তখন রাত প্রায় ১২টা। সোনারপুর উড়ালপুলের কাছে হাতে ল্যাপটপ নিয়ে রাস্তা দিয়ে এক যুবককে আসতে দেখে সন্দেহ হয় টহলদারি পুলিশদের। ওই যুবককে পাকড়াও করে থানায় নিয়ে আসেন তাঁরা। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। শেষে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবক ল্যাপটপ চোর। এক ছাত্রাবাস থেকে ল্যাপটপ চুরি করে অন্য ছাত্রাবাসে তা বিক্রি করাই তার কাজ। গ্রেফতার হয়েছে ওই যুবক।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার। ধৃতের নাম সুজয় জানা। যদিও পুলিশি জেরায় সুজয় জানিয়েছে, সে চোর নয়। ব্যবসাদার এবং সমাজকর্মী। তবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, সুজয় কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায়। কলকাতা পুলিশ ও দক্ষিণ শহরতলির রাজ্য পুলিশ এলাকার ছাত্রাবাস থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ল্যাপটপ চুরি যাওয়ার বহু অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু এই ‘হাইটেক’ ল্যাপটপ চোর ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। বুধবার সোনারপুর থানার পাঁচপোতা এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে ল্যাপটপ হাতিয়ে ঘাসিয়ারা এলাকার ভাড়া বাড়িতে ফিরছিল সুজয়।
সুজয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়ে সে শহর ও শহরতলির বিভিন্ন ছাত্রাবাসের আবাসিকদের সঙ্গে ভাব জমাত। আর সুযোগ বুঝে চুরি করে নিত ল্যাপটপ। ধরা পরার ভয়ে ল্যাপটপগুলি দোকানে বিক্রি করত না। বিভিন্ন ছাত্রাবাসে সুজয়ের অবাধ যাতায়াত থাকায় এক ছাত্রাবাস থেকে ল্যাপটপ চুরি করে সে আরেক ছাত্রাবাসের আবাসিকদের প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করত। গরীব ছাত্রদের কম দামে ল্যাপটপ বিক্রি করে সে নিজেকে সমাজকর্মী হিসেবে দাবি করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার রাত থেকে সুজয়কে দফায় দফায় জেরা করা হয়। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে সাতটি ল্যাপটপ, তিনটি দামি মোবাইল ও একটি ট্যাব উদ্ধার হয়েছে বলে জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি। এগুলির মূল্য প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা। যে সব মোবাইল ও ল্যাপটপ বিক্রি করেছিল সুজয়, সেগুলি উদ্ধার হয়েছে। সুজয়কে জেরা করে তদন্তকারীদের অনুমান, প্রায় সব ছাত্রের ল্যাপটপের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর বেসরকারি ইঞ্জিনিয়রিং কলেজের প্রায় সব ছাত্রেরই ল্যাপটপ থাকে। তাই সুযোগ বুঝে ল্যাপটপ হাতিয়ে তা কম দামে অন্য ছাত্রাবাসের আবাসিককে বিক্রি করে দিতে পারলে সহজেই মোটা টাকা হাতে এসে যায়। |