লাভের আশায় সুগন্ধী ধান চাষে ঝোঁক চাষিদের
সামনেই বিয়ের মরসুম। বিরিয়ানি থেকে শুরু করে পোলাও বা ভাতের নানা পদ সবেরই অন্যতম উপককরণ সুগন্ধী ভাল চাল। ফলে নিশ্চিত লাভের আশায়, আগে বাজার ধরতে, চিরাচরিত ধানের চাষ ছেড়ে অনেক চাষিই ঝুঁকছেন সুগন্ধী ধান চাষে। মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বর ও পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বহু গ্রামেই চাষিরা নিজেদের উদ্যোগে শুরু করেছেন এই চাষ।
কৃষিপ্রধান এই জেলার মূল জীবিকা স্বাভাবিক ভাবেই চাষবাস। মন্তেশ্বরও তার বাইরে নয়। কিন্তু এখানকার চিটচিটে এঁটেল মাটি বিকল্প চাষ করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে বছরভর ধান চাষের উপরেই নির্ভর করেন চাষিরা। যে বছর লাল স্বর্ণ প্রজাতির ধানের বাজার দর ভাল থাকে, সে বছর লাভের মুখ দেখেন চাষিরা। আর বাজার দরে মন্দা হলে, চাষিদের ঘরেও আঁধার। এলাকার চাষিরাই জানান, ভাতার, খণ্ডঘোষ, রায়না ইত্যাদি ব্লকের সুগন্ধী ধান চাষের খবর পেয়ে তাঁরাও উৎসাহিত হন। সুগন্ধী ধানের বীজ বাজার থেকে কিনে চাষের উদ্যোগ করেন। পাশে দাঁড়ায় মন্তশ্বর ব্লক কৃষি দফতরও।
এলাকা ঘুরে জানা যায়, চারটি পঞ্চায়েত বিকল্প চাষ হিসেবে সুগন্ধী ধান চাষ বেছে নেয়। এর মধ্যে সবথেকে বেশি চাষ হয়েছে শুশুনিয়া পঞ্চায়েতে। সেখানকার বাউই, পশ্চিম মামুদপুর, ভাণ্ডারপুর, গোপালনগর গ্রামে গোবিন্দভোগ চালের চাষ হয়েছে।

সুগন্ধী ধান। —নিজস্ব চিত্র।
অনেকে তো ঝাড়াই-বাছাই করে বিক্রিও করতে শুরু করে দিয়েছেন। বাঘাসন পঞ্চায়েতের হোসেনপুর ও তারাশুশনা গ্রামে, জামনা পঞ্চায়েতের ফজলপুর ও ভাগরা মূলগ্রাম পঞ্চায়েতের মূল গ্রামেরও বেশ বড় এলাকাতেও ওই ধানের চাষ হয়েছে। এছাড়া পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট, বগপুর পঞ্চায়েতের বহু চাষিও সুগন্ধী মোহনভোগ চাষে ঝুঁকেছেন।
চাষিদরে দাবি, সুগন্ধী ধানের ফলন কম হলেও বাজার দর সাধারণ ধানের দ্বিগুনেরও বেশি। এ বছর বস্তা পিছু সুগন্ধী ধানের দাম মোটামুটি ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকা। যেখানে লালস্বর্ণ ধানের দাম ৮০০-৮২০ টাকা। এছাড়া জলদি জাতের ধান বিঘা প্রতি জেখানে ১৫ থেকে ১৬ মণ ফলন দেয়, সেখানে সুগন্ধী চাল মেলে ৮-৯ মণ। জামনা পঞ্চায়েতের ফজলপুর গ্রামের এক চাষি কাশীনাথ রেজ বলেন, “এ বার তিন বিঘা জমিতে সুগন্ধী ধানের চাষ করেছিলাম। বিঘা প্রতি গড়ে হাজার পাঁচেক টাকা খরচ হয়েছিল। সেখানে ধান বিক্রি করে মিলেছে বিঘা প্রতি প্রায় ১৫ হাজার টাকা। পরের বার ভাবছি সমস্ত জমিতেই সুগন্ধী ধানের চাষ করব।” তবে তাঁর দাবি, সাধারণ ধানের থেকে এই ধরণের ধান চাষে রাসায়নিক সারের ব্যবহার বেশি। নাদনঘাটের চাষি ইসমাইল শেখ বলেন, “বাজারে চাহিদা থাকায় মিল মালিকের লোকজন বাড়িতে এসে সুগন্ধী ধান নিয়ে যাচ্ছে। ফলে চাষ নিয়ে ক্রমশ এলাকায় আগ্রহ বাড়ছে।”
মহকুমা কৃষি দফতরের সহ-কৃষি অধিকর্তা নিলয় কর বলেন, “মন্তেশ্বরের মাটিতে বিকল্প কিছু চাষ করা বেশ কঠিন। সেখানে গতানুগতিক ধান চাষ ছেড়ে চাষিরা সুগন্ধী ধানের চাষ করছেন, এটা ভাল ব্যাপার।” আর এক সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “সুগন্ধী ধানের চাল বিরিয়ানি, বিয়েবাড়ির ভাত-সহ নানা কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন আলোচনা সভায় গিয়ে চাষিদের এই ধানের চাষ বেশি করে করার ব্যাপারে পরামর্শ দিচ্ছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.