১৪ আসনের পঞ্চায়েতে কংগ্রেস-সিপিএম উভয় দলই ৭টি করে আসন জিতেছে। কে বোর্ড গঠন করবে, তা স্থির করতে ‘টস’ করে প্রশাসন। টসের ফলে ‘টাই’ ভাঙেনি। প্রধান পদে জিতেছে কংগ্রেস আর সিপিএম পেয়েছে উপ-প্রধান। তার পরই শুরু রাজনৈতিক কাজিয়া। অভিযোগ দু’দলের কাজিয়ায় উন্নয়নের কাজই থমকে গিয়েছে।
বোর্ড গঠনের মাস তিনেক পরেও মালদহের চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের ভাকরি পঞ্চায়েতের এ অবস্থায় উদ্বেগে জেলা প্রশাসনও। চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “পঞ্চায়েতের জন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে বিডিওকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সমস্যা না মিটলে মহকুমা প্রশাসনকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।” বিডিও ইশে তামাঙ্গ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উন্নয়নমূলক কাজ বা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে সভা ডেকে তাতে সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্যদের অনুমোদন জরুরি। তাতেই সমস্যার সূত্রপাত। কংগ্রেসের অভিযোগ, উন্নয়ন নিয়ে প্রধান সভা ডাকলে, সে সভায় বামেরা অনুপস্থিত থাকছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সই ছাড়াই তালিকা পাঠালে প্রশাসনের অনুমোদন মিলছে না। সে কারণেই উন্নয়নের কাজ থমকে রয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। এ কাজের তালিকা ফের বামেদের তরফে পাঠানো হচ্ছে। সেই তালিকায় কংগ্রেসের প্রধানের সই নেই। সে কারণে সে তালিকাও প্রশাসনের অনুমোদন পাচ্ছে না।
গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান শর্বরী সাহা বলেন, “আমরা মিলেমিশে বোর্ড চালাতে চাই। কিন্তু সিপিএম তা চায় না। প্রতিটি সভায় ওঁরা অনুপস্থিত থাকেন।” সিপিএম উপপ্রধান এনামূল হক বলেন, “মিলেমিশে বোর্ড চালাতে হলে তো দু’পক্ষের মতকেই প্রাধান্য দিতে হবে। কংগ্রেস সেটা চায় না।”
এই জটিলতায় পশ্চাৎপদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল তথা বিআরজিএফ-এর সংখ্যালঘু বিধবাদের বাড়ি তৈরির জন্য উপভোক্তাদের তালিকা, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের পরিদর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া থমকে। থমকে রয়েছে বেশ কয়েকটি পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পও। মানিকনগর মোড় থেকে নেহালপুর পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারেজেলা পরিষদের সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করলেও উপপ্রধানের আপত্তিতে কাজ আটকে।
দু’দলের জেলা নেতারা এই জন্য পরস্পরকেই দুষছেন। ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি হবিবুর রহমান বলেছেন, “রাজনৈতিক বিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু সিপিএম উন্নয়ন চায় না বলেই পঞ্চায়েত সদস্যদের সভায় আসতে দিচ্ছে না।” সিপিএমের চাঁচল জোনাল কমিটির সদস্য আজিজুর রহমানের অভিযোগ, “প্রথমে কাজে বাধা দেওয়া হয়নি। দেখা গিয়েছে, প্রতিটি প্রকল্পে অনিয়ম হচ্ছে। তাই ওদের সঙ্গ এড়িয়েই চলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” প্রধান দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে জানান, কাজ চালাতে না দিলে উন্নয়নের টাকা পঞ্চায়েত সমিতিতেই পাঠিয়ে দেবেন। |