বন্ধের মুখে ফলতা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্লাস্টিক দানা তৈরির কারখানা। এর ফলে কাজ হারাতে চলেছেন প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক। তার প্রতিবাদে ফলতা-১ নম্বর সেক্টরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকেরা। নেতৃত্বে ছিল আইএনটিটিইউসি। সংগঠনের অভিযোগ, কেন্দ্রের বৈদেশিক বাণিজ্য নীতির কারণেই বন্ধ হতে বসেছে কারখানাগুলি।
১৯৮৪ সালে গড়ে ওঠে ফলতা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বিশেষ রফতানি এলাকা। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরির পাশাপাশি রয়েছে প্লাস্টিক দানা তৈরির কারখানা। বিদেশ থেকে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক এনে মেশিনে গলিয়ে দানা তৈরি করা হয় এখানে। ওই প্লাস্টিক দানা থেকে তৈরি হয় প্লাস্টিক শিট, তার পর তা থেকে তৈরি হয় ব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্র, যা মূলত এদেশের বাজারে বিক্রি হয়। |
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রক থেকে ঘোষণা করা হয়, প্লাস্টিক কারখানাগুলিতে যে পণ্য তৈরি হচ্ছে তার ৪০ শতাংশ বিদেশে রফতানি করতে হবে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ ও ফলতা ডেভেলপমেন্ট কমিশনের দাবি, উন্নত দেশগুলি এখানকার প্লাস্টিকজাত পণ্য কিনতে আগ্রহী নন। ফলে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। মাস দুয়েক ধরেই এই সমস্যা চলছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে থেকে প্লাস্টিকের কন্টেনার ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন ওই শ্রমিকেরা। এঁদের বেশিরভাগই মহিলা।
ডায়মন্ড হারবারের আবদালপুর গ্রামের রাকেয়া বিবি, নৈনান গ্রামের চুমকি মণ্ডলেরা ওই প্লাস্টিক কারখানাগুলির শ্রমিক। বললেন, “আমরা প্রায় পাঁচ বছর ধরে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করছি। ১৭৯ টাকা রোজ। এই টাকায় যাও বা কোনওরকমে সংসার চালানো যাচ্ছিল, দু’মাস ধরে তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।” খান্দালিয়া গ্রামের জোহরা বিবির অসুস্থ স্বামীকে সারা মাস ওষুধ খেতে হয়। তিন সন্তানের কেউই এখনও পর্যন্ত উপার্জনক্ষম নয়। বললেন, “আমার আয়েই পুরো সংসার চলে। এখন কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে না খেয়েই মরতে হবে।”
এ দিনের বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন ফলতার তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ। তিনি বলেন, “সেক্টর ১-এ পাঁচটি কারখানা বন্ধের মুখে। দিন পনেরো ধরে প্লাস্টিক কন্টেনার ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিই এই জন্য দায়ী।” |