ভোরবেলায় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে দিনভর পাশাপাশি দু’টি গ্রামে তাণ্ডব চালাল একটি দাঁতাল হাতি। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেটিকে জঙ্গলে ফেরানো যায়নি। বন দফতর জানিয়েছে, রাতেই সেটিকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে।
শুক্রবার ভোরে দলগাঁও জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে দিনভর ফালাকাটা ব্লকের ধুলাগাঁও এবং দেওগাঁ গ্রামে দাপায় দাঁতালটি। দুপুরের পরে গ্রামেরই কলাবাগানে লুকিয়ে পড়ে হাতিটি। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেটি সেখানেই ছিল। সারাদিনই গ্রামের বাসিন্দারা দাঁতালের গতিবিধিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। হাতিটির তাণ্ডবে দু’টি গ্রামের অন্তত পাঁচটি বাড়ি তছনছ এবং কয়েক বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। সকাল থেকে বনকর্মীরা দাঁতালের পেছনে দৌড়ে বেড়ালেও লোকালয় থেকে তাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারেননি বলে বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, কোনও ব্যক্তিকে আক্রমণ না করলেও একবার একটি গরুর পিছনে তেড়ে গিয়েছিল দাঁতালটি। কোচবিহারের ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে দলের সঙ্গে দাঁতালটি গ্রামে ঢোকে। সকালে দলটি ফিরে গেলেও দাঁতালটি গ্রামে আটকে পড়ে গিয়েছে। রাতের মধ্যেই সেটিকে জঙ্গলে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” |
তখন দেওগাঁও গ্রামে। শুক্রবার ফালাকাটায় রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি। |
এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ধুলাগাঁও-এর এক জন বাসিন্দা মাঠে প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়ে প্রথম দাঁতালটিকে দেখতে পান। গ্রামে হাতি ঢোকার খবর ছড়িয়ে পড়ায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বাসিন্দাদের মধ্যে। চারপাশে ভিড় দেখে হাতিটি ছুটোছুটি করতে শুরু করে বলে বন কর্মীরা জানিয়েছেন। দাঁতালের পায়ের তলায় পড়ে কয়েক বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। কখনও শুঁড়ে পেঁচিয়ে ছোট গাছ-ও উপড়ে ফেলতে দেখা যায় বুনোটিকে। পাশাপাশি ওই দু’টি গ্রামের বাসিন্দারা পটকা ফাটিয়ে, ক্যানেস্তারা পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করলেও, দাঁতালটি জঙ্গলমুখো হয়নি।
সকাল ৯টা নাগাদ মুজনাই নদী পেরিয়ে দাঁতালটি ধুলাগাঁওয়ের পাশের গ্রাম দেওগাঁতে ঢুকে পড়ে। গ্রাম থেকে হাতি তাড়াতে লোকজন ক্যানেস্তারা বাজিয়ে টিন পেটাতে শুরু করেন। এর পরেই হাতিটি গ্রামের একের পর এক বাড়ি ভাঙচুর করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। বনকর্মীদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসে পুলিশও। বেলা বারোটা নাগাদ দাঁতালটি ফের নদী পেরিয়ে ধূলাগাঁও গ্রামে এক কলাবাগানে আশ্রয় নেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই বাগানেই ছিল দলছুট ওই বুনো হাতিটি। বনকর্তারা জানিয়েছেন, পাশে খয়েরবাড়ি জঙ্গলে অন্তত ২৫টি হাতির দল রয়েছে। সেই দলে দাঁতালটিকে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। |
কাঁথিতে নতুন বছরের শুরুতে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁথি |
আগামী বছরের শুরু থেকে কাঁথি শহরকে দূষণ মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিল কাঁথি পুরসভা। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। কাঁথির পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী জানান, “প্লাস্টিকের নানাবিধ উপকরণ যেমন প্লাস্টিকের কাপ, থালা, পলিব্যাগ ইত্যাদি ব্যবহারের পর যেখানে-সেখানে তা ফেলায় শহরে দূষণ বাড়ছে। ক্ষতি হচ্ছে নিকাশি ব্যবস্থার। তাই শহরকে দূষণ মুক্ত করতে পুরসভার পক্ষ থেকে প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনা হচ্ছে।” সুপার মাকের্ট-সহ শহরের সর্বত্র যাতে প্লাস্টিক বা পলিথিন জাত কোনও কিছু কেনাবেচা না হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকে নিয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে দু’বার বৈঠক হয়েছে। এ ছাড়াও আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে পুরসভার উদ্যোগে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মিছিল ও পথসভা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনকী আগামী বছরের প্রথম দিনটি ‘নো প্লাস্টিক ডে’ হিসেবেও পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সৌমেন্দু অধিকারী জানান। |