উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের পরে এ বার হুগলির আরামবাগ পুরসভার ক্ষমতাও সম্ভবত বামেদের হাত থেকে নিয়ে নিতে চলেছে তৃণমূল।
আজ, সোমবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে আরামবাগ পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান দীপক সরকার-সহ পাঁচ বাম কাউন্সিলরের নতুন দলে যোগ দেওয়ার কথা। তা হলে আরামবাগ পুরসভায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে বামফ্রন্ট। ওই পাঁচ জন রবিবার কলকাতায় এসে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করে লিখিত ভাবে ওই দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মুকুলবাবু জানান, সোমবার আরামবাগ পুরসভা ও জলপাইগুড়ির কিছু কাউন্সিলর তাঁদের দলে যোগ দেবেন। দীপকবাবু মার্ক্সবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্য। অন্য চার জন সিপিএমের। দীপকবাবুর দাবি, “এখানে ক্ষমতায় থাকলেও রাজ্যে আমরা বিরোধী। ফলে, কোনও কাজ করা যাচ্ছিল না। স্রোতের বিপরীতে হাঁটা যাচ্ছিল না। আরামবাগের উন্নয়নের জন্যই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি।” প্রায় একই বক্তব্য বাকি চার জনের।
২০১০ সালের পুরভোটে হুগলির ১৩টি পুরসভার মধ্যে আরামবাগেই ক্ষমতা ধরে রেখেছিল বামফ্রন্ট। ১৮ আসনের ওই পুরসভায় বামেরা পায় ১২টি ও তৃণমূল ৬টি আসন। সম্প্রতি এক সিপিএম কাউন্সিলরও পদত্যাগ করেন। সোমবার পাঁচ বাম কাউন্সিলর দলত্যাগ করলে তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা ৬ থেকে বেড়ে হবে ১১। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় বোর্ডের দখলও তাদের হাতে আসবে। বর্তমান পুরপ্রধান, সিপিএমের গোপাল কচ বলেন, “ওই কাউন্সিলররা দলত্যাগ করছেন বলে খবর পেয়েছি। পুরবোর্ডে দল সংখ্যালঘু পড়লে আমাকেও পদত্যাগ করতে হবে।”
দলীয় কাউন্সিলরদের এই পদত্যাগের পিছনে পুলিশের জোর-জবরদস্তির অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী। জানালেন, “আরামবাগের আইসি সুকোমল দাস আমাদের পাঁচ কাউন্সিলরকে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করলেন। এ দিন ৫ জনকে থানায় তুলে এনে প্রায় তিন ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। সাদা কাগজে দলত্যাগের কথা তাঁদের দিয়ে লেখানো হয়।” পুলিশ সুপারকে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে সুদর্শনবাবুর অভিযোগ। এসপি সুনীল চৌধুরী বলেন, “কোনও অভিযোগ আসেনি। কে কোন দলে যোগ দেবেন, তাতে পুলিশের কোনও ভূমিকা নেই।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সুকোমলবাবুও। |