সিমেন্ট বোঝাই একটি মাল গাড়ির তিনটি কামরা লাইনচ্যুত হওয়ায় মঙ্গলবার শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর শাখার ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। এর জেরে ৬ জোড়া ইএমইউ লোকাল ও দু’জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়। ৬ জোড়া লোকাল ট্রেনের যাত্রা পথ রানাঘাট পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত করা হয়। ফলে সকাল থেকে চরম হয়রানির শিকার হন যাত্রীরা। পরে অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে সকাল সাতটা থেকে ভায়া শান্তিপুর লাইন দিয়ে দু’জোড়া করে ট্রেন চালান হয়। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে প্রায় বেলা সাড়ে বারোটা বেজে যায়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন “বগি লাইনচ্যুত হওয়ার কারণ এখনও অস্পষ্ট। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই মাল গাড়ির চালককে জিঞ্জাসাবাদ করা হবে।” |
ঘটনাস্থলে লাইনচ্যুত ট্রেন। |
এ দিনের দুর্ঘটনা ঠিক কীভাবে ঘটল? রেল সূত্রের খবর, মাল গাড়িটি আপ লাইন দিয়ে এসে ক্রস ওভার দিয়ে কৃষ্ণনগর স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্মে ঢোকার কথা ছিল। আর তিন নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ৪টা ১৮ মিনিটের ডাউন শিয়ালদহ লোকাল ছাড়ার কথা ছিল। সেই মত ডাউন ট্রেন সিগন্যালও পায়। তারপর আচমকা মালগাড়িটি ঢোকে। এমনটা কেন ঘটল? স্টেশন ম্যানেজার তপন মণ্ডল বলেন, “ডাউন গাড়ি সিগন্যাল পাওয়ার পরও মাল গাড়িটা কীভাবে ঢুকল তা পরিষ্কার নয়। তদন্ত করে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” সিগন্যালের গোলমাল নাকি মালগাড়ির চালকের কোনও ভুলে কামরা লাইনচ্যুত হওয়ার এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন শিয়ালদহ ডিভিশনের রেলের ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা। জরুরী ভিত্তিতে শুরু হয় লাইনচ্যুত কামরাগুলিকে সরানোর কাজ। ৪২ কামরার ওই মালগাড়িটির ৩৩টি বগিকে বাদকুল্লা স্টেশনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। লাইনচ্যুত ৩টি কামরার সামনের ছ’টি বগিকে কৃষ্ণনগর স্টেশনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। |
কলকাতাগামী বাসে ভিড় নিত্যযাত্রীদের। |
দুর্ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যেই এ দিন ভোর থেকেই যাত্রীদের হয়রানি শুরু হয়। ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় বহু মানুষ তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় সরকার বলেন, “শাশুড়ি অসুস্থ। কলকাতায় যাব বলে অফিসে ছুটি নিয়ে বার হয়েছিলাম। কিন্তু ট্রেন বিভ্রাটে আর যাওয়া হল না।” অনেককে আবার দীর্ঘক্ষণ কৃষ্ণনগর স্টেশনে বসে থাকতে হয়েছে। তবে কৃষ্ণনগর স্টেশনের অদূরেই রয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। বহু মানুষই ট্রেনের পরিবর্তে জাতীয় সড়কে বাস ধরে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছেছেন। |