জিমের বদ্ধ আবহে বাতানুকূল পরিবেশে ওয়ার্কআউটের দিন শেষ। শীত পড়ে গিয়েছে যে!
সপ্তাহে তাই কম করে তিন দিন আউটডোর ওয়ার্কআউট করুন। ট্রেডমিল বা ক্রস ট্রেনারের টাইম-ক্যালোরি-হার্ট রেট মেপে শরীরচর্চা করার একঘেয়েমি থেকে রাস্তার পাশের ঘাস-জমি, পার্কের গাছপালা অনেক বেশি উদ্দীপ্ত করবে আপনাকে। এনার্জি দেবে।
রোজের ওয়ার্কআউট রেজিমও হয়ে উঠবে দারুণ ইন্টারেস্টিং।
জগ, স্পট হাই নি
স্টপওয়াচ চালিয়ে ৩০ সেকেন্ড জগিং করুন। তার পর এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হাই নি মানে হাঁটু কোমর-সমান তুলে দৌড়নোর ভঙ্গি করতে হবে। যতটা সম্ভব দ্রুত নি ড্রাইভের চেষ্টা করুন। ২০-৩০ সেকেন্ড করার পর ৩০ সেকেন্ড হাঁটুন। পরে আবার ৩০ সেকেন্ড জগিং করুন। এ বার করুন স্পট হাই নি। পর্যায়ক্রমে প্রক্রিয়াটা চলুক ৩-৪ মিনিট। আপনার ফিটনেস ভাল হলে জগিং-য়ের বদলে মাঝারি গতিতে দৌড়তে পারেন। ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ড্রিলটা রিপিট করতে পারেন ৩ বার। এই ড্রিলটা করলে আমাদের হার্ট, ফুসফুস এবং সংবহনতন্ত্র শক্তিশালী হয়। ক্যালোরি তো ঝরলই। সঙ্গে রেস্টিং হার্টরেট কমে আর এইচডিএল (শরীরের জন্য উপকারী) কোলেস্টেরল বাড়ে। |
পিরামিড দৌড়
এই ড্রিলটা করতে কয়েকটা মার্কার লাগবে। শুরুতেই তাই মোট ৬টা ছোট্ট লাঠির টুকরো জোগাড় করে নিন মার্কার হিসেবে ব্যবহারের জন্য। শুরুর প্রান্ত থেকে কুড়ি পা দৌড়ে একটা মার্কার দিন। তার পর প্রতি পাঁচ পা অন্তর দিন একটা করে মার্কার। মোট দূরত্ব চল্লিশ পা। আমাদের হাঁটার সময় এক পা যতটা যাই, প্রতি পায়ের দূরত্ব ঠিক ততটাই।
শুরু থেকে দৌড়ে প্রথম মার্কারে যান। জগিং করে আবার ফেরত আসুন শুরুর প্রান্তে। তার পর আবার দৌড়ে দ্বিতীয় মার্কারে যান। জগিং করে ফিরুন। এ বার দৌড়ে তৃতীয় মার্কারে যান। এ ভাবে শেষ মার্কারে পৌঁছনোর পর জগিং করে শুরুতে ফেরত এলে ড্রিলটা শেষ। ফেরার সময় জগিং করে ফিরতে কষ্ট হলে জোরে হাঁটুন। প্রতি বার দৌড়ের দূরত্ব বাড়ছে বলেই এই ড্রিলটার নাম পিরামিড ড্রিল। একবার করার পর ২-৩ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৩ বার রিপিট করুন। ড্রিলটা আমাদের শরীরের কোষে অক্সিজেন ব্যবহারের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
বাস্কেটবল ড্রিল
একটা ফুটবলের মাপের হাল্কা বল নিন। পার্কে বা রাস্তার পাশে ঘাসের জমিতে ২০ পা মেপে দুটো মার্কার রাখুন। বলটা মাটিতে ড্রপ খাইয়ে নিয়ে যান শুরুর থেকে উল্টো প্রান্তে। যতটা জোরে সম্ভব দৌড়োন, কিন্তু বলটা সামলে। উল্টো প্রান্তে পৌঁছে ফেরার সময় জগিং করুন বা হাঁটুন। আবার শুরুর প্রান্ত থেকে বল ড্রপ খাইয়ে দৌড় শুরু করুন। করুন টানা ২ মিনিট। ৬-৭ বার যাওয়া আসা করা মানে ২ মিনিটের মতো সময় লাগবে। বলটা ড্রপ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে মনোসংযোগ লাগে, দক্ষতা লাগে। বলটা ড্রিলকে বাড়তি মাত্রা দেয়। মনে আনন্দ আসে এই ধরনের ড্রিল করলে। বেড়ে যায় হ্যাপি হরমোন এন্ডরফিনের মাত্রা। আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও খুব সাহায্য করে এই ড্রিল। ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৩ বার রিপিট করুন।
|
আউটডোরে |
• পার্ক বা রাস্তার পাশে করুন পুশ আপ আর রোটেশন, ওয়াকিং লাঞ্জ, জলের বোতল হাতে শোল্ডার প্রেস, এক পায়ে ডেড লিফ্ট, জলের বোতল নিয়ে সুইং, ডায়নামিক সাইড প্ল্যাঙ্ক।
• জগিং বা দৌড়ের ওয়ার্কআউট শুরুর আগে কিছুক্ষণ ওয়ার্ম আপ করুন। ওয়ার্ম আপ-য়ের পর করুন প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, এক পায়ে ব্রিজ-য়ের মতো কয়েকটা কোর স্টেবিলিটি এক্সারসাইজ। ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। রিপিট করুন ২ বার।
• দৌড়ের জন্য ভাল জুতো বাছুন। জুতোর সোল মাঝারি ধরনের নমনীয় আর ১ ইঞ্চি পুরু হওয়াটা খুব দরকার। জুতো ভাল না হলে গোড়ালি বা হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে কারণ বাইরের জমি শক্ত হওয়ায় পায়ের ওপর ইমপ্যাক্ট ফোর্স পড়ে বেশি। |
|