|
|
|
|
ইউনিট চালু, তবু কিনতেই হচ্ছে বিদ্যুৎ
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
একটি ইউনিট চালু হলেও সেটিতে উৎপাদন কম হওয়ায় বিদ্যুৎ কিনেই সরবরাহ করতে হচ্ছে ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডকে (ডিপিএল)। তবে দু’এক দিনের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতা আগের অবস্থায় ফেরানো যাবে বলে আশ্বাস কর্তৃপক্ষের।
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে চালু করা হয়েছে সংস্থার ষষ্ঠ ইউনিটটি। কিন্তু ক্ষমতার থেকে অনেক কম ইউনিট উৎপাদন হচ্ছে সেটিতে। ফলে, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি শূন্যে ঠেকে যাওয়া এই রাজ্য সরকারি সংস্থার উৎপাদনে।
দুর্গাপুর ও লাগোয়া এলাকায় বৃহৎ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের উদ্দেশ্যে ডিপিএল গড়ে ওঠে ১৯৬০ সালে। রক্ষণাবেক্ষণ জনিত কারণে কয়েক দিন ধরে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ষষ্ঠ ও সপ্তম ইউনিট দু’টি বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট দু’টি পরিত্যক্ত। পঞ্চম ইউনিটে উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি। তাই চালু রাখা হয়েছিল তৃতীয় ও চতুর্থ ইউনিট দু’টি। কিন্তু দেখা যায়, পুরনো এই দুই ইউনিটের উৎপাদনে যা খরচ হচ্ছে, বিক্রি করে অর্থ আসছে তার থেকে অনেকটা কম। শেষ পর্যন্ত ৯ ডিসেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষ সে দু’টিও বন্ধ করে দেন। ফলে, উৎপাদন নেমে আসে শূন্যে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এমনিতেই লোকসানে চলা সংস্থার বোঝা যাতে আরও না বাড়ে সে জন্য এই পদক্ষেপ করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে বরং গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ কিনে সরবরাহ করলে লাভ, জানা যায় ডিপিএলের একটি সূত্রে। |
|
দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড। —ফাইল চিত্র। |
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার ও বুধবার ১৮০ মেগাওয়াট হারে, বৃহস্পতিবার ২৩০ মেগাওয়াট এবং শুক্রবার ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিড থেকে কিনেছে ডিপিএল। গ্রিডের মাধ্যমে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ থেকে ডিপিএল বিদ্যুৎ পেয়েছে ইউনিট পিছু গড়ে সাড়ে ৪ টাকারও বেশি দরে। সেখানে গৃহস্থালীর জন্য বিদ্যুৎ বিক্রি করে ঘরে এসেছে ইউনিট পিছু ৪ টাকা ১৯ পয়সা। তবে এই লোকসান কিছুটা পুষিয়ে দিয়েছে ইন্ডিয়ান এনার্জি এক্সচেঞ্জ (আইইই) থেকে নেওয়া বিদ্যুৎ। সেখান থেকে বিদ্যুৎ এসেছে ইউনিট পিছু গড়ে ২ টাকা ৯৪ পয়সা দরে। ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, আইইই থেকে এই ক’দিনে বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে প্রায় ২.২৬ মিলিয়ন ইউনিট। তবে পর্ষদ থেকে বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে তড়িঘড়ি ষষ্ঠ ইউনিটটি চালু করা হয়। কিন্তু ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিটটি বর্তমানে মাত্র ৫৫ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। তা সত্ত্বেও শুক্রবার বিদ্যুৎ কেনার পরিমাণ ছিল বেশ কম। সংস্থার এক আধিকারিক জানান, এর কারণ, এ দিন দু’টি সাব স্টেশন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ‘শাট ডাউন’ রাখা হয়েছিল ঘণ্টা ছয়েক। রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুরের শিল্প কারখানাগুলিতে তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তিনি বলেন, “দৈনিক গড়ে তিনশো মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। যা পরিস্থিতি তাতে ‘র্যাশনিং’ ছাড়া পথ নেই।” দু’এক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তাঁর দাবি। ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ দফতরের শীর্ষ কর্তারা সপ্তাহখানেকের মধ্যে পরিস্থিতি দেখতে দুর্গাপুরে আসবেন।
|
পুরনো খবর: লোকসান বাড়ার জের, শূন্যে ঠেকেছে ডিপিএলের উৎপাদন |
|
|
|
|
|