শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন ও পেনশনে আশ্বাস দিল কেন্দ্র
মূল্যবৃদ্ধি থেকে আমজনতাকে সুরাহা দিতে সরকারি-বেসরকারি সমস্ত সংস্থার শ্রমিক ও কর্মচারীদের ন্যূনতম মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন ও এক হাজার টাকা পেনশনের দাবি মেনে নেওয়ার কথা ভাবছে মনমোহন সরকার। শ্রম মন্ত্রকের সচিব ও অর্থসচিবকে এ বিষয়ে আলোচনা করে নোট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পিছনে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভকেই অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব। মূল্যবৃদ্ধির বোঝা থেকে সুরাহা পেতেই শ্রমিক সংগঠনগুলি দাবি তুলেছিল, ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের ব্যবস্থা করা হোক এবং কর্মচারীদের পেনশন প্রকল্প থেকে অন্তত মাসিক এক হাজার টাকা পেনশন দেওয়া হোক। অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের নেতৃত্বে মন্ত্রিগোষ্ঠী গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই দাবি মেনে নেওয়া প্রয়োজন। আজ শ্রম মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কে সুরেশ এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশগুপ্তকে জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
আগামী বৃহস্পতিবারই অবশ্য ন্যূনতম বেতন, পেনশনের দাবি এবং বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সংসদ অভিযান করছে দেশের সব ক’টি শ্রমিক সংগঠন। তার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবেন নেতারা। বস্তুত, দ্বিতীয় ইউপিএ-সরকারের জমানায় শ্রমিক সংগঠনগুলি বহু বার রাস্তায় নেমে আন্দোলন, দু’দিনের ধর্মঘট, সংসদ অভিযান করলেও প্রধানমন্ত্রী কোনও বারই আন্দোলনের দিন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি নিতে চাননি। কিন্তু আজ গুরুদাসবাবু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে তাঁকে অনুরোধ করলে প্রধানমন্ত্রীও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি নিতে রাজি হয়ে যান। অন্য সংগঠনগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-ও সংসদ অভিযানে অংশ নিচ্ছে। সংগঠনের সভাপতি তথা কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য জি সঞ্জীবা রেড্ডি-ও বাম-বিজেপি শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে যাবেন।
ঘটনাপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও শ্রম মন্ত্রক এর সঙ্গে চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে হারের কোনও সম্পর্ক রয়েছে বলে মানতে রাজি নয়। মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, গত মে মাসে জাতীয় শ্রমিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নিজেই জানিয়েছিলেন যে, ন্যূনতম বেতন, পেনশন, সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা তহবিলের মতো দাবিগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন করার কথাও তখন জানিয়েছিলেন তিনি। তবে শ্রমিক নেতাদের দাবি, ট্রেড ইউনিয়নগুলির দু’দিনের ধর্মঘটের পরেই চাপের মুখে মনমোহন-সরকারকে মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন করতে হয়েছিল। গুরুদাসবাবু জানান, সরকার শেষ পর্যন্ত তাঁদের দাবি মেনে নিলে তা হবে বিরাট জয়।
তবে সরকার জানে, এই সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত কার্যকর করা হলে কর্পোরেট সংস্থাগুলি তার বিরোধিতা করতে পারে। কারণ, কেন্দ্র বেতন ও পেনশনের কোনও মাপকাঠি নির্দিষ্ট করে দিলে তাদের উপরেই আর্থিক চাপ বাড়তে পারে। লোকসভা ভোটের মুখে এমনিতেই বেসামাল ইউপিএ সরকার শ্রমিক ও কর্পোরেট মহলের দ্বিমুখী চাপ কী ভাবে সামাল দেয়, সেটাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.