|
|
|
|
একটা আসন অন্তত চাই, ত্রিপুরায় আর্জি মুকুলদের |
আশিস বসু • আগরতলা
৪ নভেম্বর |
ত্রিপুরায় তৃণমূলের কর্মী সমাবেশের উদ্বোধনে মুকুল রায়। পাশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।
আগামী লোকসভা নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ ধরে নিয়েই এগোতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের লক্ষ্য, কেন্দ্রে যে সরকার গঠিত হবে সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসই থাকবে অন্যতম নির্ণায়কের ভূমিকায়। ত্রিপুরায় দলের কর্মী সম্মেলনে এই বার্তাই দিয়ে গেলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। কর্মীদের কাছে দলীয় নেতৃত্বের দাবি, রাজ্যের দু’টি লোকসভা আসনের একটি তাঁদের চাই।
অসমের মতো ত্রিপুরাতেও দলীয় কর্মীদের অভিমান রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে। সমাবেশে স্থানীয় নেতাদের আর্জি একটাই, ত্রিপুরার দিকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে নজর দিতে হবে। মমতাদিকে এখানে আসতে হবে। মুকুল জানান, “আসবেন, দিদি আসবেন। দলনেত্রী ত্রিপুরায় আসবেন জানুয়ারির মাঝামাঝি, কিংবা ফেব্রুয়ারিতে। লোকসভায় তৃণমূলই কেন্দ্রের সরকার গঠনে নির্ণায়কের ভূমিকা নেবে।’’
ত্রিপুরায় দলের সংগঠন প্রত্যাশিত নয় বলেই গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৬০টি আসনের কেটিতেও প্রার্থী দেয়নি তৃণমূল। হতাশ কর্মী-নেতারা কেউ বসে যান, কেউ বা সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে ফিরে যান পুরনো দল কংগ্রেসে। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক মাস ধরেই ত্রিপুরায় নিজেদের ঘুঁটি নতুন করে সাজাতে শুরু করেন মুকুলবাবুরা। মুকুলবাবুর ঘনিষ্ঠ, পশ্চিমবঙ্গের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে ত্রিপুরার ভার দেওয়া হয়। গত কয়েক মাস ধরে তিনি দলে টেনে এনেছেন রতন চক্রবর্তী, সুরজিৎ দত্তর মতো বেশ কিছু প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকে। তৈরি করা হয়েছে প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস কমিটিও। এর পরেই আজ ডাকা হয়েছিল কর্মাদের রাজ্য সমাবেশ। |
|
ত্রিপুরায় তৃণমূলের কর্মী সমাবেশের উদ্বোধনে মুকুল রায়।
পাশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী। |
আগরতলা টাউন হলের এই কর্মী সমাবেশে কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতোই। টাউনহল ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। তরুণদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতোই।
ত্রিপুরায় তৃণমূল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য যে এই যুব সম্প্রদায় তা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় মুকুলের সঙ্গে মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে। ‘তৃণমূল যুবা’-র সভাপতি অভিষেক তাঁর ভাষণে জানিয়ে দেন, “আপনারা চাইলে আমি প্রতি মাসে ত্রিপুরায় আসব। পশ্চিমবঙ্গে ৩৫ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের অবসান ঘটিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভা নয়, ২০১৮ সালের ত্রিপুরা বিধানসভার পরবর্তী নির্বাচনে রাজ্যে বাম-শাসনের অবসান ঘটানোর শপথ নিয়ে এখনই রাজনৈতিক লড়াইটা শুরু করুন।” মুকুলবাবুও কর্মী-নেতাদের সতর্ক করেন, “সিপিএমকে ত্রিপুরা থেকে সরাতে গেলে ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক লড়াই জরুরি। আমরা যদি তা না করি, মনে রাখবেন ত্রিপুরার মানুষ ক্ষমা করবে না। এই বার্তা নিয়েই আমরা ত্রিপুরায় এসেছি।’’ পশ্চিমবঙ্গে কী ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইটা শুরু করেছিল, সে কথা মনে করিয়ে দেন মুকুলবাবু। আগামী লোকসভা ভোটে রাজ্যের দু’টি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেস যে প্রার্থী দেবে, সে কথা ঘোষণা করে রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত সব্যসাচী দত্ত কর্মীদের কাছে ‘অন্তত একটি চাই’ বলে দাবি করেন। সব্যসাচী বলেন, ‘‘আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যের তিন হাজার একশোটি বুথ স্তরের কমিটি গঠন করা হবে। ত্রিপুরার ৮টি জেলা ও ২৩টি মহকুমায় কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে সমাবেশ করা হবে।” ও এই কাজটি করতে গিয়ে যে শাসক বামফ্রন্টের, বিশেষ করে সিপিএমের সঙ্গে সংঘাত বাধবে তা আঁচ করেই তিনি মানিক সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন, ‘‘এ রাজ্যে তৃণমূল কর্মীরা রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার হলে আমরা কিন্তু হাত গুটিয়ে বসে থাকব না। মানিকবাবুর কলকাতা যাওয়াই কঠিন হয়ে পড়বে।’’ |
|
|
|
|
|