জেলা হাসপাতালে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না থাকায় মস্তিস্কের এক জটিল অস্ত্রোপচার সফল হল বার্নপুরের সেনর্যালে রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
ওই বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল জেলা হাসপাতালের নার্স রঞ্জনা ভট্টাচার্য হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২৬ নভেম্বর তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে সেন র্যালে রোডের ওই হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। সেখানেই মস্তিস্কে অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। আপাতত সুস্থ আছেন রঞ্জনাদেবী।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত স্নায়ু রোগ বিশেষঞ্জ হীরক মুখোপাধ্যায় জানান, আগে কোনও ভাবে পড়ে গিয়ে মাথার বাঁ দিকে রক্ত জমে গিয়েছিল রঞ্জনাদেবীর। তখন তা বুঝতে পারেননি তিনি। পরে নানা উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। অসুস্থ হয়ে পড়েন রঞ্জনাদেবী। অর্নগল বমি, মাথা ব্যাথার সঙ্গে দুর্বল হয়ে যান। এমনকী অসংলগ্ন কথাবার্তাও বলতে শুরু করেন। এরপরেই তাঁকে জেলা হাসপাতাল, সেখান থেকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হীরকবাবু জানান, স্ক্যান করে দেখা যায় খুলির নীচে থাকা ‘ডুরা’র নীচে রক্ত জমাট বাঁধার পর তা আবার তরল হতে শুরু করেছে। ওই রক্তের চাপে মস্তিষ্ক বাঁ দিক থেকে ঠেলে ডান দিকে ১৭ মিলিমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হয়ে গিয়েছে। মস্তিষ্কের উপর চাপ বাড়তে থাকায় ভুল বকতে শুরু করেন তিনি। এই অবস্থায় তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসক বলেন, “প্রথমে তাঁর দুটো খুলিতে ফুটো করা হয়। তারপর ডুরাতেও ফুটো করা হয়। ডুরাতে ফুটো করার সঙ্গে সঙ্গে ফিনকি দিয়ে পুরনো রক্ত বেরিয়ে যায়। তিনি বিপদমুক্ত হন।’’
কিন্তু জেলা হাসপাতালে এ ধরণের পরিকাঠামো নেই কেন? সুপার নিখলচন্দ্র দাস বলেন, “একমাত্র মেডিক্যাল কলেজেই এই ধরণের অপারেশন সম্ভব। তাছাড়া আসানসোলে স্নায়ু বিশেষজ্ঞ নেই বললেই চলে। তবে বেসরকারি হাসপাতালেও যদি মানুষ এই পরিষেবা পান তা সাধুবাদযোগ্য।” |