শীত পড়তেই কদর বাড়ছে কেকের
ডিসেম্বর পড়তেই কেক-পেস্ট্রির বিক্রি বেড়েছে। বড়দিন এখনও বেশ কয়েক দিন দূরে। এর মধ্যেই বিভিন্ন দোকানে রকমারি কেকের সম্ভার চোখে পড়ছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সারা বছরই কেক বিক্রি হয়, তবে শীত পড়তে কেকের বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
কেন বাড়ে? ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা কম, খরচ নাগালের মধ্যে, খেতেও ভাল এবং তাড়াতাড়ি খেয়ে নেওয়া যায়--এই গুণের জন্য কেক-পেস্ট্রির কদর বাড়ছে। মফস্সল শহরগুলিতে এখন ঠান্ডা পানীয়, চিপস, আইসক্রিম, ক্যাডবেরি, কেকের দোকান দেদার। এই রকমই একটি দোকানের মালিক সুমিত দত্তের কথায়, “আগে শুধু জন্মদিন বা বিশেষ কোনও অনুষ্ঠানে কেক কিনত মধ্যবিত্ত। এখন কেক কেনা হচ্ছে বাড়িতে অতিথি এলেও।” স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরাও কেক-পেস্ট্রি পছন্দ করে। দ্রুত কিছু খেয়ে নেওয়ার জন্য পেস্ট্রির রীতিমতো কদর রয়েছে। দশম শ্রেণির ছাত্রীর মা সুপ্রিয়া মিত্রের কথায়, “মিষ্টি, রোল বা রাস্তার দোকানের চাউমিনের চেয়ে প্যাকেটের কেকই অনেক নিরাপদ। প্যাকেটের গায়ে কবে তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে, তা-ও দেখে নেওয়া যায়।” একটি কেকের দোকানের মালিক সোনা দাসের কথায়, “কেক কিন্তু এখনও বাঙালির সন্ধ্যার খাবারের বিকল্প নয়। মুড়ি তেলেভাজা, রোল, চাউমিন থেকে কচুরি সবেরই বিক্রি রয়েছে। এটাও ঠিক, শীতে কেকের বাজার বাড়ছে।”
তবে কেক-পেস্ট্রি খাওয়ার এই রেওয়াজ অবশ্য খুব বেশিদিনের নয়। নবদ্বীপের কেক ব্যবসায়ী প্রবীণ চন্দন দাস জানান, প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে এই শহরে কেক বিক্রি করতেন তারা দত্ত নামের এক ব্যবসায়ীই। তাঁর নিজস্ব বেকারি ছিল। চন্দনবাবু তারপরে কলকাতা থেকে বড় সংস্থাগুলির কেক কিনে আনেন। তাঁর কথায় “কেকের দোকান সম্প্রতি কয়েক বছরে দ্রুত হারে বেড়েছে। এখন তো এই শহরেই অনেকগুলি কেকের দোকান। দোকানগুলিও আলো ঝলমলে বলে অল্পবয়সীদের আকর্ষণ করে বেশি।” পারিবারিক ভাবে বেকারি ব্যবসার সাথে যুক্ত অনুপকুমার সাহার কথায়, “নবদ্বীপ শুধু নদিয়া জেলা নয়,অনেক তাবড় তাবড় শহরকে কেক ব্যবসায় লজ্জা দেবে। সারা বছর ধরে জন্মদিন থেকে বিয়ে নানা অনুষ্ঠানে কেকের বিপুল ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। শুধু ২৫ ডিসেম্বর তারিখে আমার মতো বহু দোকান আছে যাদের বিক্রি ৩০ বা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। বড়দিনের সময়ে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার কেকের ব্যবসা হয়। যতদিন যাচ্ছে, ততই অসম লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ছে বেকারির কেক।”
নবদ্বীপ তথা সংলগ্ন এলাকার এক সময়ের ব্যস্ত একটি বেকারি বছর দুই হল বন্ধ করে দিয়েছেন মালিক কৃষ্ণচন্দ্র পাল। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে কেক তৈরি করে আর লাভ হবে না। ৫ টাকায় যে ধরনের কেক বড় সংস্থাগুলো দিচ্ছে, সেটা আমাদের মতো বেকারির পক্ষে সম্ভব নয়। আর যে ভাবে ওঁরা বিজ্ঞাপন বা প্রচার করেন, তাতে করে একটু শহর ঘেঁষা গ্রামের খদ্দেরও এখন বেকারির কেক কিনতে চান না। পাশাপাশি সব কিছুর দাম বেড়েছে। সব থেকে বড় সমস্যা শ্রমিক নিয়ে। সব মিলিয়ে বেকারি বন্ধ করে দিয়েছি।”
তা হলে এতবড় কেকের বাজার চলছে কি ভাবে? উত্তরে কৃষ্ণবাবু বলেন, “ব্যান্ডেল, হাওড়ায় বেশ কিছু বড় বড় বেকারি এখন সারা রাজ্য জুড়ে দাপিয়ে ব্যবসা করছে। শহরাঞ্চলের বাইরের যাবতীয় বাজারে এখনও এদের রমরমা।”
কেমন দামের কেকের বিক্রি বেশি? অনুপবাবু বলেন, “সাধারণত ২০-২৫ টাকার মধ্যে চকোলেট কেক বেশি বিক্রি হয়। তবে অভিজ্ঞতায় দেখছি দামী কেক সবার আগে শেষ হয়ে যায়। গত বছর ৬০০ টাকা পর্যন্ত দামের কেকও বিক্রি করেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.