নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
জলপাইগুড়ি জেলায় ফরওয়ার্ড ব্লকে ভাঙন শুরু হল। ফরওয়ার্ড ব্লকের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি সহ দলের চারটি শাখা সংগঠনের শীর্ষ নেতারা মঙ্গলবার একসঙ্গে জেলা সম্পাদকের হাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। জেলা সম্পাদকের পাশে বসেই এ দিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে দল পরিচালনা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করে ওই নেতারা পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেছেন।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা যুব লীগ সম্পাদক নীহার সরকার, জেলা ছাত্র ব্লক সম্পাদক শুভঙ্কর মিশ্র, দলের সদর ব্লকের সম্পাদক রাজেশ কর, সদর উত্তর মণ্ডলের সম্পাদক শিবশঙ্কর ঘোষ রায়, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব ভট্টাচার্য, জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন শিক্ষক সঙ্ঘের সম্পাদক জালালুদ্দিন সরকার এবং জেলার অগ্রগামী মহিলা সমিতির সম্পাদিকা কৃষ্ণা বসু ঠাকুর এ দিন পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। সাংবাদিক বৈঠকে দলের জেলা সম্পাদক প্রবাল রাহা বলেন, “সকলের পদত্যাগ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেব। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রসঙ্গত গত সোমবার দলের জেলা কমিটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কলকাতায় বৈঠক হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহের কন্যা ইন্দ্রানী ব্রহ্ম সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ইন্দ্রানীদেবীই জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতাদের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের বৈঠকের মধ্যস্থতা করেন। তৃণমূল সূত্রের খবর আগামী ৫ ডিসেম্বর ফরওয়ার্ড ব্লকের একাংশ প্রথম সারির জেলা নেতারা দলে যোগ দিতে চলেছেন। যদিও এদিন এ প্রসঙ্গে প্রবালবাবু বলেন, “কোনরকম জল্পনার উত্তর দিতে চাই না। যদি কোনও সিদ্ধান্ত নিই, জানিয়েই নেব।’’
দলের বিক্ষুব্ধ নেতারা জানিয়েছে, দল পরিচালনা নিয়ে একাধিকবার রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রশ্ন করেও উত্তর মেলেনি। পাশাপাশি আলু কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত জলপাইগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা দলের তৎকালীন জেলা সম্পাদক গোবিন্দ রায়ের বিরুদ্ধে দল ‘অব্যাহতি’ ছাড়া কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দলের জেলা সভাপতি অঞ্জনবাবু বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের আপস আমরা মেনে নেব না।” রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রাক্তন জেলা সম্পাদক গোবিন্দবাবুকে দলে ফিরিয়ে এনে জলপাইগুড়ির ক্ষমতাসীন জেলা কমিটিকে রাজ্য কমিটির প্রতি আরও ‘অনুগত’ থাকতে ‘রাজনৈতিক চাপে’ রাখার কৌশল নিয়েছিল রাজ্য কমিটির একাংশ নেতা। যার বিরুদ্ধেই পাল্টা সংঘাতের রাস্তায় জেলা কমিটি হাঁটল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এ দিন গোবিন্দবাবু বলেন, “দলের নেতা-কর্মীরা এখনও আমাকে ভালবাসেন। আমি তো অব্যাহতিতে রয়েছি, আমাকে কেন জড়ানো হচ্ছে, বুঝতে পারছি না।” |