পালং শাক, বিন, টম্যাটো চলবে না। বাঁধাকপি, বাদাম, ফুলকপি, ডিম খাদ্য তালিকা থেকে বাদ তা-ও। আর্থারাইটিসের রোগীদের জন্য চিকিৎসকদের এমন বিধান যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তবে এই ধারণা একেবারেই ভুল বলে মনে করেন এখনকার বাত-বিশেষজ্ঞ বা রিউমাটোলজিস্টরা।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের নিদান অনুযায়ী, অস্টিওআর্থারাইটিসের রোগীদের এই ‘অনেক কিছু’ খেতে বারণ করাটা একটা বস্তাপচা ধারণা। একাধিক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই রোগীরা প্রায় সব কিছুই খেতে পারবেন। কলকাতায় রিউমাটোলজিস্টদের চার দিনের এক আন্তর্জাতিক সন্মেলন ‘ইরাকন ২০১৩’-তেও এই বিষয়ে একমত হয়েছেন আর্থারাইটিস বিশেষজ্ঞরা।
‘ইন্ডিয়ান অর্থারাইটিস অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি অলকেন্দু ঘোষের কথায়, “আমরা অনেকদিন থেকেই ওই পুরনো ধারণা বাতিল করেছি। আর্থারাইটিসের রোগীরা এসে যখনই জানতে চান কী কী খেতে পারবেন, আমরা বলি সব খাবেন। তবে পরিমিত মাত্রায়। বিন, টম্যাটো, বাঁধাকপি, ডিম, বাদাম, পালং শাক সব।” তা হলে কি কিছুই খাওয়া বারণ নয়? রিউমাটোলজিস্ট অভ্রজিৎ রায়ের কথায়, “শুধু পাঁঠা বা খাসির মাংস, সামুদ্রিক মাছ এবং অ্যালকোহল একেবারে বাদ দিতে হবে। আর শরীরে ঠাণ্ডা যত কম লাগানো যায়, তত ভাল।” অলকেন্দুবাবু বলেন, “এটা এখন প্রমাণিত সত্য যে, সব রকম শাকসব্জি খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিলে আর্থারাইটিস রোগীদের হিতে বিপরীত হতে পারে। পুষ্টির অভাবে শরীরে সমস্যা বাড়ে। তাই এখন প্রায় সব সব্জি খেতে বলা হয়।” চিকিৎসকেরা জানান, আর্থারাইটিস মূলত চার ধরনের হয়। রিউমাটয়েড অর্থারাইটিস, গাউট বা গেঁটে বাত, কোমরে স্পন্ডিলাইটিস এবং অস্টিও আর্থারাইটিস। চিকিৎসক সত্যব্রত গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস শুরু হয় হাত থেকে। এটা অপেক্ষাকৃত অল্পবয়সী মেয়েদের বেশি হয়। গেঁটে বাত শুরু হয় পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে। এটা বেশি হয় ছেলেদের। আবার অস্টিও আর্থারাইটিসে বেশি ভোগেন বয়স্ক মহিলারা। চিকিৎসক অরূপ কুণ্ডুর কথায়, “বাত হলে মাটিতে বসে রান্না-খাওয়া, পিঁড়ি বা আসনে বসে পুজো করা একেবারে বন্ধ করা উচিত।” |