আর বাড়ি থেকে স্কুল। পড়াশোনার বাইরে আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছে থাকলেও অভাবে পড়ে অনেক পড়ুয়াই তা করতে পারে না। এ বার ছাত্রীদের সেই ইচ্ছেপূরণে উদ্যোগী হলেন শিক্ষিকারাই। হিরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তিরিশ জন শিক্ষিকা সম্প্রতি স্কুলেই একটি কর্মশালার আয়োজন করেন।
কর্মশালায় চলছে পাটের জিনিস তৈরি শেখা। —নিজস্ব চিত্র।
বার্নপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত এই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য জানান, স্কুলের বেশির ভাগ ছাত্রীই আসে অত্যন্ত গরিব পরিবার থেকে। পড়া শেষ না করে অনেকেই মাঝপথে স্কুল ছেড়ে দেয়। এদের স্বাবলম্বী করার জন্য স্কুলে একটি পাঠ্যক্রম শুরু হয়েছিল তিন বছর আগে। সরকারি সিলেবাসের বাইরে এই পাঠ্যক্রমে ছাত্রীদের নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক, আঁকা এবং নানা হাতের কাজ শেখানো হয়েছিল। নিবেদিতাদেবীর দাবি, এই কাজ শিখে ছাত্রীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।
এত দিন পর্যন্ত স্কুলের শিক্ষিকাদের কাছেই চলত তালিম। এ বারই প্রথম কর্মশালায় পেশাদার শিল্পীদের কাছে হাতের কাজ শিখছে ছাত্রীরা। ২১৫ জন ছাত্রীকে নিয়ে সোমবার থেকে তিন দিন ধরে কর্মশালা চলে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত নাচ, গান, আবৃত্তি, পাটের জিনিস তৈরি, শেখানো হয় ছাত্রীদের। দুপুরের খাবার ব্যবস্থা ছিল স্কুলেই। প্রধান শিক্ষিকা জানান, কর্মশালায় খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। সবটাই ব্যায় করেছেন তিরিশ জন শিক্ষিকা ও স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রদীপকুমার ঠাকুর।
কর্মশালা নিয়ে উৎসাহের শেষ ছিল না ছাত্রীদের। হিরাপুরের ঝুড়ি ব্যবসায়ী শঙ্কর ডোম কাঁচা বাঁশ চিরে ঝুড়ি বানানো শেখান কর্মশালায়। তিনি বলেন, “শিল্পাঞ্চলে ঝুড়ির চাহিদা আছে। দিনে একটি ঝুড়ি বুনতে পারলে তিরিশ টাকা হাজরি মিলবে।” ছিল পাটের তৈরি নানা জিনিস শেখার সুযোগ। শেখালেন সরকারি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী শর্মিলা হেমব্রম। তিনি বলেন, “সরকারি উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন মেলায় বিনামূল্যে পাটের জিনিসের দোকান দেওয়া যায়। বিক্রিও ভাল।” গান শেখানোর দায়িত্বে ছিলেন শিল্পী চট্টোপাধ্যায়। কর্মশালা শেষে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী প্রীতি কুম্ভকার বলে, “এসব শেখার সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নেই। দিদিমণিরা সেই সুযোগ করে দিলেন।” সপ্তম শ্রেণির পিয়ালি দেওঘরিয়া আবার এ বছর জেলা যুব উৎসবে আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল। আরও ভাল তালিম নিয়ে বড় শিল্পী হওয়ার ইচ্ছে তার। এত দিন সেই সুযোগ না পেলেও এ বার দিদিমণিদের উৎসাহে সে ইচ্ছে পূর্ণ হতে চলেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.