|
|
|
|
মাওবাদী বন্ধে বাস নামেনি, সতর্ক করল পরিবহণ দফতর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মাওবাদী নাশকতা এখন জঙ্গলমহলে অতীত। তাদের সক্রিয়তাও তেমন নেই। তবু গত ৩০ নভেম্বর মাওবাদী বন্ধের দিন জঙ্গলমহলের রাস্তায় বেশিরভাগ বাসই চলেনি।
এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করছে পরিবহণ দফতর। ইতিমধ্যে বাস-মালিকদের সতর্ক করা শুরু হয়েছে। দফতর সূত্রে খবর, বন্ধে বাস না নামানোর কারণ জানতে চেয়ে মালিকদের নোটিসও পাঠানো হবে। জেলা আরটিও বোর্ডের সদস্য প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “এ বার মাওবাদী বন্ধের দিন সকালে বাস পরিবহণ ব্যবস্থা অন্য দিনের মতো ছিল না। এ নিয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” তিনি জানান, যে কোনও বন্ধে বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে বলে মালিকদের জানানো হয়েছে। |
|
৩০ নভেম্বর মাওবাদী বন্ধে বাস ছিল হাতেগোনা। —ফাইল চিত্র। |
বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “পরিবহণ দফতর সতর্ক করতেই পারে। তবে লিখিত ভাবে এখনও কিছু জানতে চাওয়া হয়নি। জানতে চাইলে আমরা জানিয়ে দেব। বাস-মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের মতামত জেনে নোটিসের উত্তর দেব। আমরা সব রকম সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।” বাস-মালিকদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, কোনও মালিক যদি ব্যক্তিগত কারণে এক- দু’দিন বাস না নামান, সে ক্ষেত্রে সরকারের কী করণীয়? বন্ধে ক্ষয়ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ কে দেবে?
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দিনে গড়ে ৮০০টি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে জঙ্গলমহলের উপর দিয়ে প্রায় ৫০০টি বাস চলে। ৩০ নভেম্বরের বন্ধে তার অধিকাংশই পথে নামেনি। মাওবাদী শীর্ষ নেতা মাল্লেজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেনজির দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এ বারও ‘শহিদ সপ্তাহ’ পালনের ডাক দিয়েছিল মাওবাদীরা। শহিদ সপ্তাহের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর ডাকা হয়েছিল। গত বছরও ৩০ নভেম্বরই মাওবাদী বন্ধ হয়েছিল। তবে, সে দিন জঙ্গলমহলে বাস চলাচল স্বাভাবিকই ছিল। এ বার অবশ্য একেবারে অন্য ছবি। বন্ধের দিন সকালে লালগড়, গোয়ালতোড়, বেলপাহাড়ি রুটে অনেক বাসই নামেনি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে খবর আসতে শুরু করে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। দলীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় নিজে জঙ্গলমহলের বেশ কয়েকজন ব্লক তৃণমূল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বাস-মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বাস নামানোর ব্যবস্থা করতে বলেন। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে গিয়েও বাস-মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন দীনেনবাবু।
মাওবাদী বন্ধে এমন অবস্থা হল কেন? বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতির জবাব, “প্রশাসনিক উদ্যোগের অভাব ছিল। সকালের দিকে কিছু বাস চলেনি। তবে বেলার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়।” জানা গিয়েছে, বন্ধে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাতেই অনেকে বাস চালাননি। কিন্তু এখন তো আর আগের মতো মাওবাদী সক্রিয়তা নেই। তা-ও কেন ভয়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস মালিকের কথায়, “আসলে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তার কথা আমাদের আগাম জানানো হয়নি। তাই আশঙ্কা ছিল।” তবে পুলিশের দাবি, নিরাপত্তার যথাযথ আয়োজনই ছিল। |
|
|
|
|
|