নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
কর্মচারীদের বিক্ষোভে দিনভর ঘেরাও হয়ে রইলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-সহ কর্মসমিতির সদস্যেরা। নানা দাবিতে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত আটকে রাখা হয় তাঁদের। শেষে পুলিশ গিয়ে ঘেরাও তোলে।
বৃহস্পতিবার প্রায় আট ঘণ্টা ঘেরাও হয়ে থাকার পরে উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “যে ভাবে কিছু কর্মচারী কর্মসমিতির সদস্যদের আজ আটকে রাখলেন তাতে তাঁরা অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। এই ঘটনায় আমি ক্ষুব্ধ।” ঘটনাচক্রে, কলেজের পঠনপাঠন নিয়ে নানা অভিযোগে এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৃষ্ণগোপাল অধিকারীকেও বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখে টিএমসিপি। যদিও এ দিনই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কলকাতায় বলেন, “ঘেরাও কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বা সরকারের দ্বারস্থ হয়ে নিজেদের সমস্যা না মিটিয়ে ঘেরাওয়ের রাস্তায় যাওয়া সমর্থন করা হবে না।”
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর ১২টা নাগাদ উপাচার্যের দফতরে কর্মসমিতির বৈঠক শুরু হয়। কিছুক্ষণ পরেই তৃণমূল প্রভাবিত দু’টি কর্মচারী সংগঠন সেখানে বিক্ষোভ শুরু করে। প্রথমে উপাচার্য একটি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের আট দফা দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেন। কিন্তু অন্য সংগঠনের তরফে কর্মচারীদের পদোন্নতি-সহ নানা দাবি জানানো হলে তা উপাচার্য মানতে চাননি। প্রতিবাদে রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যান ওই সংগঠনের সদস্যেরা।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইউআইটি-র শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও আধিকারিকেরা উপাচার্যের দফতরের বারান্দায় বিক্ষোভ শুরু করেন। পদোন্নতি-সহ নানা দাবিতে তাঁরা দশ দিন ধরে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এ দিনও সে সবই জানাতে থাকেন তাঁরা। কিন্তু উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। উপাচার্যের দফতর থেকে বেরোতে চাওয়া কর্মসমিতির সদস্যদের আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা। এ দিন নানা দাবি জানাতে গিয়েছিল অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের সংগঠন পেনশনার সমিতিও। উপাচার্যের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় তাঁরাও বিক্ষোভ দেখান। শেষে রাতে পুলিশি পাহারায় উপাচার্য ও কর্মসমিতির সদস্যেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। ইউআইটি-র আন্দোলনকারীদের নেতা পাথর্র্প্রতিম সরকার, কাজী মহম্মদ আলফ্রেডরা বলেন, “আমাদের সঙ্গে সারা দিন দেখা না করে উপাচার্য পুলিশ নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে অগণতান্ত্রিক আচরণ করেছেন। আমাদের আন্দোলন চলবে।” উপাচার্য অবশ্য বলেন, “সরকারি নিয়মনীতি মেনে ওঁদের দাবিপূরণ সম্ভব নয়।” |