মদনমোহনের পুজো এ বার মাউস-ক্লিকেই
তিথি কিংবা নির্ঘণ্ট মেনে কোচবিহার রাজবাড়ির কুলদেবতা মদনমোহন দেবের পুজো দিতে চান? কিন্তু ঠিক সময়ে মন্দিরে পৌঁছতে পারবেন কি না, নিশ্চিত নন। এ বার থেকে আর তা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। মাউসে ক্লিক করলেই এ বার সমস্যার চটজলদি সমাধান। তা আপনি দেশের যে কোন রাজ্যেই থাকুন কিংবা বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে। সৌজন্যে কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা আগ্রহী ভক্তদের জন্য ইংরেজি নববর্ষের আগে অনলাইনে পুজো দেওয়ার ওই বন্দোবস্ত চালুর পরিকল্পনা পাকা হয়ে গিয়েছে। এ জন্য প্রস্তুতিও ইতিমধ্যে অনেকটা এগিয়েছে। কোনও তিথি মেনে পুজো দিতে ভারতীয় টাকা থেকে ডলার, পাউন্ড কিংবা ইউরোয় কত খরচ পড়বে—তার তালিকাও চূড়ান্ত।
কোচবিহারের মদনমোহন বিগ্রহ।—নিজস্ব চিত্র।
এই ব্যবস্থা রয়েছে ভারতের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত মন্দিরে। এই রাজ্যেরই নদিয়ার মায়াপুরে এই ভাবে পুজো দেওয়ার রীতি রয়েছে। এ বার সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে মদনমোহন মন্দিরেও। কোচবিহারের জেলাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি মোহন গাঁধী বলেন, “নানা কারণে বাইরে থাকায় অনেকেই নির্ধারিত তিথি মেনে মদনমোহন দেবের পুজো দিতে পারেন না বলে আক্ষেপ করতেন। সেই সমস্যা মেটাতেই অনলাইনে পুজোর ব্যবস্থা চলতি ডিসেম্বরেই চালু করা হচ্ছে। এতে বিশ্বের দরবারে মদনমোহন মন্দিরকে যেমন তুলে ধরা যাবে, তেমনই বোর্ডের আয় বাড়ানোর সুযোগও থাকছে।”
ওই ট্রাস্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, অনলাইনে পুজোর বন্দোবস্ত চালু করতে একটি ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সঙ্গে বোর্ডের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করার ব্যাপারে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির খসড়া তৈরি হয়েছে। ওই ওয়েবসাইট চালু হলেও মাউসে ক্লিক করে তা খুলে তিথি মেনে কোন পুজোর জন্য কত খরচ, তা জেনে নিতে পারবেন আগ্রহীরা। নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেবার পদ্ধতি থেকে যোগাযোগের ই-মেল-ও ওই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। টাকা জমা পড়লেই আগ্রহী ভক্তের চাহিদা অনুযায়ী তাঁর জানানো নাম, গোত্র ধরে মদনমোহন দেবের উদ্দেশে পুজো দেবেন পুরোহিত। পুজোদানের পুরো অনুষ্ঠানই ভিডিওতে তুলে রাখবেন বোর্ডের কর্মীরা। তারপরে যিনি সেই পুজো দিতে অর্থ পাঠিয়েছিলেন, তাঁর ই-মেলে সেই ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পুজোর শুকনো প্রসাদ ও প্রসাদী ফুল পাঠানোর ব্যয় দিলে তা-ও নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক তথা বোর্ডের সদস্য বিকাশ সাহা বলেন, “শুকনো প্রসাদের গুণগত মান নিয়ে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবসা করছেন এমন চারটি সংস্থার সামগ্রীই কেনা হবে। যিনি পুজোর খরচ দিচ্ছেন, তিনি নিজেই পছন্দের কোম্পানির প্রসাদ বেছে নিতে পারবেন। পুজোর পরে প্রসাদী ফুল সহ মদনমোহন দেবের ছবি সম্বলিত প্যাকেটে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য অতিরিক্ত খরচ বলতে লাগবে শুধু পাঠানোর ব্যয়।”
দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রেই জানা গিয়েছে, ভারতীয় টাকায় পুজোর ন্যূনতম খরচ ৫০০ টাকা। সর্বাধিক ৩০ হাজার টাকা। মদনমোহন দেবের পুষ্যাভিষেক যাত্রা, দমনভঞ্জ যাত্রার মতো পুজোর জন্য খরচ পড়বে ৫০০ টাকা। ডলারে ওই পুজোয় ব্যয় ৪০ ডলার, পাউন্ডে ৭ পাউন্ড ও ইউরোয় ৮ ইউরো। আবার রাসযাত্রা পুজোর খরচ ভারতীয় টাকায় ৩০ হাজার টাকা। একই ভাবে রাজাদের কুলদেবতার দোলযাত্রার পুজোয় ২০ হাজার টাকা, রথযাত্রার পুজোয় ১৫ হাজার টাকা, অন্নভোগের পুজোয় ৫ হাজার, সন্ধ্যা আরতির জন্য ২ হাজার, দক্ষিণায়ন যাত্রা পুজোয় ১ হাজার টাকা, পুষ্প দোলযাত্রা পুজোয় ৭৫০ টাকা খরচ দিতে হবে। এ সব ক্ষেত্রেই ডলার, পাউন্ড ও ইউরোর অঙ্কে খরচ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তা জানা যাবে ওয়েবসাইট থেকে। এ ছাড়াও একই ভাবে মদনমোহন মন্দির চত্বরের আনন্দময়ী কালী, জয়তারা ও ভবানী মাতার পুজোর সুযোগও থাকছে। প্রতি ক্ষেত্রেই আগে আবেদনের ভিত্তিতে পুজোর সুযোগ পাবেন আগ্রহীরা। দেবোত্তরের কয়েক জন আধিকারিক জানান, মদনমোহন মন্দির ছাড়াও বোর্ডের আওতায় ৩০টি মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে একাধিক মন্দির রয়েছে ভিন রাজ্যে। কিন্তু টাকার অভাবে সেগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন আটকে রয়েছে। অনলাইনে পুজোর ব্যবস্থা সাড়া ফেললে সেই উন্নতির সুযোগ মিলবে বলে তাঁদের আশা।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.