শীতের বলিউডে প্রিয়ার
প্রিয়া অঞ্জলি রাই।
প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের কাছে তাঁর নামটা বেশ পরিচিত। সানি লিওনের অ্যাডাল্ট ছবি যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অনেকেই প্রিয়া অঞ্জলি রাইয়ের সিনেমাও দেখেছেন।
প্রিয়ার জন্ম নয়াদিল্লিতে। যখন তাঁর বয়স দু’বছর, তাঁকে এক মার্কিন দম্পতি দত্তক নিয়ে চলে যান বিদেশে।
সামনের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সেই প্রিয়া ফিরছেন ভারতে।
অভিনয় করবেন বলিউডের প্রথম ফোর-ডি হরর সিনেমাতে। সিনেমার নাম ‘বিয়ন্ড দ্য ট্রুথ: এক আনছুঁয়া সচ’। পরিচালক অশোকান পি কে।
ছবির বিষয় অবশ্য যৌনতাকেন্দ্রিক নয়। বলছেন অশোকান, “আমার সিনেমার গল্প শিশুবলি নিয়ে। আমাদের দেশে আজও অনেক জায়গায় অশিক্ষার কারণে শিশুদের বলি দেওয়া হয়। মনে নেই ডা. নরেন্দ্র দাভোলকরের ঘটনা? দু’দশকের ওপর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কাজ করে গিয়েছেন। সেই মানুষকেই একদিন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে দু’জন গুলি করে হত্যা করে।”
প্রিয়ার ফিল্মটা অবশ্য দাভোলকরকে নিয়ে নয়। কিন্তু শিশুবলির প্রথাকে ঘিরেই একটা গল্প লেখা হয়েছে। “ছবিটার বিষয়টা বাংলায় খুব প্রযোজ্য। ‘গুণ্ডে’ বাংলায় ডাব হবে শুনেছি। আমার ছবিটা হিন্দিতে শ্যুট করব। কিন্তু তা বাংলায়ও ডাব করব ভাবছি,” বলছেন পরিচালক।
তা এই রকম গল্পে প্রিয়ার মতো অভিনেত্রীকে কেন বেছে নিলেন অশোকান? ৩২ বছর আগে প্রিয়া ভারত ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। আর এ দেশে ফিরে আসেননি। “প্রিয়ার অভিনীত ‘আইসিস রাইজিং: কার্স অব দ্য লেডি মমি’ দেখেছিলাম। সেটি ছিল প্রিয়ার প্রথম নন-অ্যাডাল্ট সিনেমা। ওকে ওই ফিল্মে দেখে বেশ ভাল লেগেছিল,” জানান পরিচালক।
যখন এই ফিল্মটির পরিকল্পনা শুরু করেন, তখন অশোকানের কথা হয় আমেরিকার পরিচালক শেন রায়েন-র সঙ্গে। উনি সানি লিওনের সঙ্গে একটি সিনেমা করেছিলেন আমেরিকাতে। সানির কাজ যে এজেন্সি দেখভাল করত, তারা আবার প্রিয়ারও কাজ দেখত। তারাই অশোকানকে প্রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন।
ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা হয়। ঠিক হয় এমন একটা সিনেমা বানাবেন, যার আদলটা বলিউড ঘরানার হলেও ট্রিটমেন্টটা হবে হলিউড ছবির। ‘ডন থ্রি’ থেকে শুরু করে ‘হ্যারি পটার’ প্রত্যেকটি সিনেমা ভারতীয় দর্শক থ্রি-ডি-তে দেখেছেন। কিন্তু ফোর-ডি সিনেমা দেখার অভ্যেস এ দেশে সে রকম নেই। তাই পরিচালকের ধারণা তাঁর সিনেমার চমকটা শুধুমাত্র প্রিয়া নন, বরং ফোর-ডি টেকনোলজির মায়াজাল। থ্রি-ডি থিয়েটারের জন্য থাকছে থ্রি-ডি ফরম্যাটের ছবি। ফোর-ডি থিয়েটারের জন্য থাকবে ফোর-ডি ফরম্যাট। নব্বই মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবিতে থাকবে চারটে গান।
