|
|
|
|
গয়ায় খুন একই পরিবারের
পাঁচ কিশোরী, ধন্দে পুলিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা
৫ ডিসেম্বর |
রহস্যজনকভাবে খুন হল একই পরিবারের পাঁচ কিশোরী। কী ভাবে, কারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে তা নিয়ে ধন্ধে পড়েছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিবেশি এক পরিবারের সঙ্গে জমি বিবাদের জেরে পাঁচজনকে খুন করা হয়েছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তৈরি হয়েছে তদন্ত কমিটি। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করা হলেও, ধৃত ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত রাতে গয়া জেলার খিজারসরাই থানার সানাস গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। তদন্তকারীরা জানান, ঘরে ঘুমিয়েছিল পাঁচজন। তাদের বয়স ৭ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। দেহগুলির মাথায়-গলায় ক্ষতের দাগ রয়েছে। ঘরে একটি তাজা কার্তুজ মিলেছে। কী ভাবে তাদের খুন করা হয়েছে, তা জানতে দেহগুলি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ৮ জনের একটি কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। গ্রামে গিয়েছেন জেলাশাসক বালা মুর্গনভি এবং সিনিয়র পুলিশ সুপার নিশান্ত কুমার।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, গুলি করে ওই কিশোরীদের খুন করা হলে লোকজন টের পেতেন। কিন্তু, বাড়ির অন্য লোকজন এবং পড়শিরা কেউ-ই রাতে কোনও আওয়াজ পাননি। ধন্ধ রয়েছে আরও একটি বিষয়ে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কী ভাবে আততায়ীরা ঘরে ঢুকেছিল তা বোঝা যাচ্ছে না। বাড়ির বড়দের উপর হামলা না-চালিয়ে কেন কিশোরীদের খুন করা হল, তা-ও এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট হয়নি।
গয়ার সিনিয়র পুলিশ সুপার নিশান্ত তিওয়ারি বলেন, “প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজতে আটজনের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, শশীভূষণ, বিপিন কুমার এবং গুলশন কুমার তিন ভাই। পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন তাঁরা। রাতে বাড়ির তিনটি ঘরে পাঁচ কিশোরী ঘুমিয়েছিল। ওই পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশি শম্ভু সিংহের দীর্ঘদিন ধরে জমি-বিবাদ চলছে। নিহতদের পরিজনদের অভিযোগ, শম্ভুর সঙ্গে এ ঘটনার যোগসাজস রয়েছে। শশীভুষণদের দাবি, চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজ নিয়ে গতকাল দুপুরে গয়ার সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন তাঁরা তিন ভাই। দেরি হয়ে যাওয়ায় রাতে বাড়ি ফিরতে পারেননি। আততায়ীরা তারই সুযোগ নিয়েছে।
স্থানীয় থানার ওসি মহম্মদ কাইমুদ্দিন বলেন, “খবর পেয়েই সকালে সেখানে যাই। আস্তে আস্তে ভিড় বাড়ছিল। শুরু হয় বিক্ষোভ।” ঘটনার পর থেকে শম্ভু সিংহ ফেরার। গ্রামবাসীরা আনন্দ কুমার নামে এক যুবককে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। শম্ভুর সঙ্গে আনন্দের ভালো সম্পর্ক ছিল বলে এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছেন। আনন্দের দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। পরিজনরাই ওই কিশোরীদের খুন করে তাঁর ঘাড়ে দোষ চাপানোর চক্রান্ত করছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার বলেন, “ভারী কোনও জিনিস দিয়ে কিশোরীদের মাথায় আঘাত করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মৃতদেহগুলির পাশে গুলি উদ্ধার হওয়ায় ধন্ধ রয়েছে। ওই বাড়ির ছাদের দরজা বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল সামনের দরজাও। আততায়ীরা কী ভাবে ঘরে ঢুকল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|