|
|
|
|
কেশিয়াড়ি বাসস্ট্যান্ড নিয়ে বৈঠক, জট কাটার ইঙ্গিত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
বিডিও-র উদ্যোগে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনায় কেশিয়াড়ি বাসস্ট্যান্ড নিয়ে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা কাটার ইঙ্গিত মিলল। বুধবার বৈঠকে ঠিক হয়েছে আপাতত প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই বাসস্ট্যান্ডে জল, বিদ্যুৎ, শৌচাগার, নিরাপত্তারক্ষীদের থাকার ঘর তৈরি করা হবে। ব্লক প্রশাসনের আশা, সব ঠিকঠাক চললে আগামী এক মাসের মধ্যেই ওই বাসস্ট্যান্ড পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে।
বুধবার বিকেলে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে ওই বাসস্ট্যান্ড চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হন বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অশোক রাউত, ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জগদীশ দাস, কংগ্রেস নেতা কালাচাঁদ টুডু, বিজেপির উত্তম মাইতি, বাস ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রশান্তকুমার দাস প্রমুখ। তবে সিপিএমের কেউ ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
কেশিয়াড়ির ওপর দিয়ে খড়িকা, মেদিনীপুর, দিঘা, সোনাকানিয়া, বালিগেড়িয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ বেশ কিছু রুটের প্রায় ৭৫টি বাস যাতায়াত করে। গত ২০০৭-০৮ অর্থবর্ষে বাম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ওই বাসস্ট্যান্ড গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে কেশিয়াড়িতে কোনও নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড ছিল না। রাস্তার উপর দাঁড়াত বাস। পরিস্থিতি দেখে ঠিক হয়, কেশিয়াড়ি-বেলদা সড়কের ধারে একটি সরকারি খাস প্রায় দেড় একর জমিতে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হবে। সেই মতো সাংসদ ও বিধায়ক তহবিলে অর্থ বরাদ্দ হয়। কথা ছিল বাসস্ট্যান্ডের সঙ্গেই কিছু স্টলও হবে। অভিযোগ, প্রথম দফায় ৬ লক্ষ টাকা ও পরে ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শুধুমাত্র পাকা ছাউনি ও জমি সমতল করা ছাড়া কিছুই হয়নি।
এ দিকে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই ওই বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ পুরোপুরি থমকে যায়। উদ্যোগের অভাব দেখা যায় বাম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকেও। এ দিকে টাকা খরচ করেও বাসস্ট্যান্ড চালু না হওয়ায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। যাতায়াতকারী বাসগুলি কেশিয়াড়ি মোড়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় বাড়ছিল যানজট। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জগদীশ দাসের অভিযোগ, “সিপিএম ১০ লক্ষের কাজ করে ১৯ লক্ষ টাকা খরচের হিসেব দেখিয়ে কোনও পরিকাঠামো গড়েনি। জল, বিদ্যুৎ-সহ সমস্ত পরিকাঠামো গড়ে ওই বাসস্ট্যান্ড চালুর দাবি আমাদের বরাবরের।” তবে, এ দিন বিডিও অফিসের ওই বৈঠকে যোগ দেয়নি সিপিএম। এলাকার সিপিএমের জোনাল সম্পাদক ভবানী গিরির বক্তব্য, “বুধবার দলীয় ডেপুটেশন কর্মসূচি থাকায় যেতে পারিনি।” তবে তাঁর দাবি, “আমাদের আমলেই যা কাজ হওয়ার হয়েছে। যে টাকার কাজ হয়েছে তার যাবতীয় কাগজপত্র রয়েছে। তৃণমূল ভিত্তিহীন কথা বলছে।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বৈঠকে ঠিক হয় আপাতত প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই বাসস্ট্যান্ডে জল, বিদ্যুৎ, শৌচাগার, নিরাপত্তারক্ষীদের থাকার ঘর তৈরি করা হবে। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের অশোক রাউত বলেন, “সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতি কোনও কাজ করেনি। আমরা এ বার পঞ্চায়েত সমিতির টাকাতেই ওই বাসস্ট্যান্ড গড়ব। খুব তাড়তাড়ি ওই কাজ শেষ হবে।” এলাকার বাস ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনে যুগ্ম-সম্পাদক প্রশান্তকুমার দাস বলেন, “বাসস্ট্যান্ডে যথাযথ পরিকাঠামো গড়ে উঠলে আমাদেরও সুবিধা হবে।” বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী বলেন, “এখন পঞ্চায়েত সমিতি পরিকাঠামো তৈরির কাজ করবে। আগামী এক মাসের মধ্যেই ওই বাসস্ট্যান্ড চালু হবে আশা করছি। পরে স্টলের বিষয়ে ভাবা হবে।” |
|
|
|
|
|