|
|
|
|
|
এতক্ষণে নিশ্চয়ই পূজারারা ‘এসওএস’ পেয়ে গিয়েছে
রবি শাস্ত্রী |
|
ডারবানের দিকে আমরা মুখিয়ে আছি। আমি নিশ্চিত ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রেও কথাটা খাটে। বুলরিংয়ের ম্যাচের পর ওদের কাছে দুটো বিকল্প। এক, নিজের ভয়ে নিজেদের ডুবিয়ে ফেলো। দুই, ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে সাহসের আগুন জ্বালাও।
একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে। এই পর্যায়ের ক্রিকেটে, বিশেষ করে এ রকম পরিবেশে টেকনিকের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক গঠন। স্টিভ ওয় তো গোটা কেরিয়ারে শর্ট বলের বিরুদ্ধে সঠিক টেকনিক দেখায়নি। চন্দ্রপলকে কোনও কোচ তাঁর অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করবেন না। কিন্তু রক্ত দেখে অনেকেই পিছিয়ে যায় না, বরং আরও তেতে ওঠে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের এখন এটাই করে দেখাতে হবে।
হ্যাঁ, ওয়ান্ডারার্সের ছবিগুলো খুব তাড়াতাড়ি মুছে যাবে না। মনে হচ্ছিল যেন কিছু বিপজ্জনক রাক্ষসের বন্দুক থেকে ভয়াবহ গোলাগুলি চলছে। ব্যাটসম্যানদের হাবভাব, ব্যাট চালানো দেখে মনে হচ্ছিল ওরা যেন একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে। স্টেইন অ্যান্ড কোম্পানি ওদের দিয়ে যা করাতে চাইছিল, ঠিক সেই জিনিসগুলোই করে যাচ্ছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। যেন ওরা স্টেইনদের হাতের পুতুল।
রক্তপাতের উদ্দেশ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। না হলে কি ছ’জন পেসার থাকত ওদের টিমে? ওয়ান্ডারার্সের তুলনাতেও এই পিচটায় বেশি মুভমেন্ট ছিল। স্টেইন তো প্রায় নাকের পাটা ফুলিয়ে বল নিয়ে তেড়ে আসছিল। মর্কেল বাড়তি গতির খোঁজে নিজের ফলো-থ্রুতে পিচে ঢুকে পড়ছিল। ভারতীয় ব্যাটসম্যান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার যুদ্ধটা এক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করে দিতে চাইছিল ওরা।
গোটা ভারতীয় ড্রেসিংরুমটাকেই যেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে ফেলেছিল স্টেইন এবং ওর সাঙ্গপাঙ্গ। যুবরাজ সিংহ তো ঘোরের মধ্যে ক্রিজে এল, আবার ফিরেও গেল। সুরেশ রায়না এসেই প্রথম কাজটা কী করল? না, নিজের পার্টনারকে রান আউট করার ঝুঁকি নিয়েও নন-স্ট্রাইকার প্রান্তের দিকে দৌড় লাগাল। মনে হয় অম্বাতি রায়ডু, অজিঙ্ক রাহানে, এমনকী চেতেশ্বর পূজারার কাছেও ‘এসওএস’ সিগন্যাল চলে গিয়েছে।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে এখন ক্রিকেটের পিচটা যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। বিরাট কোহলির মধ্যে কিছুটা আশার আলো দেখলাম। ও যেটা করছে, বাকিদেরও এখন সেটাই করতে হবে। আক্রমণটা ভারতীয়দেরই শুরু করতে হবে। আর শট বাছাই খুব, খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই যেটা করতে হবে সেটা হল বাউন্সের মোকাবিলা। যেটা না পারলে দুঃখ আছে।
ডারবান আর বুলরিংয়ের উইকেট প্রায় একই রকম হবে। তবে ওখানে বাউন্স একটু কম থাকবে, আর সুইং বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু ভারতের কাজটা মোটেও সহজ করবে না। ভার্নন ফিলান্ডার তো যুদ্ধে নামার জন্য ছটফট করছে। তবে শুধু ব্যাটসম্যান নয়, বোলারদেরও কিন্তু নিজেদের গুছিয়ে নিতে হবে। ওদের চেষ্টা করতে হবে যাতে সব ক’টা বলই পিচ করাতে পারে। হয়তো ইশান্ত শর্মা বা উমেশ যাদবকে একটা সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। একজন স্পিনারের জায়গায় একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলালে ভালই হবে। |
|
|
|
|
|