|
|
|
|
চট নিয়েও একসুর তৃণমূল-বাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
প্রথমে সুরে সুর মিলেছিল আধার কার্ড নিয়ে। তার আট দিনের মাথায় ফের এক আধারে এল তৃণমূল-সিপিএম। এ বার চটের ব্যাগের ব্যবহার নিয়ে।
বিধানসভার চলতি অধিবেশন বহু দিন ধরে বয়কট করছে কংগ্রেস। প্রধান বিরোধী পক্ষ বামফ্রন্টও বিভিন্ন বিষয়ে মাঝেমধ্যেই সভা বয়কট করে চলেছে। এর মধ্যেই গত ২ ডিসেম্বর আধার কার্ডের বিরোধিতায় এক আধারে এসেছিল তৃণমূল ও বাম শিবির। রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি পেতে আধার কার্ড লাগবে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিধানসভায় সরকার পক্ষের প্রস্তাব সমর্থন করেন বামেরা।
আট দিন পরে, মঙ্গলবার খাদ্যশস্য ও চিনি ভরতে চটের ব্যাগ ব্যবহারের দাবি জানিয়ে সরকার যে-প্রস্তাব আনে, তাকে সমর্থন জানাল বাম পক্ষ। প্রস্তাবে বলা হয়, খাদ্যশস্য ভরার জন্য চটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে এক সময় আইন করেছিল কেন্দ্র। এখন তারাই সেটা ভাঙছে। আগের দিনের মতো এ দিনও কংগ্রেস সভায় ছিল না। বাম-তৃণমূল মিলে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হল। আজ, বুধবার প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকে পাঠানো হবে।
রাজ্যের অভিযোগ, ২৮ নভেম্বর বস্ত্র মন্ত্রকের দাবি মেনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অধীন আর্থিক বিষয়ক কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, খাদ্যশস্যে ১০ এবং চিনির ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ চটের ব্যাগ ব্যবহার কমানো হচ্ছে। স্বভাবতই পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্পে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এর বিরুদ্ধেই এ দিন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আনা প্রস্তাব সমর্থন করেন বামেরা। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী, ফরওয়ার্ড ব্লকের পরেশ অধিকারী; আরএসপি-র ঈদ মহম্মদ; প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী, সিপিএমের আনিসুর রহমান এবং সিপিআইয়ের আনন্দময় মণ্ডলেরা বলেন, বাম আমলে এই নিয়ে বারবার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সারা বিশ্বে যখন খাদ্যশস্যে কৃত্রিম তন্তুর ব্যবহার বন্ধ করে পাটের ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে, তখন ভারত তার উল্টো পথে চলছে। পরেশবাবুর পরামর্শ, “সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল দিল্লিতে ধর্না দিলে কাজ হতে পারে।”
প্রস্তাব সমর্থন করেও এসইউসি-র বিধায়ক তরুণ নস্কর প্রশ্ন তোলেন, “এত দিন এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় আইন মানা হয়নি কেন?” মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ রাজ্যে সব চেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা আসে পাটের ব্যবসা থেকে। তবু এটিকে শিল্পের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, শ্রম দফতরের সঙ্গে রেখে দেওয়া হয়েছে।” শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “পাটশিল্পকে শুধুই অবহেলা, অবজ্ঞা করে এসেছিল বাম সরকার।”
শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবু জানান, পাটচাষ হয় ১৫টি জেলায়। পাটচাষির সংখ্যা ৪০ লক্ষ। রাজ্যে ৫৪টি চটকলে চার লক্ষ শ্রমিক কাজ করেন। রাজ্যের অর্থনীতিতে পাটশিল্পের মূল্য বিরাট। রাজ্যের শিল্পবিরোধী সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হল, ৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মাকে চিঠি লিখে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। |
|
|
 |
|
|