১২০০ টাকা দিয়ে নাম লেখান। আট দিনে ৬০ পাতা লিখে রোজগার করুন ৬ হাজার টাকা।
সহজে আয়ের এমনই আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন শহরের দেওয়ালে দেওয়ালে সাঁটিয়ে বেকার তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সংস্থার কর্মকর্তাকে আটক করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষ্ণুপুর শহরের ঘটনা। শহরের কলেজ রোডে ওই সংস্থার অফিস থেকে কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। বিষ্ণুপুর শহরের রাসতলা এলাকায় তাঁর বাড়ি। পুলিশ বিশদে জানতে তাঁকে অনেকক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যায়।
মাস খানেক আগে ওই সংস্থার অফিস চালু হয়। তার আগে শহরজুড়ে বেকারদের আকর্ষিত করতে প্রচুর বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। বেকার যুবকদের কর্মংস্থানের সাইনবোর্ড লাগানো হয় অফিসের দেওয়ালে। এলাকার যুবকরা তা দেখে অনেকেই যোগাযোগ করেছিলেন। এ দিন দুপুরে ওই অফিসের বাইরে তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও পবন মাঝিকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ওই যুবকদের কয়েকজন বিক্ষোভ দেখান। কাজ দেওয়ার নাম করে ওই সংস্থার কর্মকর্তা তাঁদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু কাজ করিয়েও তিনি ওই যুবকদের পারিশ্রমিক দেননি বলে তাঁরা পুলিশে অভিযোগ করেন। |
বিক্ষোভকারীদের পক্ষে বিষ্ণুপুর শহরের বাসিন্দা অজয় চক্রবর্তীর অভিযোগ করেন, “আমি ১২০০ টাকা জমা দিয়ে ছয় হাজার টাকা পাওয়ার আশায় ওই সংস্থায় নাম লিখিয়েছিলাম। একটি ইংরেজি সংবাদপত্র দেখে ২৮ পাতা লিখেছিলাম। পেয়েছি মাত্র ১০০ টাকা। বাকি টাকা দেবে বলে ক’দিন ধরে ঘোরাচ্ছে। প্রতারণা করা হয়েছে বুঝতে পেরে আমি বিষ্ণুপুর থানায় ওই সংস্থার নামে অভিযোগ দায়ের করেছি।” একই অভিযোগ তুলেছেন, বিষ্ণুপুর শহরের গোস্বামীপাড়া দিঘিরপাড়ের বাসিন্দা বসুধা গোস্বামী, ঢেলাদুয়ারের সমাপ্তি কর, জয়পুরের লেগো গ্রামের চিত্রা মণ্ডলরা। তাঁদের অভিযোগ, “এমন ভাবে আমাদের প্রতারণা করা হবে, ভাবতে পারিনি। আমরা জমা দেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই সংস্থার নামে ব্যবসা করার ‘লাইসেন্স’ নেই। অথচ দেওয়ালে বিজ্ঞাপন সাঁটিয়ে টাকা তুলে বেকার তরুণদের ওই সংস্থা ঠকিয়ে চলেছে। আমরা পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।” বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায় ওই সংস্থার কর্তাকে। ওই ব্যক্তির দাবি, “৮৮ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলাম। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের কাজ ভাল হওয়ায় কিছু পারিশ্রমিক দিয়েছি। বানান ভুলের কারণে অনেককে পারিশ্রমিক দেওয়া যায়নি। তবে এ জন্য এমন ক্ষোভের মুখে পড়ব ভাবতে পারিনি।” ছাপা অক্ষরের লেখা দেখে হাতে লিখিয়ে তা কী কাজে ব্যবহার করা হত, তা সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। পুলিশ জানিয়েছে, সংস্থার নথিপত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |