|
|
|
|
চিরাং |
পুলিশের গুলিতে ফের মৃত্যু দুই ছাত্রের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি
১১ ডিসেম্বর |
জঙ্গি সন্দেহে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল এক ছাত্রের। উত্তেজনা ছড়ায় চিরাংয়ে। দু’দিন আগের ওই ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই ফের নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে আরও দুই ছাত্র ‘খুন’ হওয়ায় তুঙ্গে উঠল জনরোষ। পুলিশ-ফাঁড়ি, থানার জিপ পোড়ালো উন্মত্ত জনতা। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ হল সাধারণ মানুষের।
এই নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রুনিখাটা এলাকার রাইডেংবাড়ি গ্রামে খেত-পাহারার জন্য খড়ের ছাউনি তৈরি করে সেখানেই ঘুমিয়েছিল স্কুলপড়ুয়া প্রাণজিৎ নার্জারি, নিখোদি নার্জারি, জিরি নার্জারি। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ পুলিশ ও সেনার যৌথবাহিনী জঙ্গি ছাউনি সন্দেহে ওই ঘরটি ঘিরে গুলি চালাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় জিরি, প্রাণজিৎ। গুরুতর জখম হয় নিখোদি। যৌথ বাহিনীর দাবি, তিন কিশোরই এনডিএফবি সংবিজিৎ জঙ্গি-বাহিনীর সদস্য। তারাই প্রথমে জওয়ানদের দিকে গুলি চালায়।
চিরাং জেলার এসপি রঞ্জন ভুঁইঞা বলেন, “আমরা নিশ্চিত, নিহত দুই কিশোর সংবিজিৎ গোষ্ঠীর জঙ্গি ছিল। তাদের মৃতদেহের কাছ থেকে একটি একে ৪৭ রাইফেল, ১৫ রাউন্ড কার্তুজ ও একটি গ্রেনেড মিলেছে। জখম নিখোদি সম্ভবত এনডিএফবি-র লিংকম্যান ছিল।” নিহতদের পরিজনরা ওই দাবি উড়িয়ে জানিয়েছে, ওই তিন ছাত্রের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ ছিল না। তিন কিশোরই শালবাড়ির একটি স্কুলের ছাত্র। এনডিএফবি-ও একটি বিবৃতিতে জানায়, হতাহতরা কেউ-ই তাদের সদস্য নয়। দেহগুলির পাশে আগ্নেয়াস্ত্র রেখে গুলির লড়াইয়ের ‘গল্প’ সাজিয়েছে যৌথবাহিনী।
একই কাণ্ড ঘটেছিল ৮ ডিসেম্বর। বিজনির কুমারশালি গ্রামের বাসিন্দা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র বিশ্বজিৎ বসুমাতারিকে জঙ্গি সন্দেহে গুলি করে মারে পুলিশ। নিহতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ রাফাউডি বসুমাতারি দাবি করেন, বিশ্বজিৎ তাঁর কলেজের নিয়মিত ছাত্র ছিল। তার সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ ছিল না। নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্বজিতের পরিবার বিজনি মহকুমা আদালতে এফআইআর দায়ের করেছে। মানবাধিকার কমিশনেরও দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা।
বিশ্বজিতের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিজনিতে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছিল, রুনিখাটার ঘটনার জেরে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়েছে। মৃতদেহগুলি নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে জনতা। রুনিখাটা ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পোড়ানো হয় পুলিশের গাড়ি। পরে যৌথবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। |
|
|
|
|
|