সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিটির সম্পাদকের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই ওই বাড়িতে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করল অস্ত্রশস্ত্র। পুরো বিষয়টিতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে সিপিএম। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সন্ত্রাস করতেই অস্ত্র মজুত করা হয়েছিল। হামলার অভিযোগ স্বভাবতই উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ ওই সিপিএম নেতা গণেশ অধিকারীর আরামবাগ পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িতে তৃণমূলের কিছু ছেলে জোরজবরদস্তি ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। আরামবাগ থানা থেকে বড় জোড় ২০০ মিটার তফাতে তাঁর বাড়ি। গণেশবাবু সে সময়ে বাড়িতে ছিলেন না। ছিলেন তাঁর অসুস্থ স্ত্রী ও ছেলে। গণেশবাবুর কথায়, “আমি অন্য দিনের মতোই সকালে জোনাল কমিটির অফিসে চলে এসেছিলাম। ১২টা নাগাদ স্ত্রীর ফোনে জানতে পারি, তৃণমূলের ছেলেরা জোরজবরদস্তি বাড়িতে ঢুকে আসবাবপত্র লণ্ডভণ্ড করছে। ছেলেকে হুমকি দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী ও ছেলের নিরাপত্তা চেয়ে মহকুমাশাসক, এসডিপিও এবং থানায় ফোন করি।” ওই সিপিএম নেতা জানান, ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই ফের ফোন করেন স্ত্রী। জানান, ঘরে অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। |
তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই বাড়িতে তল্লাশি চালাতে হাজির হয় পুলিশ। একটি পাইপগান, এক রাউন্ড গুলি ও ১৮টি বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। গণেশবাবুর ছেলে অরিজিৎকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিটির অফিসেও যায় পুলিশ। গণেশবাবুকে গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল।
সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, “আরামবাগে পুলিশ এবং তৃণমূল একযোগে ষড়যন্ত্র রচনা করে মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছে আমাদের নেতাদের। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব চাইছেন বলেই বিশেষ একজন পুলিশ অফিসার ক্রমাগত এই অপকীর্তি ঘটিয়ে চলেছেন।” অন্য দিকে, শাসক দলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “কোনও ষড়যন্ত্র করা হয়নি। সন্ত্রাস করতেই সিপিএম আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করছে। পুলিশ-প্রশাসন সজাগ আছে। তারা ভাল কাজ করেছে।” ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর প্রশান্ত যশ সম্প্রতি অভিযোগ করেন, তৃণমূলের লোকজন তাঁকে দিয়ে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে গিয়েছে। গণেশবাবুর সন্দেহ, ওই ঘটনায় সর্বত্র তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁরা। তারই জেরে ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে। গণেশ অধিকারীর ফোনের বিষয়ে মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “ওই বিষয়ে আমি এসডিপিওকে জানাই। তিনি জানান, পুলিশ পাঠানো হয়েছে।” পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরামবাগের এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র। |