‘দাদাগিরি’ বললেই যে নামটা ভেসে ওঠে, সেটা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
আর ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ বললে? অবশ্যই সেটা মিঠুন চক্রবর্তী।
আজও গুগলে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ সার্চ করলে তাঁর ছবিই পাওয়া যায়। আজও উইকিপিডিয়ায় ‘ডান্স বাংলা ডান্স’য়ের হোস্টের নাম মিঠুন চক্রবর্তী।
হবে না-ই বা কেন? এই শোয়ের জন্যই তো ডায়মন্ড হারবার থেকে কাকদ্বীপলোকে তাঁকে বলে ‘মহাগুরু’ আদর করে ‘এমজি’।
এ সব কথাই এখন অতীত। ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ থেকেই যে বাদ চলে গেছেন মহাগুরু! বিনা আলোচনায়।
কয়েক বছরে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’য়ের টিআরপি-র যে পারদ ছুঁয়েছে তার পতন কখনও দেখতে হয়নি চ্যানেলকে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাদাগিরি’ আর ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ ছিল প্রায় সমানে সমানে। |
এমনকী একটা সিজনে যখন সৌরভ অন্য চ্যানেলে অ্যাঙ্করিংয়ে ব্যস্ত মিঠুনই সামলেছিলেন ‘দাদাগিরি’। সঙ্গে নিজের শো তো ছিলই। ‘ডান্স বাংলা ডান্স’য়ের মুকুটে তো শুধু টিআরপি-র পালক ছিল না। বাংলার এই শো থেকেই তৈরি হয়েছিল সর্বভারতীয় রিয়্যালিটি শো ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’। সেখানেও বিচারক হিসেবে জাঁকিয়ে ছিলেন এমজি।
তা কী এমন হল যে খোদ মহাগুরুই টিম থেকে বাদ চলে গেলেন? বাদ গেলেন চ্যানেল থেকে?
অবশ্য এমন কাণ্ড চ্যানেল আগেও করেছে। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ থেকে হঠাৎই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যাঁর জনপ্রিয়তা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে, লোকে ভালবেসে বলতে শুরু করেছিল ‘বাংলার দিদি নম্বর টু’।
তা, জি বাংলার মতো একটা চ্যানেল, যারা বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পাশে দাঁড়িয়ে এত দিন ধরে ‘প্রসেনজিৎ@৩০’য়ের মতো অনেক সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠান বাঙালিকে উপহার দিয়ে এসেছেন। তারা হঠাৎ এই পরিবর্তন করতে গেল কেন? পরিবর্তন কি শুধুই পরিবর্তনের জন্য? না কি চাহিদা ছিল নতুন এক সুন্দর মুখের?
রচনা এ ‘শক’ সহজে কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আর মিঠুন? এই মুহূর্তে তিনি সলমনের সঙ্গে কারজাটে শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত। তার ফাঁকে জানালেন, “কী আর বলব আমি। এটুকুই বলব, চ্যানেল থেকে অন্তত ওরা আমাকে জানাতে পারত,” ধীরে ধীরে বলেন মিঠুন। গলাটা একেবারেই সেই বিন্দাস এমজি-র মতো শোনাল না। এ যেন এক গভীর আঘাত পাওয়া এক মানুষ।
ও দিকে জি-য়ের তরফে এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিজনেস হেড, সুজয় কুট্টি অবশ্য অন্য কথা বলছেন। “মিঠুনদার যদি খারাপ লাগে সেটা ওঁর নিজস্ব ব্যাপার। আমি একবারও বলছি না আমরা মিঠুনদাকে বাদ দিয়েছি। আমরা শো-টাকে নতুন করে সাজাতে চাই, ব্র্যান্ডিংটা বদলাতে চাই। সেটার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। কে জানে ভবিষ্যতে হয়তো আবার আমরা মিঠুনদাকেই ফিরিয়ে আনব,” বলছেন সুজয়। |