১৪ মাস পরেও মেলেনি মজুরি
কাজ করার চোদ্দো মাস পরেও টাকা পেলেন না একশো দিনের প্রকল্পের শ্রমিকরা। মহিষাদল ব্লকের ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশবপুর জালপাই গ্রামের ঘটনা। শ্রমিকদের অভিযোগ, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে হলদি নদীর ধারে গাছের চারা লাগানোর কাজ করার মজুরি এখনও পাননি তাঁরা। বন দফতরে বারবার টাকার জন্য দরবার করেও লাভ হয়নি। যুগ্ম বিডিও প্রদ্যোতকুমার পালুই বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে লক্ষাধিক টাকা স্থানীয় পোস্ট অফিসে এসে পড়ে রয়েছে। পোস্ট অফিসে জমা দেওয়া বন দফতরের নথি অসম্পূর্ণ থাকায় পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ টাকা দিতে চাইছেন না। অবিলম্বে বন দফতরের উচিত, প্রয়োজনীয় নথির কাজ সম্পূর্ণ করে দরিদ্র শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো।” জেলা বন আধিকারিক নিতাই সাহা বলেন, “নথিপত্রের ত্রুটি দ্রুত সংশোধন করে নেওয়া হবে।”
প্রশাসন ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেশবপুর জালপাই গ্রামের হলদি নদীর পাড়ে ভুমিক্ষয় রোধের লক্ষ্যে বন দফতর থেকে ম্যানগ্রোভ বনসৃজনের সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য ১২ লক্ষ ১০ হাজার টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়। নদীর পাড়ে বাহান্ন একর জমিতে ৬০ হাজার গাছের চারা লাগানোও হয়। ১১৫ জন শ্রমিককে ওই প্রকল্পের কাজে লাগানো হয়। শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। ওই কাজে তাঁরা ৭-১০ দিন নিযুক্ত ছিলেন। সেই হিসেবে, প্রকল্পের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের মোট ৮৯৩টি কর্মদিবসের জন্য প্রায় ১ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা পাওনা হয়। শ্রমিকদের পক্ষে সাবেরা বিবি বলেন, “নদীর ধারেই আমরা থাকি। দিনমজুরি করে আমাদের সংসার চলে। এতদিন ধরে টাকা বাকি থাকলে চলবে কী করে?” অপর এক শ্রমিক জসমিনা বিবি বলেন, “প্রতিমাসেই আমরা ব্লক প্রশাসন, বন দফতর, পোস্ট অফিসে গিয়ে খোঁজ নিই। কিন্তু কোথাও সহযোগিতা পাইনি। জানি না, শেষ পর্যন্ত টাকা পাব কিনা।” পোস্ট অফিস সূত্রে খবর, বন দফতর শ্রমিকদের কাজের জন্য যে মাস্টার রোল তৈরি করেছিল, তাতে কিছু ক্ষেত্রে শ্রমিকদের পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্ট নম্বরের পরিবর্তে তাঁদের জব কার্ডের নম্বর লেখা ছিল। স্থানীয় পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার বিষয়টি নিয়ে কাউকে কিছু না জানানোয় সমস্যাটি থেকেই যায়। সম্প্রতি যুগ্ম বিডিও ও বনশ্রমিক মানসরঞ্জন মণ্ডল বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হওয়ায় সমস্যাটি নজরে আসে। স্থানীয় পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার তাপস মাইতি জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে টাকা দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। বন দফতর সংশ্লিষ্ট নথি সংশোধন করে না দিলে শ্রমিকদের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। বন দফতরের নন্দকুমার রেঞ্জ অফিস সূত্রে দাবি, ওই ত্রুটি সংশোধন করে পোস্ট অফিসে পাঠানো হলেও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের স্বাক্ষর ও স্ট্যাম্প না থাকায় ওই নথি বৈধ হিসেবে পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেননি। নিতাইবাবু বলেন, “সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে নথির কাজ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, আগামী দু’এক দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.