রাজ্যে পালাবদলের পরও সকল চিকিৎসককে কর্মসংস্কৃতির পথে ফেরানো যায়নি বলে মানলেন আইএমএ’র (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) রাজ্য সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি। স্বাস্থ্যখাতে বাম সরকারের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে গ্রেফতারের দাবি তুললেন নির্মলবাবু।
মঙ্গলবার নানা কর্মসূচিতে যোগ দিতে মেদিনীপুরে আসেন আইএমএ’র রাজ্য সভাপতি। শুরুতে যান মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ দিন থেকে শুরু হয়েছে হোমিওপ্যাথি মেডিক্যালের ৬৯ তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালন অনুষ্ঠান। কলেজের পরিকাঠামো নিয়ে বৈঠকও করেন। পরে আসেন মেদিনীপুর মেডিক্যালে। |
সেখানে এক বৈঠক করেন। ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ তমালকান্তি ঘোষ, হাসপাতাল সুপার যুগল কর প্রমুখ। সেখানে প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দুষে তিনি বলেন, “বিগত সরকারের আমলে স্বাস্থ্যে ৬ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাদের কোটি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। রাজ্য সরকারের কোষাগারের টাকা লুঠ হয়েছে। বিচার হবে না!”
তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে। এফআইআর দায়ের হলেই সূর্যবাবু গ্রেফতার হবেন। আমরা প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর গ্রেফতার চাইছি।”
মেদিনীপুরে এসে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন নির্মলবাবু। তাঁর আশ্বাস, হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নে ৭৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করা হবে। |
আইএমএ’র রাজ্য সভাপতির কথায়, “শুধু মেদিনীপুর নয়, রাজ্যের বাকি হোমিওপ্যাথি কলেজগুলোও ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছিল! পালাবদলের পর সব কলেজের পরিকাঠামোই ঢেলে সাজার ব্যবস্থা হচ্ছে।” তিনি বলেন, “হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজে এখন ৫০টি শয্যা আছে। তা বাড়িয়ে ১০০টি করার দাবি আছে। সরকার চেষ্টা করবে।” পাশাপাশি, মেদিনীপুর মেডিক্যালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করা হবে বলেও জানান তিনি। নির্মলবাবু বলেন, “মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমআরআই, সিটি স্ক্যান চালু রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে ডিজিটাল এক্স-রে চালু হবে। আগামী দিনে কার্ডিওলোজি-নিউরোলোজি-নেফ্রোলোজি বিভাগ চালু হবে। বার্ন ইউনিটও চালুর চেষ্টা চলছে।”
অন্য দিকে, চিকিৎসকদের জেনেরিক নামের ওষুধ লেখারও আর্জি জানিয়েছেন আইএমএ’র রাজ্য সভাপতি। তাঁর কথায়, “গরিব মানুষের সুবিধের কথা ভেবেই ন্যায্য মূল্যের ওষুধ দোকান চালু করা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকদের জেনেরিক ওষুধই লিখতে হবে। না-হলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।” |