ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ জুড়েই কম্পন অনূভুত হয়। কম্পনের তীব্রতা বেশি না হলেও, শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার সর্বত্রই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শঙ্খ-উলুধ্বনি শোনা গিয়েছে শহর থেকে গ্রামেও। কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে সিকিম থেকেও। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। তবে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৩৫ মিনিটে কম্পন টের পাওয়া যায়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৬। শিলিগুড়ি লাগোয়া বাংলা-বিহার সীমানাই এ দিনের কম্পনের উৎসস্থল ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “ভূস্তরের নড়ে ওঠার কারণেই এই কম্পন। পরিভাষায় একে প্লেট-টেকটোনিক মুভমেন্ট বলা হয়। বিহারের কিষাণগঞ্জ এবং লাগোয়া দার্জিলিং জেলার এলাকাই ছিল কম্পনের উৎস। এটি ছিল একটি মাঝারি ধরণের কম্পন।”
শিলিগুড়ির ব্যস্ত হিলকার্ট রোড অথবা জলপাইগুড়ির কদমতলা সর্বত্রই কম্পন টের পেয়ে আতঙ্কিত বাসিন্দাদের হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আতঙ্ক ছড়ায় আলিপুরদুয়ারেও। কোচবিহারের দিনহাটা, তুফানগঞ্জেও শাঁখ এবং উলুধ্বনি শোনা যায়। মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জেও আতঙ্কে বহু মানুষ ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। কোচবিহারের ১ নম্বর ব্লকের প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালে ওই ঘটনায় দফতর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন বিডিও স্বপন কুমার পাত্র, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ খোকন মিঁয়া-সহ অন্যরা। দফতরে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত জেলাশাসকও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। পরে আবার বৈঠক শুরু হয়।” আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মালবাজারেও। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়েছিল। পরপর দু’দিন কম্পন বাসিন্দাদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেয়। বছর দু’য়েক আগের ১৮ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পের স্মৃতির আতঙ্কে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়া, কলেজপাড়া, শক্তিগর, মিলনপল্লি থেকে জলপাইগুড়ির নিউটাউন পাড়া, পান্ডাপাড়া, শান্তিপাড়া স্টেশন রোডেও বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় চলে আসেন। এক বাসিন্দার কথায়, “সে বারও সন্ধ্যা নাগাদ কম্পন হয়েছিল। সে কথা মনে পড়লে এখনও আঁতকে উঠতে হয়। তাই এ দিন কম্পন টের পেতেই বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে আসি।” |