দোকানপাট আর ফেরিওয়ালার ভিড়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রবেশ মুখেই থমকে রয়েছে রোগী-স্বাচ্ছন্দ্য।
মাতৃসদনে আসন্ন প্রসবাকে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সের প্রবেশ কার্যত ‘বন্ধ’। ভিড়ের ঠেলায় রোগীর বাড়ির লোকজনেরও সে পথে চলাচল দুঃসাধ্য। বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থা চললেও প্রশাসন বা রোগী কল্যাণ সমিতির ঘুম ভাঙেনি। এ ব্যাপারে ঘন ঘন বৈঠক হলেও বেরোয়নি কোনও সমাধানের পথ।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর সমিতির বৈঠকে বেআইনি ওই দোকান ঘর উচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা হয়। তবে কোনও এক ‘অজানা’ কারনে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার। রোগীর বাড়ির লোকজন প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। সব শুনে সভাধিপতির বক্তব্য, “রোগীদের স্বার্থে ওই বেআইনি দোকান ঘরগুলি ভেঙে ফেলা প্রয়োজন। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা হাসপাতাল হতে পারে না। রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালে ঢুকতেই পারছে না। এটা চলতে দেওয়া হবে না।” |
এটাই হাসপাতালের চেনা ছবি। —নিজস্ব চিত্র। |
রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, রাজ্যের মন্ত্রী মন্ত্রী সুব্রত সাহাও বলেন, “সমিতির পরের বৈঠকেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে বেআইনি দোকান তুলে দেওয়া হবে। বেআইনি দখলদারেরা স্বেচ্ছায় সরে না গেলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” এ প্রতিশ্রুতি অবশ্য নতুন নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তা কার্যকর হয় কিনা দেখার।
মাতৃসদনের চেহারার সঙ্গে মিল রয়েছে জেলা সদর হাসপাতালেরও। ওই হাসপাতালের গেটের মুখেও যানজট পেরিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে পৌঁছতে হয় আইসিইউ-এ। হাসপাতালের সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রতি দিন সদর ও মাতৃসদন হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ বাড়ছে। এই অবস্থায় ওই অস্থায়ী দোকান ঘর পেরিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াতের প্রবল অসুবিধা হচ্ছে।”জেলা হাসপাতাল ক্রমেই বাড়ছে রোগীর চাপ। গত ২০১২ সালের নভেম্বরে মাতৃসদনে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ২৬৫৩ জন। এ বছর নভেম্বর পর্যন্ত সেই সংখ্যা ৩৩৫০। নিত্য ভিড়ে উপচে পড়া হাসপাতালের প্রবেশ দ্বারে উচ্ছেদ হবে তো? প্রশ্নটা সকলেরই, তবে উত্তর জানা নেই। |