|
|
|
|
অনাস্থা আনতে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন নীতীশ |
স্বপন সরকার • পটনা
১১ ডিসেম্বর |
সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদ কিংবা রাজনৈতিক, তা কোনও একক রাজ্যের নয়, এটা জাতীয় সমস্যা। সেই সমস্যা মোকাবিলার জন্য সম্মিলিত লড়াইয়ের ডাক দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আজ রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দল বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি যদি সব দিকে ব্যর্থ হই তা হলে অনাস্থা প্রস্তাব এনে সরকার ফেলে দিন। আমি তো এর আগে আস্থা প্রস্তাব এনে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছি।” বিজেপি-র লাগাতার আক্রমণের মুখে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন “মনে রাখবেন কারও কৃপায় আমরা ক্ষমতায় আসিনি। রাজ্যের মানুষের সমর্থন নিয়েই কাজ করতে এসেছি। মানুষের সেবা
করে যাচ্ছি।”
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার তাঁর জবাবি ভাষণে বলেন, “এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হলে বিধানসভা বা সংসদে বিভাজন করলে হবে না। সকলে মিলে এই দুই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।” গত দু’দিন ধরে বিরোধীরা বিধানসভা চালাতে দেয়নি। তাদের দাবি ছিল, বিধানসভায় পটনা বিস্ফোরণ এবং মাওবাদী সন্ত্রাসের বিষয়ে আলোচনা করতে দিতে হবে। বিধানসভা সেই অনুমতি দিলে আজ এই বিষয়ে আলোচনা হয়। বিরোধী দল নেতা বিজেপির নন্দ কিশোর যাদব বলেন, “পটনায় নরেন্দ্র মোদীর সভায় যা ঘটেছিল তাতে নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকারের গাফিলতি ছিল। এই ঘটনায় নরেন্দ্র মোদীর ক্ষতি হতে পারত।” বিজেপি আগাগোড়া বলে আসছে নীতীশ কুমার এই দুই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নরম মনোভাব নিয়ে চলছেন। বিস্ফোরণে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে
তাঁদের ক্ষেত্রে নীতীশ কুমার যথাযথ ভূমিকাও পালন করেননি বলে বিজেপি-র অভিযোগ।
ভাষণ দিতে উঠে নীতীশ বিজেপির বিরদ্ধে কটাক্ষ করে বলেন, “অনেক কিছু বলে যাচ্ছে। বলছে, কাউকে মারার জন্য এ সব করা হয়েছে। আরও কী কী বলবে জানি না।” তিনি বলেন, “কেউ বলছে ওই দিনের সভায় না কি আট লক্ষ লোক হয়েছিল। আমার তো মনে হয় ৮০ লক্ষ লোক এসেছিল। যদিও গাঁধী ময়দানে অন্তত ২২ লাখ লোক ধরে। সংবাদমাধ্যমে ছবি আছে। তাতেই দেখা যাবে ময়দানের উত্তর ও দক্ষিণ দিক খালি ছিল।” মুখ্যমন্ত্রী বলার সময় অবশ্য বিজেপি সদস্যরা বিধানসভায় ছিলেন না। তার আগেই তারা ওয়াক আউট করে। নাম না করে নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “অন্য রাজ্যেও তো বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানে উনি কতবার গিয়েছেন? এখানে দেখা করার জন্য তিনি চলে এলেন।” ওই দিনের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানান, “মঞ্চের ৩০০ মিটারের মধ্যে কোনও বিস্ফোরণ ঘটেনি। এই ঘটনার পরে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। সভাও হয়েছে। সকলে বাড়ি ফিরেছেন।” তিনি সে দিন তাঁর সরকারি অনুষ্ঠান বাতিল করে পটনায় যে থেকে গিয়েছিলেন তা জানিয়ে বলেন, “আমার মুঙ্গের যাওয়া স্থগিত করেছিলাম। ওই দিন বিকেলে রাজগিরে সরকারি অনুষ্ঠান ছিল। সেটাও বাতিল করি। কী ঘটেছে মানুষ জানতে চায়। তাই সন্ধ্যা ৬টায় পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়ে সংবাদ মাধ্যমে তা জানাই। এরপর পটনা জংশন এবং গাঁধী ময়দান, দু’টি ঘটনাস্থলেই যাই। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখি। ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার তদারকি করি।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে নীতীশ বলেন, “ঘটনার পর দিন রাজগিরে দলের সম্মলনে না গিয়ে সরকারি কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করি। আমাকে দলের নেতারা বলেছিলেন, পটনার সমস্যা মিটিয়ে তারপর আসুন।” বিজেপির উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, “অথচ ওরা অনর্গল বলে যাচ্ছে। এটা ওদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে।” সংখাগরিষ্ঠতার সুবাদে বিজেপি এখন বিধানসভার প্রধান বিরোধী দল। নীতীশের বক্তব্য, “ওরা তো নকল বিরোধী। মানুষ তো আরজেডিকেই বিরোধী দলের আসনে বসিয়েছে। সরকার থেকে বের করে দেওয়ার পরে প্রধান বিরোধী হয়ে বসে আছে।” |
|
|
|
|
|