মারধর ছিনতাই, শ্লীলতাহানির চেষ্টায় অভিযুক্ত পুলিশ
প্রতারক ধরতে গিয়ে রাতভর গ্রামে ঘেরাও
ক প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করতে গিয়ে অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর ও টাকা ছিনতাই করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পুলিশদের বিরুদ্ধে। গ্রেফতারে বাঁধা দিলে পুলিশ কর্মীরা তাঁর স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলেও অভিযোগ। সোমবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার সুরুণ-১ পঞ্চায়েতে বাড়িওল এলাকা।
বাসিন্দাদের বাঁধা, ফের গোলমালের আশঙ্কায় এ দিন প্রতারণায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা রাত ৩টা থেকে প্রায় ৮ ঘণ্টা এক সহকারী সাব ইন্সপেক্টর সহ ৩ পুলিশকর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। মঙ্গলবার ইটাহার থানা থেকে আরও পুলিশ ওই তিন পুলিশ কর্মীকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁদেরকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বচসা ও ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। বাসিন্দারা পুলিশের একটি জিপের ত্রিপল ছিড়ে দিয়ে সেটি উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ১১টা নাগাদ ওসি নিম শেরিং ভুটিয়ার নেতৃত্বে রায়গঞ্জ ও ইটাহার থেকে বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি ঠিক হয়!
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা বলেন, “ওই সহকারী সাব ইন্সপেক্টর ইটাহার থানার ওসিকে না জানিয়ে বেআইনি ভাবে প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করতে যান। তাই তাঁকে আপাতত পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কয়েক মাস আগে বাড়িওলের বাসিন্দা ফরিকুল হক নামে এক যুবক স্নাতকোত্তীর্ণ মার্কশিট ও সংশাপত্র জোগাড় করে দেওয়ার নাম করে স্থানীয় মানাইনগরের বাসিন্দা রফিকুল হক নামে এক যুবকের থেকে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নেন। মার্কশিট ও শংসাপত্র দেওয়ার নামে ঘোরাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। তাই রফিকুল চূড়ামণ পুলিশ ফাঁড়িতে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ফরিকুলকে গ্রেফতার করার জন্য সোমবার রাত ২টা নাগাদ চূড়ামণ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তথা সহকারী সাব ইন্সপেক্টর কৃষ্ণ মণ্ডল এক কনস্টেবল ও হোমগার্ডকে সঙ্গে নিয়ে একটি ভাড়া গাড়িতে চেপে ফরিকুলের বাড়ি যায়। অভিযোগ, পুলিশ কর্মীরা দু’জন দুষ্কৃতীকে সঙ্গে নিয়ে ফরিকুলের বাড়ির সামনে গালিগালাজ করেন! দুই যুবককে দেখে বাসিন্দাদের একাংশ ‘ডাকাত পড়েছে’ বলে চিৎকার করলে ওই দুই যুবক পালিয়ে যায়।
পুলিশ এর পরে ফরিকুলকে ধরার জন্য বাড়িতে ভিতরে যান। কিছুক্ষণ পরে তাঁরা বেরিয়েও আসেন। এর পরেই তাঁরা বাসিন্দাদের ঘেরাও ও বিক্ষোভের মুখে পড়েন। ফরিকুলের দাবি, “পুলিশ মদ্যপ অবস্থায় টিনের বেড়া-দরজা ভেঙে ঢুকে ভাঙচুর করে। ঘরে থাকা ১৫ হাজার টাকা ছিনতাই করার চেষ্টা করেন। বাঁধা দিলে পুলিশ কর্মীরা মারধর শুরু করেন। স্ত্রী আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁর শ্লীলতাহানি করে।” অভিযুক্ত ফরিকুল জানিয়েছেন, বাসিন্দারা তাই শাস্তির দাবিতে পুলিশকর্মীদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
মারধর, শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত সহকারী সাব ইন্সপেক্টর কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “গ্রেফতারি হাত থেকে বাঁচতে ফরিকুল স্থানীয় কিছু মানুষকে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, মারধর, শ্লীলতাহানি সহ ছিনতাই চেষ্টার নালিশ ভিত্তিহীন। পুলিশ দেখে ফরিকুল টিনের বেড়া ও দরজা ভেঙে বেরিয়ে বাসিন্দাদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের ঘেরাও করে। আমরা ফরিকুলের বাড়ি চেনার জন্যই দু’জন সোর্স নিয়ে গিয়েছিলেন।
ইটাহার থানার ওসি নিম শেরিং ভুটিয়া এই দিন বলেছেন, “ফরিকুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.