|
|
|
|
অনুন্নত এলাকা উন্নয়নের ২২ কোটি খরচ হয়নি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে বাকি আর চার মাস। অথচ, পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ কয়েক কোটি টাকা এখনও পড়ে রয়েছে পিছিয়ে পড়া জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলার ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতিতে বিআরজিএফ (ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ড) প্রকল্পে ৭ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে।
২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা, জেলা পরিষদে ৪ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা এবং জেলার ৮টি পুরসভায় ওই প্রকল্পের ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। সব মিলিয়ে পড়ে থাকা অর্থের পরিমাণ ২২ কোটি ৯৩ হাজার টাকা। আগামী মার্চের মধ্যে এই টাকা খরচ হবে কি না, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ অবশ্য বলেন, “নতুন পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদেরও কাজে গতি আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা ক্লোজ মনিটরিং করছি। সময়ের আগেই বরাদ্দ অর্থ খরচ হবে।” |
টাকা পড়ে, উন্নয়ন তিমিরে |
|
বরাদ্দ |
পড়ে রয়েছে |
গ্রাম পঞ্চায়েত |
৫৯.১৬২৬ |
১০.১৮৯৫ |
পঞ্চায়েত সমিতি |
২৪.৫০৯৯ |
৭.১৯৪২ |
জেলা পরিষদ |
১৭.৫৭৯৩ |
৪.৩৮৮৯ |
পুরসভা |
১০.৯৪৯৭ |
১.১৬৫৮ |
* সব কোটিতে |
|
পশ্চিম মেদিনীপুর পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবেই পরিচিত। ফলে, এ জেলার জন্য বিআরজিএফের অর্থ বরাদ্দ হয়। বরাদ্দ অর্থে রাস্তাঘাট তৈরি থেকে সেচ প্রকল্প, সমস্ত কাজই হয়। অথচ সেই টাকাই পড়ে রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে সব থেকে বেশি টাকা পড়ে রয়েছে বিনপুর ১-এ (লালগড়), ৪৯ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা। দেখা যাচ্ছে, মেদিনীপুর সদর মহকুমার ৬টি পঞ্চায়েত সমিতির জন্য মোট বরাদ্দ হয়েছে ৫ কোটি ৮৮ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে এখনও পড়ে রয়েছে ১ কোটি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। খড়্গপুর মহকুমার ১০টি পঞ্চায়েত সমিতির জন্য ৮ কোটি ৭২ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও ২ কোটি ৬৫ লক্ষ ৩ হাজার টাকা পড়ে রয়েছে। জঙ্গলমহলের অবস্থাও ভাল নয়। ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির জন্য ৬ কোটি ৪৪ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও খরচ হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৯৩ হাজার ৮৫ হাজার টাকা। ঘাটাল মহকুমার ৫টি পঞ্চায়েত সমিতির বরাদ্দ হয়েছে ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৫৭ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা।
পুরসভাগুলির পরিস্থিতি তুলনায় কিছুটা ভাল। দেখা যাচ্ছে, জেলার ৮টি পুরসভার জন্য বিআরজিএফ থেকে ১০ কোটি ৯৪ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। এর মধ্যে নভেম্বর পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৯ কোটি ৭৮ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা। অর্থাত্ ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে মেদিনীপুরে ৪৫ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা, খড়্গপুরে ৬৬ হাজার টাকা, ঝাড়গ্রামে ২০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, ঘাটালে ১৯ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা, চন্দ্রকোনায় ১০ লক্ষ ৮ হাজার টাকা, রামজীবনপুরে ৬ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা, ক্ষীরপাইয়ে ৭ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা এবং খড়ার পুরসভায় ৫ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা পড়ে রয়েছে।
জেলা প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে কাজ শেষ হলেও সময়মতো ইউসি (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) জমা পড়ে না। ফলে, খাতায়-কলমে খরচ দেখানো যায় না। তাই এই পরিস্থিতি। তবে জেলা পরিষদের এক আধিকারিক মানছেন, “কিছু ক্ষেত্রে নজরদারির অভাব রয়েছে। না হলে এ ভাবে বরাদ্দ অর্থ পড়ে থাকত না। কাজ এগোতে গেলে সবস্তরে সমন্বয় থাকাও জরুরি। এ বার পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হবে।” |
|
|
|
|
|