|
|
|
|
ভিন্ রাজ্যে দলের বিস্তার চেয়ে মমতা যাচ্ছেন উত্তর-পূর্বের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে তৃণমূল। আপাতত, তাদের মূল লক্ষ্য উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। শীঘ্রই ওই রাজ্যগুলিতে সফরে যাবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গে ভাল ফলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল। এমনকী কেন্দ্রে যে সরকার গঠিত হবে, তাতে তৃণমূল নির্ণায়ক শক্তি হবে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব আশাবাদী। সেই কথা মাথায় রেখেই পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অসম, ত্রিপুরা, মণিপুরের মতো রাজ্যে সংগঠনকে মজবুত করতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় অসম, ত্রিপুরায় কর্মিসভা করেছেন। কিন্তু দুই রাজ্যেই নেতা-কর্মীদের অভিমান টের পেয়েছেন তিনি। ওই দুই রাজ্যের দলীয় নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল নেত্রীকে তাঁদের রাজ্যে আসতে হবে। মুকুলবাবু কথা দিয়ে এসেছেন, ‘দিদি আসবেন’। সে কথা রাখতেই উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে দলনেত্রীর সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার মুকুলবাবু জানান। তিনি বলেন, “দিদি অসম, ত্রিপুরা ও উত্তর পূর্বের রাজ্যে সফর করবেন।’’ আগামী বছরের গোড়ায় তৃণমূল নেত্রীর সফর শুরু হবে বলে মুকুলবাবু জানান।
দলীয় নেতা-কর্মীদের দাবি তো আছেই, পাশাপাশি দিল্লিতে সরকার গড়ার মূল কারিগর হওয়ার লক্ষ্যে দলীয় সাংসদদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতেই উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সংগঠন বিস্তার ও মজবুত করার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের পরে বুথ-ভিত্তিক সমীক্ষা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে মুকুলবাবু বলেন, “যে সমস্ত রাজ্যে কংগ্রেসের বিকল্প নেই, সেখানে মোদী-প্রভাব কাজ করবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি বা দক্ষিণে কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ বা তামিলনাড়ুতে মোদী-প্রভাব কাজ করবে না।”
পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের দলনেত্রী যেমন কংগ্রেস বা বামেদের বিকল্প হয়েছেন, তেমনই ত্রিপুরায় বামেদের, অসম, মণিপুর, মিজোরাম, অরুণাচলে কংগ্রেসের বিকল্প হয়ে উঠতে বেশ কিছুদিন ধরেই মুকুলবাবুরা কাজ শুরু করেছেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এ রাজ্যের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে। ত্রিপুরায় গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই সব্যসাচী কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন শীর্ষ নেতাকে তৃণমূলে নিয়ে এসেছেন। তবে মুকুলবাবু মনে করেন, মমতার নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের কাজ দেখে এ রাজ্যে তো বটেই, প্রতিবেশী রাজ্যের রাজনৈতিক দলের নেতারাও তাঁদের দলে যোগদানে আগ্রহী হচ্ছেন।
বস্তুত, এ দিনই তৃণমূল ভবনে মুকুলবাবু-সহ রাজ্যের দুই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও হীতেন বর্মনের উপস্থিতিতে উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া ও জলপাইগুড়ির ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রথম সারির কয়েক জন নেতা তৃণমূলে যোগদান করেন। মুকুলবাবু জানান, ফরওয়ার্ড ব্লকের জলপাইগুড়ির জেলা সম্পাদক প্রবাল রাহা, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদস্য পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত-সহ শতাধিক নেতা-কর্মী তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের স্বাগত জানিয়ে মুকুলবাবু বলেন, “আগামী দিনে এঁদের সকলকে দলে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে এবং এঁরা যাতে সম্মান নিয়ে কাজ করতে পারেন, তার নির্দেশও দেওয়া হবে।”
অবশ্য দলীয় নেতাদের তৃণমূলে যোগদান নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “এতে আমাদের দলের কোনও ক্ষতি হবে না। কিছু সমস্যা ওখানে ছিল। তার সুযোগ তৃণমূল নেওয়ার চেষ্টা করেছে।” প্রবালবাবু-সহ জলপাইগুড়ির ৭ জন নেতা-কর্মী বুধবারই ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন। এই পরিস্থিতিতে দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয়ন গুহ এবং কোচবিহারের জেলা সভাপতি পরেশ অধিকারীকে যৌথভাবে জলপাইগুড়ির সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফ ব-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য, দলে আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়ায় কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে অনৈতিক কাজে প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। তাঁরা তৃণমূলে এসেছেন। |
|
|
|
|
|