ডিভিসি-র ছাইপুকুরের কাজ শুরু
য়াটার করিডরের কাজ থমকে থাকলেও শুরু হয়েছে ছাই পুকুর (অ্যাশ পন্ড) তৈরির কাজ। ফলে, রঘুনাথপুরে ডিভিসি-র নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জট আংশিক কাটল। মঙ্গলবার থেকে ফের মাটি কাটার কাজ শুরু করেছে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। ওই দিন নির্বিঘ্নেই কাজ হয়েছে। ডিভিসি-র ওই প্রকল্পের চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেবশিস মিত্র বলেন, “পুরুলিয়া জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর উদ্যোগ এবং প্রশাসনের সক্রিয় সহযোগিতাতেই কাজ শুরু হয়েছে।”
অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের একাংশের বাধায় তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ওয়াটার ও রেল করিডরের (প্রকল্পে জল আনার পাইপলাইন ও কয়লা আনার রেললাইন পাতা) কাজ দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ। পাশাপাশি ছাই পুকুরের কাজও গত ছ’মাস ধরে স্থানীয় বাধায় বন্ধ ছিল। প্রকল্পের দুই পর্যায়ের জন্য দু’টি ছাই পুকুর তৈরি করা হবে। ছাই পুকুরের কাজ বন্ধ থাকায় এত দিন থমকে ছিল প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের জমি সমতল করার কাজটিও। কারণ, ওই দু’টি কাজ একসঙ্গে চলার কথা। মাটি ভরাট করার কাজের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে মাস তিনেক ধরে হাত গুটিয়ে বসে থেকেছে। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রাথমিক কাজই শুরু করা যায়নি।
ছাই পুকুর তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৫০৮ একর অধিগৃহীত জমির ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন ১২৯১ জন জমি মালিকের অধিকাংশই। কিন্তু, পুকুর তৈরির কাজে জমিদাতা পরিবারের সদস্যদেরই নিয়োগ করার দাবি তুলেছিলেন ওই জমি-মালিকেরা। তার জেরে জমি পেয়েও গত এক বছরে মাত্র ২০ শতাংশ কাজ হয়েছে ছাই পুকুরের। ডিভিসি-র বক্তব্য ছিল, একসঙ্গে ১৫০ জনকে কাজে নিয়োগ করা সম্ভব নয় ঠিকাদার সংস্থার পক্ষে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে ওই জমি-মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেও সমস্যা মিটছিল না।
ছাই পুকুরের সঙ্গে যোগ হয়েছে ওয়াটার করিডর ও রেল করিডরের সমস্যাও। বস্তুত, জমি-জটের জেরে এবং প্রশাসনিক সক্রিয়তার অভাবে রঘুনাথপুর থেকে ডিভিসি-র প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় অন্যত্র সরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতেই নড়াচড়া শুরু হয় রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তরে। এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সদ্য প্রাক্তন চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ সেনের সাথে বৈঠকও করেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সমস্যা মেটানোর জন্য তৃণমূলের শীর্ষস্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপধ্যায় এবং রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরিকে।
এর পরেই ওয়াটার করিডরের পাশাপাশি ছাই পুকুরের জটিলতা কাটাতে উদ্যোগী হন সভাধিপতি। দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে রঘুনাথপুর ২ ব্লক এলাকার পাবড়া গ্রামে গিয়ে ছাই পুকুরের কাজে বাধা দেওয়া জমিদাতাদের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠকও করেন সৃষ্টিধরবাবু। আলোচনায় স্থির হয়, পর্যায়ক্রমে কাজ দেওয়া হবে জমিদাতা পরিবারের শ্রমিকদের। তার পরেই জট কেটেছে। সৃষ্টিধরবাবু বুধবার বলেন, “এলাকায় সকলেই চাইছে ডিভিসি-র প্রকল্পটি দ্রুত রূপায়িত হোক। কিন্তু মুষ্টিমেয় কিছু লোকনিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে স্থানীয় শ্রমিকদের উস্কে ছাই পুকুরের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। আলোচনা করে আমরা ওই শ্রমিকদের বোঝাতে পেরেছি।” প্রকল্পের চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেবশিসবাবুর কথায়, “ছাই পুকুরের কাজে আর বাধা থাকবে না বলে আমরা আশাবাদী। সে ক্ষেত্রে মূল প্রকল্প এলাকায় দ্বিতীয় পর্যায়ের জমি ভরাটের কাজ শুরু দ্রুত করা যাবে।”
ওয়াটার করিডর নিয়ে জটিলতা অবশ্য এখনও কাটেনি। তবে, অনিচ্ছুক জমি-মালিকদের বোঝাতে চৎপরতা শুরু হয়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। দল সূত্রের খবর, নিতুড়িয়া ব্লকের গুনিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু অনিচ্ছুক জমি-মালিককে বুঝিয়ে তাঁদের ক্ষতিপূরণ নেওয়ার ব্যাপারে রাজি করানো গিয়েছে। দলের কার্যকরী সভাপতি সুজয়বাবুর দাবি, অন্তত ৫০ জন জমি-মালিক ক্ষতিপূরণ নিতে সম্মত হয়েছেন। আপাতত স্থির হয়েছে, শুক্রবার তাঁরা পুরুলিয়ায় জেলাশাসকের দফতরে এসে ক্ষতিপূরণের চেক বা টাকা নেবেন।”
জেলা জমি অধিগ্রহণ দফতরের বিশেষ আধিকারিক প্রবীর সরকার জানান, ক্ষতিপূরণ নিতে ইচ্ছুক কিছু জমি-মালিকের তালিকা তাঁদের দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চলছে। জমি-মালিকেরা এলেই চেক বা টাকা দেওয়া হবে। মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেছেন, “আলোচনার পথেই ছাই পুকুরের সমস্যা মিটেছে। ওয়াটার করিডরের জটও কাটতে শুরু করেছে। দ্রুত পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করা যাবে বলে আমাদের আশা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.