বেলপাহাড়িতেও গ্রামীণ রাস্তার কাজ অথৈ জলে
ক সময়ে দুর্গমতার সুযোগ নিয়ে জঙ্গলমহলে প্রভাব বাড়িয়েছিল মাওবাদীরা। অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করে জঙ্গলমহলে ঘাঁটি গেড়েছিল তারা। রাজ্যে পালাবদলের পরে জঙ্গলমহলে এসে তাই বারে-বারেই নানা উন্নয়নের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জঙ্গলমহলে একাধিক রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনাই সার। গত আড়াই বছরে পিচের একটিও নতুন রাস্তা হয়নি মাওবাদীদের ধাত্রীভূমি বেলপাহাড়িতে। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার টেন্ডারে ঠিকাদারেরা অংশ না নেওয়ায় বেলপাহাড়ি ব্লকে ৭৫০ কিলোমিটার পিচ রাস্তা তৈরির কাজ আপাতত বিশ বাঁও জলে।
শুধু জঙ্গলমহলই নয়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যত্রও প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার গতি অত্যন্ত মন্থর। ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে জেলায় প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় ১,৫১০ কিলোমিটার পিচ রাস্তা তৈরির জন্য ২৮৯টি টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ৮৯টি কাজের (সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো কিমি রাস্তা) ওয়ার্কঅর্ডার হয়েছে। বাকি দু’শোটি টেন্ডারে কেউ অংশগ্রহণই করেনি।
রাস্তা হয়নি, এখন দুর্গম বেলপাহাড়ি। জুজারধরা গ্রামে তোলা ছবি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, কেবলমাত্র বেলপাহাড়ি ব্লকেই ৭৫০ কিলোমিটার পিচ রাস্তা করার প্রস্তাব রয়েছে। বেলপাহাড়ি থেকে ঢাঙিচুয়া-রিমড়াডাঙা-মাকড়ভুলা-জুজারধরা-কাশমাড় হয়ে চাকাডোবা পর্যন্ত ৩৫ কিমি রাস্তা, কাঁকড়াঝোর থেকে সন্দাপাড়ার লোয়াদা পর্যন্ত ৪০ কিমি রাস্তা, ছুরিমারা-তেলিঘানা সাড়ে ৪ কিমি, চাকাডোবা-খন্দরভুলা ৬ কিমি, টংভেদা থেকে উখুলডোবা ২ কিমি, রঘুনাথপুর থেকে জামজুরকি ৫ কিমি, সিঁদুরিয়া থেকে শুশনিজবি ১১ কিমি, ছুরিমারা থেকে কাল্লাডাবর ৩ কিমি, মানিয়ারডি থেকে চিটামাটি আড়াই কিমি, ছুরিমারা-বগডোবা ৪ কিমি রাস্তার মতো ১১৭টি রাস্তার (মোট ৭৫০ কিমি) সমীক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারেরা অংশ না নেওয়ায় এখনও কোনও রাস্তার কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া যায়নি।
ঠিকাদারেরা টেন্ডারে যোগ দিচ্ছেন না কেন?
জঙ্গলমহলে ইতিপূর্বে একাধিক রাস্তার কাজ করেছেন এমন এক ঠিকাদার জানান, ২০০৬-০৭ সালের পুরনো দর অনুযায়ী টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। এ দিকে, গত কয়েক বছরে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়েছে। ক্ষতি স্বীকার করে কেউ তাই কাজ করতে চাইছেন না।
তা হলে উপায়?
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি বলেন, “কেন্দ্রীয় একটি সংস্থাকে দিয়ে রাস্তার কাজ করানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। ঠিকাদারদের মতো লভ্যাংশ তারা চাইবে না। ফলে তুলনায় কম খরচে রাস্তা তৈরি সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে বেলপাহাড়িকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।” বস্তুত, পাহাড়ি এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামগুলির সঙ্গে ব্লক-সদর বেলপাহাড়ির যোগাযোগের রাস্তা তৈরি সত্যিই জরুরি। রাস্তা থাকলে ওই সব এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার যেমন ঘটবে, তেমনই যৌথ বাহিনীর নজরদারিও সহজ হবে। বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বংশীবদন মাহাতো বলেন, “ওই সব পিচ রাস্তা তৈরি হলে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।” বুধবার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি ও জেলা ইঞ্জিনিয়ার আবিরবরণ বসুরায় বেলপাহাড়ির কয়েকটি দুর্গম এলাকায় গিয়ে প্রস্তাবিত কয়েকটি রাস্তা পরিদর্শন করেন। শৈবালবাবু বলেন, “একশো দিনের প্রকল্পে মাটি ও মোরাম রাস্তার কাজ চলছে। কিছু সমস্যার জন্য পিচ রাস্তার কাজ আটকে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে পিচ রাস্তাগুলির কাজ শুরু করা যায়।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.