|
|
|
|
পদে পদে অনিয়ম, মানছেন গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
জিন গবেষণার জন্য মাত্র বছর চারেক আগে কল্যাণীতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিক্যাল জেনোমিক্স গড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এর মধ্যেই সেখানে হাজারো অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনেক অভিযোগই যে সত্য, মেনে নিয়েছেন ওই গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা।
অভিযোগ, বিমানের টিকিট কাটা বা বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মানা হয়নি। অভিযোগ, যন্ত্র কেনা বা সংস্কারের কাজে দরপত্র ডাকা হয়নি। অভিযোগ, উচ্চপদস্থ কোনও কোনও আধিকারিককে বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হয়নি। এই সব অনিয়মের ব্যাপারে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের জৈবপ্রযুক্তি বিভাগকে। জবাব চাওয়া হয়েছে ওই গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তার কাছে।
নানা ধরনের অভিযোগের সত্যতা মেনে নিয়েছেন গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা পার্থপ্রতিম মজুমদার। তিনি বলেন, “আমি গবেষক। এত সব নিয়মকানুন জানতাম না। গবেষণা কেন্দ্রটিও নতুন। আমি দায়িত্ব নিয়েছি তিন বছর আগে। কোথায় কোথায় আমার তরফে ভুল হয়েছে, সিএজি-র রিপোর্ট পাওয়ার পরে দিল্লি গিয়ে তা লিখিত ভাবে জানিয়ে এসেছি।”
সিএজি-র রিপোর্ট বলছে, ২০০৯ সালের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী এই ধরনের গবেষণা কেন্দ্রের আধিকারিকদের দেশের ভিতরে বা বিদেশে কোথাও যেতে হলে সরকারি সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানেই যেতে হবে।
কোনও শহরে যাওয়ার জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান না-থাকলে নিকটবর্তী শহর পর্যন্ত ওই সংস্থার উড়ানে গিয়ে পরে বেসরকারি সংস্থার বিমানে গন্তব্যে যাওয়া যেতে পারে। এয়ার ইন্ডিয়ার টিকিট না-পেলে বা তাদের উড়ান বাতিল হলে বেসরকারি বিমানে যাওয়া যাবে। তবে তার জন্য বিমান মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হবে।
গত তিন বছরে কল্যাণীর ওই গবেষণা কেন্দ্রের আধিকারিকেরা ৩১ বার বেসরকারি বিমানে যাতায়াত করেছেন। কোনও বারেই বিমান মন্ত্রকের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এমনকী অনুমতি চেয়ে চিঠিও দেওয়া হয়নি। বিদেশযাত্রায় নিয়ম না-মানার মতোই অভিযোগ উঠেছে দরপত্র না-চেয়ে কাজ করানোর। অতিরিক্ত বেতন দেওয়ার অভিযোগও আছে। পার্থবাবু বলেন, “এত নিয়ম আমার পক্ষে আগে থেকে জানা কি সম্ভব?”
গবেষণা কেন্দ্রে এই সব অনিয়মের অভিযোগ প্রথম তোলেন অরূপরতন মুখোপাধ্যায়। তিনি ২০১১ সালের মে মাসে ওই কেন্দ্রের প্রশাসনিক কাজে নিযুক্ত হন। তাঁর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম দেখে তিনি সতর্ক করেন পার্থবাবুকে। কিন্তু পার্থবাবু তাঁর কথায় কান দেননি। এই নিয়ে পার্থবাবুর সঙ্গে বিরোধের জেরে ২০১২-র জুনে অরূপবাবু চাকরি ছেড়ে দেন। সিএজি ছাড়াও ওই দফতরের মুখ্য ভিজিল্যান্স অফিসারকে চিঠি দিয়ে অনিয়মের কথা জানান তিনি। সেই ভিজিল্যান্স অফিসার বীণা টামটা ভাটিয়া দিল্লি থেকে ফোনে বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্তের কাজ শেষ হতে আরও কিছু সময় লাগবে।” |
|
|
|
|
|