ছবির শ্যুটিং টেকনোলজি সম্পর্কে পরিচালক জানাচ্ছেন, “আমরা বিশেষ ক্যামেরা ব্যবহার করছি। থ্রি-ডি স্টিরিয়োগ্রাফির জন্য থাকছে মেশিন ভিশন ক্যামেরা। সেই ক্যামেরার রেজোলিউশন থ্রি-কে থেকে ফোর-কে পর্যন্ত থাকে আর ফ্রেম রেটটা বেড়ে দাঁড়াবে ৩৪০ ফ্রেমস প্রতি সেকেন্ডে।”
ফোর-ডি টেকনোলজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিচালক জানাচ্ছেন যে বিভিন্ন ধরনের স্পেশাল এফেক্টস, যেমন বৃষ্টি পড়া থেকে ভাইব্রেশন তৈরি ইত্যাদি করা হবে। ফোর-ডি থিয়েটারে ঝড়ঝাপ্টার দৃশ্য দেখাতে গেলে হলের সিটগুলো দু’তিন ইঞ্চি সরে গিয়ে ভাইব্রেট করবে। হলে বসে সিনেমা দেখতে দেখতে আশ্চর্য হবেন না যদি দেখেন নিজের জামাটা রক্তে ভিজে গেল। জঙ্গলের মধ্যে চিতাবাঘ তাড়া করলে মনে হবে সিটের ফাঁক দিয়ে সে যেন আপনার দিকে ধেয়ে আসছে। সাইক্লোন দেখালে মনে হবে যে সিটে বসে আছেন, সেটাও বোধহয় সত্যি সত্যিই বিভিন্ন দিকে দুলছে। এয়ার জেট, জলের স্প্রে, পা আর পিঠে সুড়সুড়ি দেওয়ার জন্য ‘টিকলার্স’ও থাকছে। এ ছাড়াও ‘হল এফেক্টস’ হিসেবে থাকবে ধোঁয়া, বজ্র-বিদ্যুত্‌ আর এয়ার বাবলস্‌।
তবে আপাতত ভারতে তো খুব বেশি ফোর-ডি থিয়েটার নেই। তা হলে কী ভাবে দর্শক এ সব উপভোগ করতে পারবেন? “আমি আশা করছি আগামী বছর মে মাস নাগাদ এ দেশে প্রায় ২০-টা ফুল লেনথ ফোর-ডি থিয়েটার তৈরি হবে,” বলছেন পরিচালক।
এ দিকে প্রিয়া অবশ্য টুইটারে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে তিনি ভারতে আসার ব্যাপারে আগ্রহী। পরবর্তী টুইটে অবশ্য নিজের অন্তর্বাসও অকশন করছেন। প্রথমে সানি, তার পর প্রিয়া। শীতকালেও বলিউডে উষ্ণতার অভাব নেই বললেই চলে। “ছবিটা গরমকালে শ্যুট করব ভেবেছিলাম। বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে এখন ফেব্রুয়ারিতে শ্যুটিং হবে বলে ঠিক হয়েছে। আমি জানি, প্রিয়াকে নিয়ে কাজ করতে গেলে বিতর্ক /সমালোচনা হতে পারে। তবে ভয় পাই না। গোয়া, মুন্নার আর তামিলনাড়ুর এমন জায়গায় শ্যুটিং করব, যেখানে নিরাপত্তার অসুবিধা হবে না। ‘A’ ট্যাগ তো থাকবেই। কিন্তু এটা শরীরসর্বস্ব উপাখ্যান নয়,” বলেন পরিচালক।
এখন দেখার বিষয় হল, নরবলির মতো শিহরন জাগানো বিষয় আর ফোর-ডি ছবির মিশ্রণ কী ভাবে স্পর্শ করে গল্পের না-ছোঁয়া সত্যকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.