ট্রামের জমি লিজ নেওয়ায় অনীহা
ট্রাম ডিপোর উদ্বৃত্ত জমি বেসরকারি হাতে ছেড়ে পরিবহণ নিগমগুলির হাল ফেরানোর পরিকল্পনা ছিল রাজ্যের। কিন্তু প্রথম ধাপেই সেই প্রচেষ্টা কিছুটা ধাক্কা খেল। সিটিসি-র ৬টি ডিপোর মোট ৩৭৩ কাঠা জমি লিজ-চুক্তি দেওয়ার জন্য ইচ্ছাপত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল রাজ্য। মঙ্গলবার নির্ধারিত সময় পেরোনোর পরে দেখা গেল, শুধু ৩টি ডিপোর ক্ষেত্রে সর্বাধিক ৪টি সংস্থা আবেদন করেছে।
সিটিসি, সিএসটিসি, ডব্লিউবিএসটিসি এবং এসবিএসটিসি-র মোট ২৯টি ডিপোর প্রায় ৯০০ কাঠা উদ্বৃত্ত জমি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। প্রথম ধাপে সিটিসি-র যে ৬টি ডিপোর জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজের ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলি টালিগঞ্জ (২৪১ কাঠা), কালীঘাট (১২ কাঠা), বেলগাছিয়া (৫২ কাঠা), শ্যামবাজার (৩১ কাঠা), গ্যালিফ স্ট্রিট (১৫ কাঠা) ও খিদিরপুর (২২ কাঠা)। শ্যামবাজার ডিপোর জন্য কেউই আবেদন করেনি। বেলগাছিয়া ও টালিগঞ্জের জন্য যথাক্রমে ১টি ও ২টি সংস্থা, গ্যালিফ স্ট্রিট ও কালীঘাট ডিপোর জন্য ৪টি ও খিদিরপুর ডিপোর জন্য ৩টি সংস্থা আবেদন জানিয়েছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, এ সব ক্ষেত্রে অন্তত তিনটি সংস্থার আবেদন লাগে, নয়তো ইচ্ছাপত্র বাতিল হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে তাই হবে, নাকি যারা আবেদন জানিয়েছে, তাদেরকেই লিজ দেওয়া হবে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। রাজ্যের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইন এবং অর্থ দফতরের সঙ্গেও আলোচনা করতে হবে।”
প্রথম ধাপে যে ছ’টি জমি বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, তার সবক’টিই একেবারে কলকাতার উপরে। তবুও কেন সাড়া মিলল না, তার পক্ষে যুক্তি দিয়ে পরিবহণ দফতরের কর্তারা বলছেন, শ্যামবাজার ডিপোকে ইতিমধ্যেই ‘হেরিটেজ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির অনিচ্ছার পিছনে সেটাও একটা কারণ হতে পারে। তবে ‘হেরিটেজ’ হলেও কী করে তা ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ কমিটির কাছে আবেদন জানাবে পরিবহণ দফতর। তেমন হলে ওই এলাকায় ‘হেরিটেজ’ ফলক লাগিয়ে তা বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। বাকি ডিপোগুলির ক্ষেত্রে বিশ্ব বাজারের মন্দা এবং রাজ্যে লগ্নি টানার ক্ষেত্রেও মন্দা বাণিজ্যিক মহলের অনীহার প্রধান কারণ হতে পারে। এ ছাড়া, জমি লিজ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার যে সব শর্ত দিয়েছে, বাণিজ্যিক মহল সেগুলির আরও সরলীকরণ চাইছে বলে মনে করছেন সরকারি কর্তারা। এক কর্তার কথায়, “লিজের ভিত্তিতে যারা জমি নেবে, তাদের কাছ থেকে এক মাসে ৯৫ শতাংশ অর্থ চাইছে রাজ্য। কেউই তাতে রাজি নয়। এ রকম বেশ কিছু শর্ত আরও শিথিল হোক, এমনই চায় বাণিজ্য মহল।”
উদ্বৃত্ত জমির বেশি দাম পেতে ইতিমধ্যেই লিজ-চুক্তির শর্ত অনেকটা শিথিল করেছে রাজ্য। যেমন, শহরাঞ্চলে জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন অনুযায়ী সাড়ে সাত কাঠার বেশি ফাঁকা জমি রাখার অনুমতি নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার অনুমোদন দেবে সরকার। ৯৯ বছরের দীর্ঘমেয়াদি লিজে উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী, জমির মালিক অন্য কাউকে জমি ‘সাব-লিজ’ (হস্তান্তর) দিতে পারবে। প্রথম ধাপে সিটিসি-র ছ’টি ডিপোতে ইতিমধ্যেই ‘সিলিং’-এর বেশি জমি রাখার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভার সাব কমিটি।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.